মাদকসহ আটকের পরে নারী বিক্রেতার সাথে আপসরফা!, বরখাস্ত পুলিশ কর্মকর্তা
এ.এ.এম হৃদয়|১৯:২০, এপ্রিল ০৯ ২০২৫ মিনিট
নিজস্ব প্রতিবেদক : বরিশাল মেট্রোপলিটন আওতাধীন এলাকার বাইরে গিয়ে অভিযান চালিয়ে মাদকসহ নারী ব্যবসায়ীকে আটকের পর ছেড়ে দেওয়ার ঘটনায় সাময়িক বরখাস্ত হয়েছে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) এএসআই আউয়াল। অর্থ সমঝোতায় আটক নারীকে মুক্তি দেওয়া হলেও তার সঙ্গে থাকা অসংখ্য ইয়াবা ও নগদ ৭৪ হাজার টাকা রেখে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে মাঠপুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। এমন অভিযোগ এনে নারীর স্বামী মিজান বরিশাল মহানগর পুলিশের কমিশনার বরাবর একটি লিখিত দিয়েছেন। এরপর অভিযুক্ত এএসআইর বিরুদ্ধে পুলিশ কমিশনার বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন বরিশাল নগর গোয়েন্দা শাখার পরিদর্শক মো. ছগির হোসেন। ঘটনার তদন্ত শেষে গত রোববার (০৬ এপ্রিল) এসসআই আউয়ালকে বরখাস্ত করা হয়। এ তথ্য বুধবার (০৯ এপ্রিল) নিশ্চিত করেছেন বরিশাল নগর পুলিশের কমিশনার শফিকুল ইসলাম। এ ঘটনাটি তদন্ত করেছেন নগর পুলিশের সহকারী পুলিশ কমিশনার রিয়াজ হোসেন।
বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, গত ২৬ মার্চ বরিশাল নগর গোয়েন্দা শাখায় কর্মরত এএসআই আউয়াল জেলার গৌরনদী উপজেলায় নিয়ম বহির্ভুতভাবে অভিযানে যান। তখন মাদক ব্যবসায়ী মিজানের স্ত্রীকে বিপুলসংখ্যক ইয়াবাসহ আটক করেন। আপসরফার একপর্যায়ে ইয়াবা ও টাকা রেখে আটক স্ত্রীকে ছেড়ে দিলে নগর পুলিশের কমিশনার শফিকুল ইসলামের কাছে অভিযোগ দেন স্বামী মিজান।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মাদক ব্যবসায়ী মিজানের স্ত্রীকে বিপুলসংখ্যক ইয়াবাসহ আটক করেন এএসআই আউয়াল। এরপর সঙ্গে থাকা ইয়াবাসহ নগদ ৭৪ হাজার টাকা রেখে অভিযুক্ত নারীকে ছেড়ে দেন তিনি। ওই নারীর স্বামী মাদক ব্যবসায়ী মিজান বিষয়টি বরিশাল নগর পুলিশের কমিশনারকে জানান। এরপর নগর গোয়েন্দা শাখার পরিদর্শক ছগির হোসেন এএসআই আউয়ালের বিরুদ্ধে কমিশনার বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন। অভিযোগের তদন্ত করেন সহকারী পুলিশ কমিশনার রিয়াজ হোসেন।
বরিশাল পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, ঘটনাটি তদন্তে ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় এএসআই আউয়ালকে ৬ এপ্রিল সাময়িক বরখাস্ত করে বরিশাল পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়।
বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মো. শফিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, নগর গোয়েন্দা শাখার এএসআই আউয়ালকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগের তদন্ত চলমান আছে। তদন্ত শেষে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সূত্রে জানা গেছে, কনস্টেবল পদে আউয়াল পুলিশে যোগদান করলেও পরবর্তীতে পদোন্নতি পেয়ে এএসআই হওয়ার পর থেকে তিনি এক যুগের বেশি সময় ধরে বরিশাল নগর পুলিশে কর্মরত আছেন। দীর্ঘদিন একই স্থানে থেকে নগরীর নবগ্রাম রোডে কোটি টাকা মূল্যের দুটি প্লটসহ কয়েকটি জমির মালিক বনে গেছেন। তার স্ত্রীর নামে ব্যাংকে রয়েছে বিপুল টাকা ও সম্পদ। এছাড়া গ্রামের বাড়ি বরগুনাতেও এএসআই আউয়াল নামে-বেনামে কিনেছেন কয়েক একর জমি।
অভিযোগ রয়েছে, এএসআই আউয়াল মাদকের বড় বড় চালানসহ আটকের পর অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা না দিয়ে মোটা অংকের ঘুসে বিনিময় তাদের ছেড়ে দিতেন। পরে ওই উদ্ধার হওয়া মাদক গোপনে বিক্রি করতেন তিনি।
এ বিষয়ে জানতে এএসআই আউয়ালের মোবাইল ফোনে কল দিলে সাংবাদিক পরিচয় শুনে তিনি সাথে সাথে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।