বছরে ১০ মাস ডুবে থাকে সড়ক, অন্য এলাকায় ভাড়া থাকেন স্থানীয়রা
এ.এ.এম হৃদয়|২২:২২, মে ০২ ২০২৫ মিনিট
‘বচছোরের ১০ মাসই পানির নিচে ডুইববা থাহে (থাকে) এই রাস্তা। শীতকাল আইলে মাঝে মাঝে একটু পানি নামে। এছাড়া হারা বচছোর পানির নিচেই থাহে।’ ক্ষোভের সুরে কথাগুলো বলছিলেন বরিশাল সিটি করপোরেশন এলাকার ১ নম্বর ওয়ার্ড উত্তর কাউনিয়ার বাসিন্দা মাহমুদুল হাসান পারভেজ।
ওই এলাকার দরগাবাড়ি মসজিদ সড়ক নিয়ে এসব কথা বলেন তিনি। গ্রামটির প্রায় ১৫০ পরিবারের ভোগান্তির কারণ এ সড়ক। অবস্থা এমন যে, জলাবদ্ধতার কারণে স্থানীয় অনেকে এখন ওই এলাকা ছেড়ে অন্যত্র বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করছেন।
মাহমুদুল হাসান পারভেজ বলেন, এই এলাকাটি এখন আর বসবাসের উপযোগী নেই। রাস্তাঘাট সারা বছর পানি জমে থাকায় মশা-মাছির উৎপাত, ড্রেনের পানি মিশ্রিত হয়ে দুর্গন্ধে এলাকায় থাকা দুষ্কর হয়ে পড়েছে। এ অবস্থায় একাধিকবার সিটি করপোরেশনে আবেদন করেও নিস্তার মেলেনি।
স্থানীয় ষাটোর্ধ্ব কবির মৃধা নামে এক ব্যক্তি বলেন, 'কয়েক যুগ এই এলাকায় বসবাস করেছি। কিছুদিন আগে নিজের বাপদাদার বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র ভাড়া থাকছি। রেখে আসা বাসা বাড়ি ভাড়াও হচ্ছে না। কারণ এই পানি ভেঙে কেউ আসতে চায় না। ভাড়া কমিয়ে দিলেও কেউ ভাড়া নিতে আগ্রহ দেখায় না।'
জানা যায়, সিটি করপোরেশন প্রতিষ্ঠার প্রায় ২৩ বছর পরেও ওয়ার্ডটির জলাবদ্ধতা দূর করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। শীতকাল ছাড়া সারাবছর হাঁটু সমান পানিতে ডুবে থাকে ওয়ার্ডটির বিভিন্ন সড়ক।
স্থানীয়রা জানান, প্রধান প্রধান সড়ক ছাড়া ওয়ার্ডের অধিকাংশ সড়কে জলাবদ্ধতা থাকে। সামান্য বৃষ্টিতে শাখা সড়ক থেকে শুরু করে প্রধান সড়কগুলো হাঁটু পানিতে তলিয়ে যায়।
দরগাবাড়ি মসজিদ সড়ক এলাকার ব্যবসায়ী মো. লিমন বলেন, দীর্ঘদিন ধরে সড়কটি উঁচু করার জন্য সিটি করপোরেশনে আবেদন করে আসছি। আবেদনের পর সিটি করপোরেশনের লোকজন গিয়ে শুধু পরিদর্শন করেই তাদের দায়িত্ব শেষ করছে। সড়কটি মেরামতের কোনো লক্ষণ দেখছি না। শীতকাল ছাড়া এ সড়কটি পুরাই চলাচলের অনুপযোগী।
ওই এলাকার আরেক ব্যবসায়ী মো. মোতালেব হাওলাদার বলেন, বিভিন্ন সময় সড়কটি দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে রিকশা-ভ্যান উল্টে পাশে ডোবার মধ্যে পড়ে দুর্ঘটনা ঘটছে। তৎকালীন কাউন্সিলরদের কাছে বিষয়টি দীর্ঘদিন জানিয়েও কোনো প্রতিকার পাইনি। আমার চাই নতুন জনপ্রতিনিধি যিনিই হোক তিনি রাস্তা ঘাট, ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন করুক।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পুরো ওয়ার্ডের প্রধান সড়কসহ শাখা সড়কগুলো বর্ষা মৌসুমে পানিতে তলিয়ে যায়। তাছাড়া ভাঙাচোরা সড়ক, ড্রেনেজ ব্যবস্থা মশার দুর্ভোগের কথাও জানান ওয়ার্ডবাসী।
এ বিষয়ে বরিশাল সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রেজাউল বারী বলেন, জলাবদ্ধতা সমস্যা থেকে উত্তরণে নগরীর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোর ড্রেনের কাজ চলছে। এসব কাজ শেষ হলে পর্যায়ক্রমে নগরীর বিভিন্ন স্থানেও জলাবদ্ধতা দূরীকরণ কাজ করা হবে।