নেছারাবাদে কোটি টাকার আমানত নিয়ে লাপাত্তা সমিতি, গ্রেপ্তার ৭

নিজেস্ব প্রতিবেদক | ২২:১৪, এপ্রিল ২০ ২০২৫ মিনিট

পিরোজপুরের নেছারাবাদে আরামকাঠি ক্ষুদ্র সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতির পরিচালক মো. রহমাত উল্লাহর বিরুদ্ধে পাঁচ সহস্রাধিক গ্রাহকের হাজার কোটি টাকা নিয়ে লাপাত্তা হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় আজ রোববার তাঁর বাড়িতে বিক্ষুব্ধ গ্রাহকেরা জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করেন। পরে সমিতির ম্যানেজার-মাঠকর্মীসহ সাতজনকে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেন।

এর আগে গতকাল শনিবার খবরটি ছড়িয়ে পড়লে অভিযুক্ত পরিচালকের পূর্বজলাবাড়ী গ্রামের প্রজেক্ট থেকে শতাধিক লোক গরু, ভেড়া, ফার্মের চালের টিন খুলে লুটপাট করে নিয়ে যায়।

সরেজমিন দেখা যায়, কেউ গরুর ফার্মের টিন ছুটাচ্ছেন, কেউবা গরু নিয়ে যাচ্ছেন। কেউ কেউ প্রজেক্টের আমবাগান থেকে বস্তা ভরে আম নিচ্ছেন। কেউবা টিউবওয়েল, ফার্নিচার, ধান ভাঙার মেশিন ও নারকেল নিয়ে যাচ্ছেন। জানতে চাইলে তাঁদের মধ্য অনেকে সমিতির গ্রাহক পরিচয় দেন।

নিলুফা নামে এক নারী অভিযোগ করেন, তিনি রহমাত মিয়ার সমিতিতে এককালীন ১৪ লাখ টাকা রেখেছেন। বিগত কয়েক মাস যাবৎ টাকা ফেরত চাচ্ছিলেন। গতকাল বিকেলে জানতে পারেন, রহমত পরিবার নিয়ে উধাও হয়েছেন। গত তিন দিন পর্যন্ত তাঁর পরিবার এলাকা থেকে লাপাত্তা।

রওসোনারা নামে এক দিনমজুর নারী বলেন, তিনি রাস্তায় চানাচুর, ঝালমুড়ি বিক্রি করে রহমাত মিয়ার সমিতিতে এককালীন দুই লাখ এবং প্রতি মাসে চার হাজার টাকা করে আমানত রাখতেন। সব মিলিয়ে তিনি আট লাখ টাকা পাবেন।

রিনা বেগম নামে অপর এক নারী অভিযোগ করে বলেন, তিনি রহমাত উল্লার সমিতিতে তিন লাখ টাকা এককালীন রেখে ছিলেন। এভাবে শত শত গ্রাহক একই অভিযোগ করেন।

শৈশব নামে এক লোক রহমাত উল্লার সমিতির গ্রাহক পরিচয়ে গরুর ফার্মের টিন খুলে নিয়ে যাচ্ছিলেন। জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি দুই লাখ টাকা পাব। তাই টিন খুলে নিচ্ছি।’

বিটুল নামে আরও একজন একইভাবে রহমাত উল্লার গরুর ফার্মের টিন খুলছিলেন। এ সময় জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি সমিতিতে ৫০ হাজার টাকা পাব।’ এভাবে সেই প্রজেক্ট থেকে শতাধিক লোক যে যারমতো বিভিন্ন জিনিসপত্র নিয়ে যাচ্ছেন দেখা গেছে।

এ বিষয়ে নেছারাবাদ উপজেলার সমবায় কর্মকর্তা মো. হাসান রকি বলেন, ‘তার সমিতির লাইসেন্স বরিশাল বিভাগ থেকে করা। তারা আমাদের আইন না মেনে চলত। শুনেছি এখন নাকি রহমাত পালিয়েছে। পলাতক পরিচালকসহ আটক ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা হবে। আমি থানায় আছি।’

নেছারাবাদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. বনি আমীন বলেন, বিষয়টি শুনে রাতেই পুলিশ পাঠিয়ে সমিতির ম্যানেজার, মাঠকর্মীসহ মোট সাতজনকে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা প্রক্রিয়াধীন।