ভোলায় মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে বাড়ি ভেঙে অভিযুক্ত বললেন ‘ঈমানি দায়িত্ব’ পালন করেছি

নিজেস্ব প্রতিবেদক | ২১:০৬, মার্চ ১১ ২০২৫ মিনিট

ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার দুলারহাটে মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে বাড়িঘর ভেকু দিয়ে ভেঙে দেওয়া হয়েছে। ভুক্তভোগীদের দাবি, স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ফয়েজ, চরফ্যাশন পৌর যুবদলের সদস্য সচিব রাশেদুল ইসলাম নয়ন ও হাবিবের নেতৃত্বে বসতঘর ভাঙা হয়েছে। বিষয়টি স্বীকার করে অভিযুক্তরা বলছেন, ঈমানি দায়িত্ব পালন করেছি। গত ৭ মার্চ রাতে দুলার হাট ঈদগাহ জামে মসজিদ সংলগ্ন নিজামুদ্দিন ও মাইনুদ্দিনের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর ভাই নুরুল আমিন শাহ দুলার হাট থানায় একটি মামলা করেন। মামলা সূত্রে জানা গেছে, পৈতৃক ওয়ারিশ সূত্রে পাওয়া ২৮ শতাংশ জমিতে বসতবাড়ি ও দোকান নির্মাণ করে ভোগদখল করে বসবাস করে আসছেন নিজামুদ্দিন ও মাইনুদ্দিন। কয়েকদিন আগে দুলার হাট ঈদগাহ মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক ফয়েজ, নয়ন ও হাবিব বসতবাড়ি এবং দোকানের জমি মসজিদের বলে দাবি করে। ওই সময় ভেঙে ফেলার হুমকি দেয় তারা। এ ঘটনার জেরে ভুক্তভোগীরা আদালতে মামলা করে। মামলার পর আদালত জমিতে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা দেয়। একইসঙ্গে ৭ দিনের মধ্যে আসামি ফয়েজকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়। আদালতে মামলা ও নিষেধাজ্ঞায় ক্ষুব্ধ হয় আসামিরা। এর জেরে গত শুক্রবার রাতে মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে ভেকু দিয়ে বসতঘর, দোকান ও নির্মাণাধীন ভবন ভাঙচুর করে। এ সময় তাদের বাধা দিলে দুজনকে মারধর করা হয়। নুরুল আমিন বলেন, ‘ভাই ও তাদের পরিবারের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে আমি দুলার হাট থানায় মামলা করি।’ এ বিষয়ে দুলারহাট কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ও মসজিদের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য আবদুস সালাম বলেন, ‘নুরুল আমিনের ভাইদের বাড়ির ওইখানে মসজিদের কোনো জমি নেই। বাড়িটি ভেকু দিয়ে ভাঙচুর করা ঠিক হয়নি। তাদের সঙ্গে অন্যায় করা হয়েছে।’ মসজিদ কমিটির ক্যশিয়ার ফিরোজ বলেন, ‘মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক ফয়েজ মাইকে ঘোষণা দিয়ে ওই বাড়িট ভাঙচুর করেছেন। এটি ঠিক হয়নি। এছাড়া জমিটিতে আদালতের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।’ দুলার হাট ঈদগাহ জামে মসজিদ কমিটির সহসেক্রেটারি অভিযুক্ত হাবিব বলেন, ‘ঘটনার সময় আমি ছিলাম না।’ মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক ফয়েজ বলেন, ‘বিল্ডিংটি মসজিদের জায়গা নির্মিত হচ্ছিল। যার কারণে মুসল্লিরা সেটি ভেঙে দিয়েছে।’ আরেক অভিযুক্ত চরফ্যাশন পৌর যুবদলের সদস্য সচিব রাশেদুল ইসলাম নয়ন বলেন, ‘নিজামুদ্দিন ও মাইনুদ্দিন ভুয়া কাগজ তৈরি করে দীর্ঘদিন ধরে মসজিদের জমিতে বাস করছে। এবার সেখানে ভবন নির্মাণ করছে। তাদের ফয়সালা করতে বারবার বলার পরও তারা বসাবসিতে রাজি হয়নি। ফলে মুসল্লিরা একত্রিত হয়ে জমি উদ্ধারে এগিয়ে আসছে। আমরা কোনো অন্যায় করি নাই। ঈমানি দায়িত্ব পালন করছি মাত্র।’