রাজধানীর পল্লবী থানায় গভীর রাতে এক তরুণের এলোপাতাড়ি কিল-ঘুষিতে আহত হয়েছেন ওসিসহ অন্তত চারজন। সোমবার (১০ মার্চ) রাত পৌনে ২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এ অভিযোগে আজ মঙ্গলবার দুপুরে মামলা হয়েছে।
আবদুর রাজ্জাক ওরফে ফাহিম (২০) নামের তরুণকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে মামলায়।
ডিএমপির পল্লবী জোনের সহকারী কমিশনার (এসি) জাহিদ হোসেন বলেন, সোমবার দিনগত রাত দেড়টার দিকে আবদুর রাজ্জাক পল্লবী থানায় ঢোকেন। এসময় তিনি থানার ওসি নজরুল ইসলামের কক্ষে যান। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি এবং খুনের ঘটনা ঠেকাতে পুলিশ কী করছে, তা জানতে চান। ওসি তাকে বলেন, পুলিশ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে। তখন রাজ্জাক বলেন, আপনারা কিছুই করছেন না; খুন হয়েছে জানেন না।
এসি জাহিদের বর্ণনা অনুযায়ী, ওসি ওই তরুণকে তখন বলেন, কোথায় খুন হয়েছে, আমি জানি না। তখন রাজ্জাক আপনার ডিউটি অফিসার জানে, আর আপনি জানেন না বলে আরও উত্তেজিত হয়ে পড়েন। তখন ওসি ওই তরুণকে সঙ্গে নিয়ে ডিউটি অফিসারের কক্ষে যান। ডিউটি অফিসারকে জিজ্ঞাসা করলে তিনিও ঘটনা জানেন না বলে জানান। এরপর ডিউটি অফিসারের কক্ষে সেবা নিতে আসা দুই ব্যক্তিকে দেখিয়ে তরুণ রাজ্জাক বলেন, তারা খুনের কথা জানেন। ওই দুই ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসা করা হলে তারাও বিষয়টি জানেন না বলেন।
এসময় অভিযুক্ত রাজ্জাক সেবা নিতে আসা দুই ব্যক্তিকে কিল-ঘুষি মারেন। সেখানে কর্তব্যরত উপ-পরিদর্শক (এসআই) নাসির উদ্দিন এগিয়ে গেলে তাকে কিল-ঘুষি মারেন। এতে নাসিরের একটি আঙুল ভেঙে যায়। ওসি পুলিশ কর্মকর্তা নাসিরকে রক্ষা করতে গেলে উত্তেজিত রাজ্জাক ওসিকে এলোপাতাড়ি ঘুষি মারেন। ওই পরিস্থিতিতে তরুণকে হাতকড়া পরিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়।
পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে রাজ্জাক বলেছেন, তারা কয়েকজন গাজীপুর থেকে একটি মাইক্রোবাস নিয়ে পল্লবী থানা এলাকায় ঘুরতে এসেছেন। মাইক্রোবাসসহ বাকি তিনজন থানার বাইরে কালশী এলাকায় আছেন। পরে পুলিশ থানার বাইরে গিয়ে মাইক্রোবাসসহ তিনজনকে থানায় নিয়ে আসে। তারা রাজ্জাকের বন্ধু। মাইক্রোবাসে একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলের লোগো লাগানো ছিল।
পুলিশ বলছে, পল্লবী এলাকায় গতকাল রাতে খুনের ঘটনা ঘটেনি। থানা এলাকায় ছিনতাইয়ের ঘটনায় একজনকে গণধোলাই দেওয়া হয়েছে। পরে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠিয়েছে। রাজ্জাকের হামলায় ওসি, এসআইসহ (উপ-পরিদর্শক) আহত চারজন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।
জানা গেছে, রাজ্জাকের বাড়ি গাজীপুরের জয়দেবপুরে। তার বাবা একটি বায়িং হাউজের কর্মকর্তা।