পলাতক আ.লীগ নেতার স্টল বিক্রি দুই কর্মকর্তার, বিসিসির প্রশাসকের কাছে অভিযোগ

এ.এ.এম হৃদয় | ২৩:০৭, জুন ২৬ ২০২৫ মিনিট

বরিশাল সিটি করপোরেশনের পলাতক সাবেক কাউন্সিলর ও আওয়ামী লীগ নেতার দুটি স্টল বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে করপোরেশনের হাটবাজার শাখার দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। সিটি প্লাজা মার্কেটের দ্বিতীয় তলায় ২০০ ও ২৪৯ নম্বর স্টল দুটি ১৫ লাখ টাকায় বিএনপির এক নেতার কাছে বিক্রি করিয়ে দেন হাটবাজার শাখার প্রধান নুরুল ইসলাম এবং কর্মকর্তা রেজাউল হোসেন। নতুন ক্রেতাই বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

সাবেক মেয়র সাদিক আবদুল্লাহর সময় স্টল দুটি বরাদ্দ পান ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর রাজিব হোসেন খানের স্ত্রী রাবেয়া সুলতানা। ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে রাজিব ও তাঁর স্ত্রী আত্মগোপনে চলে যান। এই সুযোগে গত জানুয়ারি মাসে ওই স্টল দুটি বাবুগঞ্জ উপজেলার চাঁদপাশা ইউনিয়ন বিএনপির সদস্যসচিব জাহাঙ্গীর হোসেন খানের কাছে বিক্রি করিয়ে দেন হাটবাজার শাখাপ্রধান নুরুল ইসলাম। সম্প্রতি স্টল দুটি থেকে ভাড়াটেকে উৎখাত করে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। এ ঘটনায় স্টলের ভাড়াটে মো. ফয়সাল কবীর ওই ২ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গত বুধবার লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

জানতে চাইলে বাবুগঞ্জ উপজেলার চাঁদপাশা ইউনিয়ন বিএনপির সদস্যসচিব জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘রাজিব হোসেন খানের স্ত্রী রাবেয়া সুলতানের কাছ থেকে আমি স্টল দুটি কিনেছি। ওই স্টল দুটি বাবদ তাকে ১৫ লাখ টাকা দিয়েছি। বরিশাল সিটি করপোরেশনের হাটবাজার শাখার প্রধান নুরুল ইসলাম এবং ওই শাখার কর্মকর্তা রেজাউল হোসেনের উপস্থিতিতে এবং তাঁদের মাধ্যমেই ১৫ লাখ টাকা নেন রাজীবের স্ত্রী। নুরুল ইসলাম বলেছেন, স্টল দুটি তিনি আমার নামে করিয়ে দেবেন। একই সঙ্গে রাজিব হোসেন খানের ভাড়াটেকে তিনি উচ্ছেদ করে দেবেন। কথামতো রাজিব হোসেনের ভাড়াটেকে উচ্ছেদ করে দিয়েছেন।’

তবে বরিশাল সিটি করপোরেশনের হাটবাজার শাখার প্রধান নুরুল ইসলাম বলেন, ‘জাহাঙ্গীর হোসেনকে আমি চিনি না। রাজিব হোসেন খানের স্ত্রী স্টল দুটি বিক্রি করে গেছেন।’ তাহলে স্টল দুটি জাহাঙ্গীর হোসেনের নামে কীভাবে বরাদ্দ হলো—জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া আমি এ বিষয়ে কোনো কথা বলব না।’

এদিকে ওই স্টল দুটিতে থাকা রাজিব হোসেন খানের ভাড়াটে ব্যবসায়ী ফয়সাল কবীর হাটবাজার শাখার দুই কর্মকর্তা নুরুল ইসলাম ও রেজাউল হোসেনের বিরুদ্ধে সিটি করপোরেশনের প্রশাসক বরাবর বুধবার লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেছেন, হাটবাজার শাখার ওই দুই কর্মকর্তা তাঁর কাছে ২৫ লাখ টাকা দাবি করেছেন স্টল দুটির মালিকানা দেওয়ার জন্য। কিন্তু তিনি তা দিতে অস্বীকৃতি জানানোর কারণে তাঁর মালামালসহ স্টল দুটিতে জোরপূর্বক তালা ঝুলিয়ে দেন হাটবাজার শাখার ওই দুই কর্মকর্তা। ফয়সাল দাবি করেন, তাঁর ভাড়াটের চুক্তির মেয়াদ শেষ হবে ২০২৮ সালে। তার আগেই সিটি করপোরেশনের ২ কর্মকর্তা যোগসাজস করে তাঁর ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত করেছেন। এর বিচার চান তিনি।

এ ব্যাপারে বরিশাল সিটি করপোরেশনের প্রশাসক মোহাম্মদ রায়হান কাউসার বলেন, ‘হাটবাজার শাখার কর্মকর্তারা এমন কাজ করতে পারে না। আর যদি করে থাকে, তবে বিষয়টি আমি তদন্ত করে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’