ভারতে ইসরায়েলি পর্যটক ধর্ষণ, আতঙ্কে শহর ছাড়লো শত শত বিদেশি

দেশ জনপদ ডেস্ক | ১৯:২৪, মার্চ ১১ ২০২৫ মিনিট

দক্ষিণ ভারতের কর্ণাটক রাজ্যের হাম্পি শহরের কাছে এক নারকীয় ঘটনার পর শত শত বিদেশি পর্যটক এলাকা ছেড়ে চলে গেছেন। গত বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) রাতে তিন দুস্কৃতের হাতে এক ইসরায়েলি নারী পর্যটক ও এক ভারতীয় হোমস্টে মালিক দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন এবং নিহত হন এক ব্যক্তি। পুলিশ জানায়, ওই তিনজন আরও দুই পুরুষ পর্যটকের সঙ্গে সানাপুর গ্রামে তারামণ্ডল পর্যবেক্ষণ করছিলেন। এ সময় তিন হামলাকারীর সঙ্গে টাকা নিয়ে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে সংঘর্ষ বাধে। এরপর হামলাকারীরা তিন পুরুষকে নদীর খালে ঠেলে ফেলে দিয়ে দুই নারীকে ধর্ষণ করে। ওই তিনজনের মধ্যে দুইজন সাঁতরে পালাতে পারলেও উড়িষ্যার এক ব্যক্তি ডুবে যান।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। হাম্পি একসময় হিন্দু বিজয়নগর সাম্রাজ্যের রাজধানী ছিল। বর্তমানে ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থানের স্বীকৃতি পেয়েছে সেটি। এই অঞ্চলে প্রতিবছর এক লাখের বেশি বিদেশি পর্যটক যান, বিশেষ করে ইসরায়েল ও ইউরোপের পর্যটকরা সেখানে ভিড় করেন। তবে এই নৃশংস ঘটনার পরপরই পর্যটকদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। কর্ণাটক ট্যুরিস্ট গাইড অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক বিরুপাক্ষ হামপি জানান, ৯০ শতাংশের বেশি পর্যটক, যাদের বেশিরভাগই ইসরায়েলি, তাদের হোমস্টে ছেড়ে চলে গেছেন। এক ইসরায়েলি পর্যটক তালিয়া জিলবার বলেন, আমাদের পরিকল্পনা ছিল হোলি উৎসব পর্যন্ত এখানে থাকার, কিন্তু নিরাপত্তার কারণে আমরা রাজস্থান চলে যাচ্ছি। এ ঘটনায় কর্ণাটকের মন্ত্রী শিবরাজ টাংগাদাগি রাতের বেলা একাকী ভ্রমণ না করার পরামর্শ দিয়েছেন। ভারতে নারীদের বিরুদ্ধে সহিংসতা ও ধর্ষণের ঘটনা উদ্বেগজনকভাবে চলতে থাকায় দেশব্যাপী ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। ২০১২ সালে দিল্লিতে এক মেডিকেল ছাত্রীকে দলবদ্ধ ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের পর কঠোর আইন প্রণয়ন করা হলেও ধর্ষণের ঘটনা অব্যাহত রয়েছে। ভারতের জাতীয় অপরাধ রেকর্ড ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালে দেশটিতে প্রায় ৩২ হাজার ধর্ষণের মামলা নথিভুক্ত হয়েছে। তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, সামাজিক কলঙ্ক ও পুলিশের প্রতি অনাস্থার কারণে বহু ঘটনা নথিভুক্তই হয় না।