ঝালকাঠির বাসন্ডা সেতু চার লেনের প্রস্তাবিত সড়ক অনিশ্চিত, বড় দূর্ঘটনার আশঙ্কা

এ.এ.এম হৃদয় | ১৯:০৪, ফেব্রুয়ারি ২৬ ২০২৫ মিনিট

বরিশাল ঝালকাঠি হয়ে পিরোজপুর থেকে খুলনা মহাসড়কটি ৪ লেনে উন্নীত করার প্রস্তাব বাস্তবায়ন হয়নি এক বছরেও। সময়ের পরিবর্তনে দক্ষিণাঞ্চলের সাথে ঢাকা খুলনার যোগাযোগ ব্যবস্থায় এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দীর্ঘ দিনেও বাস্তবায়ন না হওয়ায় ঝালকাঠির বাসন্ডা নদীর উপর নড়বড়ে সেতুটি সবচেয়ে ঝুঁকিতে। যে কোন সময় বড় দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছে সড়ক বিভাগ। ঘটতে পারে অসংখ্য মানুষের প্রাণহানি। ৭ টন ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন ব্রীজটিতে প্রতিদিন উঠছে ৭০ থেকে ৮০ টন ওজনের যান। সড়ক বিভাগের নোটিশে অতিরিক্ত মালামাল নিয়ে সেতু পারাপারে নিষেধের তোয়াক্কা নেই কারো। এ অবস্থায় ৪ লেন সড়ক নির্মাণের প্রস্তাবনা বাস্তবায়নে বিলম্ব হওয়ায় সড়ক বিভাগের গলার কাটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। একটি সুত্রে জানায়, বরিশাল খুলনা মহাসড়কের বরিশাল থেকে ঝালকাঠি হয়ে পিরোজপুর পর্যন্ত ৪ লেন সড়কটি অত্যন্ত জরুরী। এতে একদিকে বাসন্ডা নদীর সেতুতে যেমনি যানবাহনের চাপ কমবে তেমনি এই তিন জেলার সড়ক পথে যানজটের নিরসন হবে। বিশেষ করে বরিশালের রূপাতলী এলাকা, ঝালকাঠির পেট্রোল পাম্প মোড়, কলেজ মোড়, রাজাপুরের বাগড়ি এলাকা, পিরোজপুরের বেকুটিয়া, পুরাতন বাস স্ট্যান্ড, স্পটে যানজট লেগেই থাকে। সড়ক নির্মাণের সাথে ঝুঁকিপূর্ণ বাসন্ডা সেতু স্পটে তৈরী হবে ৪ লেনের নতুন আরসিসি সেতু। এই বিষয়ে ঢাকা বিআইডব্লিউটিএ এর সহকারি পরিচালক আব্দুস ছালাম জানান, “৪ লেন সড়ক ও সেতু নির্মান প্রকল্পের আওতায়। বাসন্ডা সেতুটির ৭ টনের সেতুতে চলছে ৭০ টনের যান, অতিরিক্ত ওজনে দোলছে ডেবে ও ছুটে যাচ্ছে প্লেট। বাসন্ডা সেতুর উচ্চতা প্রথমে ১২.২ মিটার নির্ধারণ করা হয়। পরবর্তীতে উচ্চতা কমিয়ে ৭.৬২ মিটার চ‚ড়ান্ত ভাবা হয়েছে। এখন বাকি কাজ বাস্তবায়নের দায়িত্ব সড়ক বিভাগের।” সড়ক বিভাগ সূত্রে জানা যায়, দক্ষিন অঞ্চলের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এই রুটের যান জট নিরসন এবং বাসন্ডা নদীর উপর নতুন সেতু নির্মানের জন্য এই ৪ লেন সড়ক ও ব্রীজ নির্মাণ প্রস্তাবনা দেয়া হয়েছে। এই প্রকল্প বাস্তবায়নে ভ‚মি অধিগ্রহনের সমীক্ষা চলছে। তবে কবে নাগাদ এই প্রকল্পের কাজ শুরু হতে পারে এমন তথ্য জানাতে পারেনি কোনো সূত্রই। তাই প্রকল্পটির ভবিষ্যত অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এ অবস্থায় ঝুঁকিপূর্ণ বাসন্ডা সেতুতে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশংকা বেড়েই চলছে। তাই প্রকল্পটির দ্রুত বাস্তবায়নের পাশাপাশি জনসাধারণ এবং যান চলাচলে নিরাপত্তার স্বার্থে ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান পরিচালনা করা দরকার। বিষেজ্ঞদের অভিমত ৭ টনের বেশি অতিরিক্ত মালামাল বহন করে যানবাহন যাতে সেতুতে উঠতে না পারে সেইজন্য আগেই বড় অংকের জরিমানা করা দরকার। একবার জরিমানা করা হলে দ্বিতীয় বার অতিরিক্ত বোঝাই করে কোনো যান বাহন উঠবে না। এতে একদিকে বড় ধরনের দুর্ঘটনা থেকে রেহাই পাওয়া যাবে অন্য দিকে হবে বিপুল পরিমান রাজস্ব। সতর্ক হবে এই রুটে চলাচলকারী ভারী যানবাহন ও চালকরা। খুলনা থেকে ঝালকাঠি নিয়ে আসা পিঁয়াজ বোঝাই ট্রাকের চালক মারুফ হোসেন জানান, আমরা জীবনের ঝুঁকি নিযে ব্রিজটি পার হই, ‘যেকোন সময় দূর্ঘটনা ঘটতে পারে। তাই অতি দ্রুত ব্রিজটি নির্মাণ করা প্রয়োজন।’ স্থানীয় বাসিন্দা সুলতান হোসেন বলেন, ব্রিজের উপর থেকে গাড়ি চলাচলের সময় প্রচন্ড আওয়াজ হয়। গাড়ি চলাচলের শব্দে রাতে ঘুমানো যায় না। তাছাড়াও ব্রিজটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। যেকোন সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভবনা আছে। বর্তমান সরকারের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি যাহাতে ব্রীজটি দ্রæত তম সময় মধ্যে নির্মাণ করা যায়।’ ঝালকাঠির গাবখান সেতুর সড়কের মত কোন দুর্ঘটনা না দেখতে হয় সেজন্য জনস্বার্থে দ্রুত ব্রিজটি নির্মাণ করা প্রয়োজন।