মোহাম্মদপুরে ‘মব তৈরি করে’ ৫ হত্যা মামলার আসামি ছিনিয়ে নিল তারা
নিজেস্ব প্রতিবেদক|২২:৩৪, মার্চ ১২ ২০২৫ মিনিট
মব সৃষ্টি করে পুলিশের হাত থেকে সাবেক সংসদ সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানকের অন্যতম সহযোগী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ৫ মামলার এক আসামিকে ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
বুধবার (১২ মার্চ) মোহাম্মদপুরের লালমাটিয়া এলাকার বি ব্লকের ৭ নম্বর রোডে এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়া আসামি গোলাম মোস্তফা পতিত আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য এবং সাবেক বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানকের অন্যতম সহযোগী।
জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে জাহাঙ্গীর কবির নানককে ২৫ লাখ টাকা দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এ ছাড়া তার বিরুদ্ধে ঢাকার একাধিক থানায় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ৫টি হত্যা মামলা রয়েছে। মামলাগুলো হলো- মোহাম্মদপুর থানায় মামলা নম্বর- ৬৯, রামপুরা থানায় মামলা নম্বর- ১৮, বাড্ডা থানায় মামলা নম্বর- ১৬, ক্যান্টমেন্ট থানায় মামলা নম্বর- ১৬ ও চকবাজার থানায় মামলা নম্বর- ৫৬।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আজ (বুধবার) সকাল ১১টার দিকে মোহাম্মদপুরের লালমাটিয়া এলাকার বি ব্লকের ৭ নম্বর রোডে মোহাম্মদপুর থানা পুলিশের একটি টিম আসামি গোলাম মোস্তফাকে গ্রেপ্তার করতে যায়। তাকে গ্রেপ্তার করে হাতকড়া পড়ানোর সময় আশপাশে থাকা ৮-১০ জন সিকিউরিটি গার্ড ও স্থানীয় আওয়ামী লীগের লোকজন এসে পুলিশের ওপর হামলা করে আসামিকে ছিনিয়ে নেয়। এ সময় ধস্তাধস্তিতে পুলিশের কয়েকজন সদস্য আহত হন।
পুলিশের কাছ থেকে আসামি ছিনিয়ে নেওয়া একজন সিকিউরিটি গার্ড জানান, এভোরোজ স্কুলের মালিক আমাদের স্যার গোলাম মোস্তফা স্কুল থেকে বের হয়ে রাস্তায় দাঁড়িয়ে গাড়িতে উঠছিল। এ সময় পুলিশ এসে তাকে গ্রেপ্তার করার চেষ্টা করে। ওই সময় তার এক হাতে হাতকড়াও লাগায় পুলিশ। সঙ্গে সঙ্গে আমরা যারা ছিলাম সবাই পুলিশকে ঘেরাও করে ধরে তাকে ভেতরে নিয়ে যায়। ওই সময় পুলিশের সঙ্গে আমাদের লোকজনের ধাক্কাধাক্কি হয়।
এ সময় আরও দুই সিকিউরিটি গার্ড সঙ্গে ছিলেন। তারা জানান, আমাদের সামনে থেকে আমাদের স্যারকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যাবে, এটা কীভাবে সম্ভব। গ্রেপ্তার করতে আসছে দেখে আমরা সবাই পুলিশকে বাধা দিয়েছি। তাদেরকে ওই সময় ওয়ারেন্ট দেখাতে বলেছি। তারা মোবাইলে কাগজ দেখায়। কোনো কাগজপত্র পুলিশ সঙ্গে আনেনি।
আসামি ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনা জানতে চাইলে মোহাম্মদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলী ইফতেখার হাসান বলেন, মব সৃষ্টি করে পুলিশকে বাধা দিয়ে আসামি ছিনিয়ে নেয় স্থানীয় কিছু লোকজন।
এ ঘটনায় তেজগাঁও বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) জুয়েল রানা জানান, বুধবার মোহাম্মদপুর থানার একটি টিম বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ৫ মামলার আসামিকে গ্রেপ্তার করতে লালমাটিয়া এলাকায় যায়। কিন্তু আওয়ামী লীগের দোসর তার দলবল সঙ্গে নিয়ে ছিলেন। আসামি গ্রেপ্তারের সময় ওই আসামির লোকজন মব সৃষ্টি করে পুলিশের ওপর বাধা সৃষ্টি করে। গ্রেপ্তার করতেই দেয়নি পুলিশকে।
বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে। খুব শিগগির আসামিসহ জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অভিযান অব্যাহত রয়েছে, সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে।