বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলনরত ২২ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে থানায় জিডি

নিজেস্ব প্রতিবেদক | ২১:২১, এপ্রিল ২৮ ২০২৫ মিনিট

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (ববি) শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করাসহ অরাজক পরিস্থিতি তৈরির অভিযোগে আন্দোলনরত ২২ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। সোমবার (২৮ এপ্রিল) সহকারী রেজিস্ট্রার (নিরাপত্তা) কে. এম. সানোয়ার পারভেজ লিটন বাদী হয়ে এ ডায়েরি করেন। এতে ১০ জনের নামোল্লেখসহ ১০/১২ জনকে অজ্ঞাতনামা শিক্ষার্থীকে আসামি করা হয়েছে। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন বরিশাল মহানগর পুলিশের বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম। এরআগে, গত কয়েক দিন ধরে ববি রেজিস্ট্রার মনিরুল ইসলামকে অপসারণ, অধ্যাপক ড. মুহসিন উদ্দিনকে সিন্ডিকেট ও অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের পদে পুনর্বহালের দাবিতে আন্দোলন করছে অভিযুক্তরা। আন্দোলনে তারা স্বৈরাচারের দোসরদের পুনর্বাসনের অভিযোগ তুলে ববি উপাচার্য শুচিতা শরমিনকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানিয়েছে। এর অংশ হিসেবে রোববার রেজিস্ট্রারের কুশপুত্তলিকা দাহসহ বিক্ষোভ করে তার কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেয় আন্দোলনরতরা। এরপরই সোমবার তাদের বিরুদ্ধে সাধারণ ডায়েরি করা হল। অভিযুক্তরা হলেন- ইংরেজি বিভাগের রাকিন খান, সাংবাদিকতা বিভাগের নাজমুল ঢালী, লোক প্রশাসন বিভাগের মোকাব্বেল শেখ, আইন বিভাগের তরিক হোসেন, ইংরেজি বিভাগের মিজানুর রহমান, ইংরেজি বিভাগের এনামুল হক, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের এম.ডি. শিহাব, ইংরেজি বিভাগের তরিকুল ইসলাম, কোস্টাল স্টাডিজ বিভাগের স্বপ্নিল অপূর্ব রকি ও রসায়ন বিভাগের রফিক। এছাড়া অজ্ঞাতনামা আরও ১০/১২ জন রয়েছে। সাধারণ ডায়েরিতে উল্লেখ করা হয়, আসামিরা বিভিন্নভাবে ববিতে শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করাসহ অরাজক পরিস্থিতি তৈরি করে বেড়ায়। তারা দলবল নিয়ে চলাচল করায় সাধারণ শিক্ষার্থীরা ভয়ে থাকে। এছাড়াও অভিযুক্তরা বল প্রয়োগের মধ্যদিয়ে প্রশাসনিক কাজে বাধাগ্রস্ত করছে। এমনকি ববির প্রশাসনিক ভবনের সামনে বিভিন্ন দাবি জানিয়ে ফেস্টুন নিয়ে স্লোগান দিতে থাকে। একপর্যায়ে তারা রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ের তৃতীয় তলায় উঠে মাইকে বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দিয়ে প্রশাসনিক কাজ ব্যাহত করে। এছাড়াও তারা রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ে ঢুকে বিভিন্ন ধরনের ভয় দেখিয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কার্যালয় থেকে বের করে দেয়। পরে তারা রেজিস্ট্রারের কক্ষসহ অন্যান্য রুমে তালা দিয়ে ভবনের মূল গেট আটকে দেয়। অভিযুক্ত শিক্ষার্থীদের একজন এম. ডি শিহাব বলেন, যৌক্তিক আন্দোলনকে দমন করতে ও শিক্ষার্থীদের ভয়ভীতি দেখাতে সাধারণ ডায়েরি করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এমন কাজের তীব্র নিন্দা জানান তিনি। সাধারণ শিক্ষার্থী মোশাররফ হোসেন বলেন, হামলা মামলা দিয়ে শিক্ষার্থীদের দমন করা যাবেনা। স্বৈরাচারী হাসিনা যেভাবে হামলা-মামলা দিয়ে বিরোধী মতকে অন্যায়ভাবে দমন করতে চেয়েছিলো ; ঠিক একইভাবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনও সেই কাজই করছে। বন্ধুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম বলেন, ববি প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। এ বিষয়ে তদন্ত শেষে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে। ববির প্রক্টর ড. সোনিয়া খান সনি বলেন, আমিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিষয়টি দেখেছি। তবে আমি এ বিষয়ে কিছু জানি না। এ বিষয়ে জানতে ববি উপাচার্য অধ্যাপক ড. শুচিতা শরমিনের মোবাইল ফোনে কল দিলে তিনি তা রিসিভ করেননি।