কন্টেন্ট ক্রিয়েটর কাফির বাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় দুই ছাত্রলীগ কর্মী আটক
এ.এ.এম হৃদয়|২০:৩৬, মার্চ ১০ ২০২৫ মিনিট
পটুয়াখালীর কলাপাড়া থানার রজপাড়া এলাকায় জনপ্রিয় ফেসবুক ও ইউটিউব কন্টেন্ট ক্রিয়েটর নুরুজ্জামান কাফির বসতবাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে দুইজনকে আটক করেছে পুলিশ।
আটকরা হলেন- বরগুনার আমতলী উপজেলার নসা হাওলাদারের ছেলে মো. শাহাদাত হাওলাদার (২২) ও কলাপাড়া উপজেলার টিয়াখালী এলাকার মো. মাহফুজ মোল্লা (২১)।
সোমবার (১০ মার্চ) বিকেলে পটুয়াখালী পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে পুলিশ সুপার মো. আনোয়ার জাহিদ এতথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ব্রিফিংয়ে তিনি জানান, গত ১২ ফেব্রুয়ারি গভীর রাতে নুরুজ্জামান কাফির পরিবারের সদস্যরা ঘুমিয়ে থাকার সময় দুর্বৃত্তরা তার বসতঘরে আগুন ধরিয়ে দেয়। আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়লে পরিবারের সদস্যরা কোনোমতে ঘরের পেছনের দরজা ভেঙে বেরিয়ে আসতে সক্ষম হন এবং তাৎক্ষণিকভাবে ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেন। দ্রুত ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
ঘটনার পরদিন নুরুজ্জামান কাফি বাদী হয়ে কলাপাড়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেন (মামলা নম্বর-১৬/৫৫, তারিখঃ ১৩-০২-২০২৫, ধারা-৪৩৬/৪২৭/৩৪ পেনাল কোড)।
পরে চাঞ্চল্যকর এ ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণ ও বিভিন্ন সূত্রের তথ্য যাচাই করে দুই আসামির সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পায়।
পুলিশ সুপার মো. আনোয়ার জাহিদের নেতৃত্বে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. সাজেদুল ইসলাম, থানা পুলিশ ও জেলা গোয়েন্দা শাখার যৌথ অভিযানে বরিশাল ও পটুয়াখালীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে গতকাল ৯ মার্চ রাতে শাহাদাত হাওলাদারকে বরিশাল কোতোয়ালী মডেল থানা এলাকা থেকে এবং মাহফুজ মোল্লাকে পটুয়াখালী সদর থেকে আটক করা হয়।
আটকদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, আটককৃতরা বরিশালের দুটি কলেজের শিক্ষার্থী এবং নিষিদ্ধ ঘোষিত একটি ছাত্র সংগঠনের সঙ্গে জড়িত। ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে শেখ মুজিবের বাড়ি ভাঙচুরের কিছু ভিডিও কনটেন্ট নুরুজ্জামান কাফির পেজে দেখে ক্ষুব্ধ হয়ে তার বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেওয়ার পরিকল্পনা করেন তারা। পরিকল্পনা অনুযায়ী ঘটনার দিন তারা বরগুনা থেকে ডিজেল সংগ্রহ করে মোটরসাইকেলে করে নুরুজ্জামান কাফির বাড়ির আশপাশে অবস্থান নেয় এবং গভীর রাতে আগুন ধরিয়ে দেয়।
ঘটনার কাজে ব্যবহৃত দুইটি মোবাইল ফোন, সিসিটিভি ফুটেজ ও অন্যান্য প্রযুক্তিগত প্রমাণাদী সংগ্রহ করা হয়েছে।
আটকদের আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে এবং মামলার তদন্ত কাজ অব্যাহত রয়েছে। এছাড়া এ ঘটনার সঙ্গে আরও কেউ জড়িত আছে কি না, তা খতিয়ে দেখছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
পুলিশ জানিয়েছে, এই হামলার ইন্ধনদাতা বা অর্থায়নকারী কেউ থাকলে তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।