এসআই শিহাবের নেতৃত্বে আদালতের নির্দেশ অমান্য করে দেয়াল নির্মাণের চেষ্টা
এ.এ.এম হৃদয়|২১:০০, মার্চ ০৫ ২০২৫ মিনিট
নিজস্ব প্রতিবেদক : বরিশাল মেট্রোপলিটন কোতয়ালী মডেল থানার এসআই শিহাবের নেতৃত্বে আদালতের নির্দেশ অমান্য করে বিএডিসির নিয়মবর্হিভূত দেয়াল নির্মাণের কাজ শুরুর চেষ্টা করেন। আজ বুধবার (৫ মার্চ) বেলা পৌনে ১২ টার দিকে বরিশাল নগরীর কেডিসি পদ্মাডিপো সংলগ্ন চলাচলের পথ আটকে এ দেয়াল নির্মাণের ঘটনা ঘটে। এ সময় ভুক্তভোগীরা আদালতে ১৪৪/১৪৫ ধারার আবেদনের নির্দেশ দেখালে এসআই শিহাব সিভিল পোশাকে মাস্তান স্টাইলে কাজ শুরুর নির্দেশনা দিলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। এ সময় ভুক্তভোগীরা বার বার আদালতের নির্দেশনা দেখালেও এসআই শিহাব আরো উত্তেজিত হয়ে ওঠে এবং বলে আদালতের এ আদেশের কাগজ ভুয়া। এখানে এই জায়গায় ওয়াল নির্মাণ হবে।
এদিকে এসআই শিহাব কোতয়ালী থানার অফিসার্স ইনচার্জকে অবহিত না করে সিভিল পোশাকে ঘটনাস্থলে আসেন এবং সার্বিক পরিস্থিতি উত্তপ্ত করেন। এক পর্যায়ে এসআই শিহাব আদালতের আদেশ না মেনে বিএডিসির পক্ষ হয়ে স্থানীয় ভুক্তভোগীদের বাকবিতন্ডায় জড়ান ও মহিলাদের গ্রেফতার করে তুলে নিয়ে যাবেন বলে হুমকি দেন এবং মহিলাদের সাথে দুর্বব্যবহার করেন। এর সাথে সাথে তিনি বিরোধপূর্ন স্থানে দাড়িয়ে আদালতের নির্দেশ অমান্য করে বলেন- এ জমি সরকারের এখানে কাজ চলবে। পরবর্তীতে জনসাধারণের রোষানলে পড়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন এসআই শিহাব। তবে এ ঘটনায় এসআই শিহাব জানান, আমি পরিস্থিতির উত্তপ্তের কারনে গ্রেফতারের কথা বলেছি। আর অন্য সব প্রশ্নের সদুত্তর দিতে পারেননি।
স্থানীয় ভুক্তভোগী লিজা জানান, সাধারণ পোশাক পড়া এক ব্যক্তি নিজেকে এসআই পরিচয় দিয়ে বলেন এখানে দেয়াল নির্মাণের কাজ চলবে। তোরা আসলে সবাইরে গ্রেফতার করবো। লিজা জানান, আমরা ডিসি অফিস, বিএডিসি চেয়ারম্যান, পুলিশ কমিশনারসহ বিভিন্ন স্থানে চলাচলের গেট চেয়ে আবেদন করি। সর্বশেষ আমরা আমরা আদালতের স্মরণাপন্ন হই। কিন্তু এসআই শিহাবের শক্তিতে তারা আদালতের নির্দেশ অমান্য করে আজ গেট আটকাতে আসছে।
এদিকে স্থানীয় বাসিন্দা ও ভুক্তভোগী সাগর বলেন, এসআই শিহাব আদালতের নির্দেশের কাগজ দেখে বলে আদালত কাগজ একটা দিলেই কি হবে। এ সময় আমাকে তুই বলে বাজে ব্যবহার শুরু করে। সাগর আরো জানান, শিহাব আইনের লোক, সে শৃঙ্খলা বজায় রাখতে ২ পক্ষের মধ্যবর্তী হয়ে কাজ করবেন। কিন্তু সে উল্টো আদালতের কাগজও অমান্য করে বিএডিসির হয়ে মাঠে নামে।
আরেক ভুক্তভোগি ও স্থানীয় বাসিন্দা নুরুল হক জানান, আমরা একটু যাতায়াতের গেটের জন্য বিভিন্ন দপ্তরে গিয়েও কোন সুরাহা না পেয়ে সর্বশেষ আদালতের স্মরনাপন্ন হই। আদালত আমাদের আবেদন গ্রহণ করে তদন্তের নির্দেশ দেন এবং ১৪৪-১৪৫ ধারা জারি করেন। কিন্তু একজন আইনের লোক হয়ে এসআই সিহাব বেআইনি কাজ করতে এসেছেন এবং সকলকে গ্রেফতারের হুমকি দিয়ে বিএডিসির পক্ষ হয়ে নিজেই দেয়াল নির্মাণের হুকুম দেন। যা আইনের পক্ষে বেমানান।
জানা গেছে, এসআই শিহাব দীর্ঘ বছর যাবত বরিশাল কোতয়ালী মডেল থানায় কর্মরত রয়েছেন। আর এই সুবাধে ৫ আগস্টের পূর্বে কোতয়ালী থানাধীন এলাকাতে ছাত্র জনতার আন্দোলনে নির্বিঘ্নে হামলা চলায় এবং আন্দোলন নস্যাত করতে সক্রিয় থাকেন।
সূত্রে জানা গেছে, বরিশাল নগরীর ১০নং ওযার্ডস্থ কেডিসি এলাকাধীন বিএডিসি কর্তৃপক্ষের নিয়ম বহির্ভূত ঘরের দরজা আটকে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ কাজ শুরু করে। আর এতে ওই এলাকার প্রায় ২০০ পরিবারের যাতায়াত বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়। স্থানীয় বাসিন্দা নুরুল হক, কালাম, লিজাসহ অন্যান্য পরিববারের চলার পথ আটকে বিএডিসি কর্তৃপক্ষ সীমানা প্রাচীর নির্মাণর কাজ শুরু করলে ঘটনাস্থলে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। এ সময় ভুক্তভোগীরা ঘরে চলাচলের জন্য ৫ ফুটের একটি গেট দাবী করলেও বিএডিসি কর্তৃপক্ষ খামখেয়ালী করে তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যায়। পরবর্তীতে ভুক্তভোগীরা বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন চেয়ারম্যান ও জিএম বরাবর চলার একটি গেট চেয়ে আবেদন করেন। এবং আদালকের স্মরনাপন্ন হন। আর তাদের আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত তদন্ত করে প্রতিবেদন দেয়ার দিন ধার্য করেন এবং উভয়পক্ষকে শৃঙ্খলা মেনে চলার জন্য নির্দেশ প্রদান করেন।
এ ঘটনায় কোতয়ালী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, সে স্থানীয় মহিলাদের সাথে এ রকম ব্যবহার করতে পারে কি না আমার জানা নেই বলে লাইন কেটে দেন।
এদিকে সর্বশেষ জানা গেছে, আদালতের ১৪৪-১৪৫ ধারা ভঙ্গ করে দেয়াল নির্মাণের কাজ করতে যাওয়ায় আদালত উক্ত স্থানে ১৮৮ ধারা জারি করেন।