পলাতক আ’লীগ নেতার পক্ষে ভ‍ূমি দখলে বিএনপি নেতারা!

এ.এ.এম হৃদয় | ২০:২৪, মে ১১ ২০২৫ মিনিট

নিজস্ব প্রতিবেদক : স্বৈরাচারের দোসর পলাতক আওয়ামী লীগ নেতা মাহামুদুল হক খান মামুনের পক্ষে ভ‍ূমি দখল করতে গিয়ে বিতর্কে জড়িয়েছেন বরিশাল বিএনপির বেশ কয়েকজন নেতা। শুক্রবার গভীর রাতে শহরের ২৮ নং ওয়ার্ড মহানগর কলেজসংলগ্ন বিরোধপূর্ণ দেড় একর জমি দখল করতে গিয়ে এলাকাবাসীর তোপের মুখে পড়েন মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক জসিম উদ্দিন খান, মাহফুজুর রহমান খান এবং মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের পদ স্থগিত থাকা আহবায়ক মশিউর রহমান মঞ্জু। দখলসন্ত্রাসে ব্যর্থ হয়ে বিএনপি নেতাকর্মীরা নিরাপদে ফিরে আসলেও বদনাম এড়াতে পারছেন না। বিশেষ করে ঘটনাটি থানা পুলিশ পর্যন্ত গড়ানোসহ ভুক্তভোগী পরিবার রোববার মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করলে বিতর্ক জোরালো রূপ নিতে শুরু। এরই মধ্যে আত্মপর্ক্ষ সমর্থনে রোববার বিকেলেই সংবাদ সম্মেলন করে নিজেদের নির্দোষ দাবি করেছেন, যা নিয়ে চলছে তুমুল আলোচনা-সমালোচনা। বিভিন্ন মাধ্যম নিশ্চিত হওয়া গেছে, নগরের ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের মহানগর কলেজসংলগ্ন বাসিন্দা শওকত হোসেন জমির প্রকৃত মালিক। তার পুত্র মেহেদী হাসান মানববন্ধনকালে সাংবাদিকদের বলেন, মহানগর কলেজসংলগ্ন প্রায় ১ একর ৪৮ শতাংশ জমি তাঁর বাবার নামে রয়েছে। শেখ হাসিনার আমলে প্রভাব খাটিয়ে মহানগর আওয়ামী লীগ নেতা মাহামুদুল হক খান মামুন ওই জমি দখল করে নেন, যা নিয়ে আদালতে মামলা চলমান রয়েছে। ৫ আগস্টের আওয়ামী লীগ নেতা পালিয়ে গেলে ভূমিটি দখলমুক্ত করা হয়। কিন্তু এখন এ জমি দখলের জন্য আ’লীগ নেতা খান মামুনের লোক ‘ওয়ান বিল্ডার্স’র মাসুমের মাধ্যমে বিএনপি নেতা মাহফুজ, জসিম এবং মঞ্জুর সঙ্গে অলিখিত চুক্তি হয়। সে অনুযায়ী গত শুক্রবার ওই তিন নেতা শতাধিক লোক নিয়ে জমি দখলের জন্য বালু ফেলার চেষ্টা করেন। কিন্তু বিধিবাম! এলাকাবাসীর বাধার মুখে মাহফুজ, মঞ্জু এবং জসিমেরা সদলবলে পালিয়ে যান। মেহেদী হাসান বলেন, ‘আমরা আদালতে ভালো রায়ের অপেক্ষায় আছি। কিন্তু তার আগেই দখলচেষ্টায় জড়িয়ে পড়েছেন বিএনপি নেতা মাহফুজ, জসিম, স্বেচ্ছাসেবক দলে পদ স্থগিত হওয়া মঞ্জু। তারা শুক্রবার রাতে ওই জমিতে বালু ফেলতে গেলে এলাকাবাসীর প্রতিরোধে মুখে পালিয়ে যায়।অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে নগর বিএনপিরে যুগ্ম আহবায়ক মাহফুজুর রহমান মাহফুজ বলেন, ‘ওই জমি স্থানীয় ব্যবসায়ী মাসুমের বলে শুনেছি, আমরা জমি দখলের সঙ্গে জড়িত নই। আমাকে রাজনৈতিক উদ্দেশে ফাঁসানোর চক্রান্ত চলছে। নগর বিএনপির অপর যুগ্ম আহবায়ক জসিম উদ্দিনের মন্তব্যও অনুরুপ। তিনি বলেন, ‘জমি দখলের সঙ্গে আমি জড়িত নই। শুনেছি স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাকর্মীরা বালু ফেলেছে। তবে ভূমি দখলের মতো গুরুতর অভিযোগের বিষয়টি নিয়ে বেজায় চটেছেন বরিশাল মহানগর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক আফরোজা খানম নাসরিন। তিনি বলেন, ‘জমি দখলচেষ্টার খবর শুনেছি। ভুক্তভোগী একটি পক্ষ বিএনপির কয়েকজনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগও দিয়েছে। কেউ অপকর্ম করলে দল তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে, হুঁশিয়ারি দেয় নারী নেত্রী। এদিকে রোববার সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান বিমানবন্দর থানার সেকেন্ড অফিসার (এসআই) আবুল হোসেন এবং এসআই কিবরিয়াসহ একাধিক কর্মকর্তা। পরিদর্শন শেষে এসআই কিবরিয়া বলেন, ‘আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে মেহেদী গংদের বলেছি এবং তাদের আদালতে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এই দখলসন্ত্রাসের সাথে কারা জড়িত জানতে চাইলে তিনি প্রশ্নটি এড়িয়ে গিয়ে বলেন, এখনই বলা মুশকিল। পুলিশ কর্মকর্তার আচরণও প্রশ্নবিদ্ধ, তিনি প্রভাবিত হয়ে বিএনপি নেতাদের রক্ষা করতে চাইছেন কী এনিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন প্রকৃত ভূমি মালিকের ছেলে মেহেদী হাসান।’