বরিশালে সামাজিক দূরত্ব না মেনে চলছে ঈদের কেনাকাটা

দেশ জনপদ ডেস্ক | ১৮:২৫, মে ১২ ২০২০ মিনিট

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ বরিশাল নগরীতে সামাজিক দূরত্ব না মেনে চলছে ঈদের কেনাকাটা । মার্কেটগুলোতে ক্রেতা সাধারনের ভীড়ের চিত্র দেখলে বোঝার উপায় নেই দেশে মহামারি করোনা ভাইরাস নামে কোন ভাইরাস আছে। আর এতে মানুষের প্রাণহানী ঘটছে। রমজানের শুরু থেকেই বরিশাল নগরের রাস্তাঘাটে জনসমাগম বৃদ্ধি পেয়েছে। অলিগলির পর এবার খুলেছে প্রধান প্রধান সড়কের দোকানপাটগুলো। বড় বড় শপিংমলগুলো বন্ধ থাকলেও বরিশাল নগরের অধিকাংশ দোগানপাট খোলা রয়েছে। এর মধ্যে আবার ঈদেকে সামনে রেখে কেনাকাটায় ব্যস্ত হয়ে পরেছে ক্রেতারা। এরমধ্যে নারীদের সংখ্যাই বেশি। সামাজিক দুরত্ব না মেনেই ক্রেতা বিক্রেতারা বেচা কেনায় মগ্ন হয়ে পরেছে। এতে করে বরিশাল নগরে করোনা আক্রান্তের হার বৃদ্ধি পাওয়ার আশংকা বিরাজ করছে। মঙ্গলবার সকাল থেকে নগরের গির্জা মহল্লা, চকবাজার, কাটপট্টি এলাকায় নারী ক্রেতাদের ভীর লক্ষ করা গেছে। এদেও সাথে আবার কোমলমতি শিশুও রয়েছে। চকবাজার ব্যবসায়ী মালিক কল্যাণ সমিতি সদস্যরা বিসিসি মেয়রের আহবানে দোকান-ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার বিষয়ে সাড়া দিয়ে দোকান খোলার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার পরও সেই মালিক সমিতির অধিকাংশ সদস্য তাদের নেয়া সিদ্ধান্ত ভঙ্গ করে প্রতিষ্ঠানের অর্ধেক সাটার খুলে চালিয়ে যাচ্ছেন বেচা বিক্রি। এদিকে, হঠাৎ করেই শহরে অটো, ও সিএনজি চলাচল বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে করে মানুষ বাসা থেকে বেরিয়ে সহজেই শপিং করতে আসছে। সরেজমিন নগরীর চকবাজার এলাকায় গেলে দেখা যায় অধিকাংশ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সাটার অর্ধেক খোলা ভিতরে মহিলা ও পুরুষ ক্রেতাদের কাছে চলছে বেচা বিক্রি। সামনে দোকানের কর্মচারীরা রয়েছে দাড়িয়ে এসময় তারা গলমাধ্যম কর্মীদের দেখলে ভিতরে ক্রেতা রেখে বাহির থেকে পুনরায় সাটার টেনে লাগিয়ে দিচ্ছেন তালা। এসময় বেশ কয়েকটি শপিংমল ও রেডিমেট পোষাকের দোকানে ঢুকে ছবি তোলার সময়ে মহিলা ও পুরুষ ক্রেতা সহ প্রতিষ্ঠানের মালিক ও কর্মচারীরা মনে করছেন এযেন ঈদ মার্কেটের ছবি তোলা হচ্ছে এনিয়ে তাদের মাঝে কোন প্রতিক্রিয়া অনুভব করতে দেখা যায়নি। অপরদিকে রেডিমেট দোকানের পাশাপাশি সড়কের ফুটপাতে বসেছে বসেছে অগনিত দোকান। সেখানে মহিলা ক্রেতাদের সাথে সাথে রয়েছে পুরুষ ক্রেতার ভীড়। ছবি তোলার সময়ে কতিপয় দোকান মালিক পক্ষ কিছু না বলেলেও একাধিক দোকান-কর্মচারীরা বলেন ভাই, আর না খেয়ে থাকতে পারছি না আমি না হয় বর্তমান সমস্যাটা বুঝি কিন্তু ঘরের মহিলা ও সন্তানরা বুঝতে চায় না। দোকান বন্ধ থাকার অজুহাত দেখিয়ে মালিক পক্ষ গত দুই মাসের বেতন দিতে পারছে না। সেই সাথে আমাদের মত পরিবারকে কেউ কোন কিছু দিয়ে সহযোগিতা করেন নাই। গত দেড় মাস পর শুনেছি প্রশাসন থেকে নামের তালিকা চেয়েছে তারা কি দেবে কিছু চাল,ডাল তেল,আলু অর পেয়াজ তা দিয়ে কি একটি নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের সংসার চলে। আমরা আমাদের দুঃখের কথা কারো কাছে না বলতে পারার কারনে কেউ আমাদের খোজ নেয়নি। আমরা সাধারন কর্মচারীরা চাকুরী থাকলে দু’মুঠো ভাত খাই। আর এখন চাকুরী থাকতে না খেয়ে আছি তাই ভাবলাম দু’মুঠো ভাত খেয়েই মরি। এসময় বেশ কিছু সচেতন ক্রেতাদের সাথে আলাপ করলে দেখা যায় তারা বর্তমান সময়টা কোন কিছুই মনে করছেন না। তারা হাশি খুশিভাবে পরিবার-পরিজনদের নিয়ে মার্কেট করতে রাস্তায় নেমে পড়ছেন এসকল সচেতন ক্রেতা সাধারনরা নিজেরাই মানছেন না স্বাস্থ্য বিধি সু-রক্ষা নিয়ম। এব্যাপারে নগরীর চকবাজার ব্যবসায়ী মালিক কল্যাণ সমিতির সাধারন সম্পাদক শেখ আঃ রহিমের মুঠো ফোনে বক্তব্য নেয়ার জন্য একাধিক বার কল করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেনি। নগরীর চকবাজার দোকান কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি স্বপন দত্ত বলেন, বর্তমান করোনা সমস্য সরকারের একার সমস্যা নয় এটা সকলের সমস্যা। তাই আমি সকল সচেতন ক্রেতাদেরকে অনুরোধ করব তারা যেন নিজেরা শারিরীক দুরত্ব বজায় রেখে স্বাস্থ্য সু-রক্ষা নিয়ম মেনে কেনা কাটা ও চলা ফেরার আহবান জানান। সেই সাথে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিক পক্ষ ও আমার কর্মচারী ইউনিয়নের সদস্যদের বলব তারা নিজেরা স্বাস্থ বিধি অনুযায়ী ক্রেতাদের দুরুত্ব বজায় রাখার চেষ্টাার করার মাধ্যমেই ব্যবসা-বাণিজ্য অব্যাহত রাখবেন। এবিষয়ে বরিশাল জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক এস এম অজিয়র রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন আমরা জোড় করে কারো দোকান বন্ধ করতে পারবো না। আমরা চাই সবাই যেন স্বাস্থ্য সচেতনভাবে চলাফেরার মাধ্য করেন। এসময় তিনি আরো বলেন আমি শুনেছি শহরে বেশ মানুষের সমাগমের সৃষ্ঠি হয়েছে । এব্যাপারে মানুষকে পুনরায় সচেতন করার জন্য আমি সেনা বাহিনীর সাথে কথা বলে দেখি কিরা যায়। উল্লেখ্য ৯ইমে রাতে বিসিসি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ নগরীর চকবাজার ব্যবসায়ী মালিক কল্যাণ সমিতির সদস্যদের তার বাসায় আমন্ত্রন জানিয়ে বর্তমান করোনার সার্বিক সমস্যা নিয়ে আলোচনার এক প্রর্যায়ে ঈদের আগে দোকান-পাঠ না খোলার আহবান জানান। এতে মেয়রের আহবানে মালিক সমিতি মেয়রের আহবান মেনে নিয়ে ১০ই মে রবিবার সাধারন সম্পাদক শেখ আঃ রহিমের বাস ভবনের সামনে বসে মালিক সমিতি যৌথভাবে এক আলোচনার মাধ্যমে দোকান খোলা রাখার সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছিলো।