বরগুনায় শ্যালিকাকে ধর্ষণে বাধা দেওয়ায় জোড়া খুন, দুলাভাইকে মৃত্যুদণ্ড

শ্যালিকাকে ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে গুরুতর জখম করা ও দুই শিশুকে হত্যার দায়ে আসামি ইলিয়াস পহলানকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন বরগুনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল। আজ রোববার দুপুরে ওই ট্রাইব্যুনালের বিচারক বেগম লায়লাতুল ফেরদৌস এ রায় দেন। মৃত্যু দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত ইলিয়াসের বাড়ি বরগুনা সদর উপজেলার আয়লাপাতাকাটা ইউনিয়নের পূর্ব কেওরাবুনিয়া গ্রামে।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩ সালের ৩ আগস্ট রাতে বরগুনা সদর উপজেলার রোডপাড়া গ্রামের বাসিন্দা এক নারী (শ্যালিকা) তাঁর ৩ বছর বয়সী শিশুকন্যা তাইফা ও প্রতিবেশী গোলাম খবিরের ছেলে ১৩ বছর বয়সী হাফিজুরকে নিয়ে নিজ ঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন। এ সময় ওই নারীর ভগ্নিপতি ইলিয়াস পহলান ধর্ষণের উদ্দেশ্যে তাঁর ঘরে প্রবেশ করেন। তখন দুজনের ধস্তাধস্তিতে ঘুম ভেঙে যায় শিশু তাইফা ও হাফিজুরের। ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে দেশীয় ধারালো অস্ত্র দিয়ে ওই নারী এবং দুই শিশু তাইফা ও হাফিজুরকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করেন ইলিয়াস। এতে ঘটনাস্থলেই নিহত হয় হাফিজুর। আর উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল নেওয়ার পথে মারা যায় তাইফা। আর দীর্ঘদিন চিকিৎসার পর সুস্থ হন ওই নারী। ঘটনার পরদিন ওই নারীর ভাই রিপন সরদার বরগুনা থানায় মামলা করেন। ঘটনার দিনই ইলিয়াসকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এ মামলায় ইলিয়াস একমাত্র আসামি ছিলেন।
মামলার বাদী রিপন সরদার বলেন, ‘মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মো. ইলিয়াস পহলান আমার বড় বোনের জামাতা। আমার বোনকে ধর্ষণ করতে ইলিয়াস পহলান রিগানের বসতঘরে কৌশলে প্রবেশ করে। বোন ডাকচিৎকার দিলে হাফিজুরের ঘুম ভেঙে যায়। তাকে রক্ষা করতে এগিয়ে যায় হাফিজুর। এ সময় ইলিয়াস ধারালো দা দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে তিনজনকে জখম করে। এতে দুই শিশু মারা যায়। পুলিশ তদন্ত করে ইলিয়াসের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দিয়েছে।’
রাষ্ট্রপক্ষের বিশেষ পিপি রনজুয়ারা সিপু বলেন, এই যুগান্তকারী রায়ে বাদী ও রাষ্ট্র সন্তুষ্ট। আসামির আইনজীবী না থাকায় আদালত আইনজীবী এম মজিবুল হক কিসলুকে ইলিয়াসের পক্ষে মামলা পরিচালনার জন্য নিয়োগ দেন।