পটুয়াখালীতে বাবা মাকে অচেতন করে স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষণ, আটক ২
নিজেস্ব প্রতিবেদক|১৮:৩২, ফেব্রুয়ারি ২৪ ২০২৫ মিনিট
পটুয়াখালীর বাউফলে বাবা মাকে অচেতন করে ১৫বছরের এক স্কুল শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। শনিবার রাত ১১টার দিকে উপজেলার চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত বেল্লাল(২৫) ও ফয়সাল (২৪) নামের ২ব্যাক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বেল্লাল একই গ্রামের মতলেব হাওলাদারের ছেলে। এরআগে ডাকাতি ও শিবু লাল দাসকে অপহরণ মামলায় গ্রেপ্তারের পর জেল খেটে সদ্য বেড়িয়েছেন।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর মা লাইজু বেগম বলেন, তার মেয়ে চন্দ্রদ্বীপ আসম ফিরোজ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থী। বাবা ফারুক হাওলাদার ও মা লাইজু বেগম ওই শিক্ষার্থীকে নিয়ে ১০টার (আলাদা বিছানায়) দিকে ঘুমিয়ে পরেন। রাত আনুমানিক ১১টার দিকে জানালার কাঠ ভেঙ্গে অভিযুক্ত বেল্লাল ও ফয়সাল ঘরে প্রবেশ করে তার মা বাবাকে চেতনা নাশক স্প্রে ব্যবহারের মাধ্যমে অচেতন করে। এরপর ওই শিক্ষার্থীকে মুখে গামছা পেঁচিয়ে জোর করে বাড়ির পাশে নির্জন জায়গায় নিয়ে ধর্ষণ করে। ওই শিক্ষার্থী বাড়ি ফিরে ডাক চিৎকার করলে আশেপাশের লোকজন ছুটে এসে সবাইকে উদ্ধার করে বাউফল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। পরে মেয়েকে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য পটুয়াখালী সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। খবর পেয়ে পুলিশ রাতেই অভিযুক্ত বেল্লাল ও ফয়সালকে গ্রেপ্তার করে।
নির্যাতিত শিক্ষার্থীর বাবা সাংবাদিকদের বলেন, সুস্থ্য হয়েই থানায় মামলা দায়ের করবো।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, চন্দ্রদ্বীপ আসম ফিরোজ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীকে নানাভাবে উত্তক্ত করতো একই এলাকার মতলেব হাওলাদারের বখাটে ছেলে মোটরসাইকেল চালক বেল্লাল হোসেন। বছর খানেক আগে পারিবারিকভাবে ওই ছাত্রীর অন্যত্র বিয়ে হয়। বিয়ের কয়েক দিনের মাথায় স্বামীর শাররীক প্রতিবন্ধকতার কারণে তাদের বিয়ে ভেঙে যায়। এরপর ওই ছাত্রীকে ফের উত্যক্ত শুরু করে বেল্লাল। শনিবার রাত ১১টার দিকে মেয়েকে হাত-পা বেঁধে মুখ চেপে ধরে ঘর থেকে বের করে বাড়ির পাশের রাস্তার পাশে নিয়ে দুইজন মিলে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। একপর্যায়ে ওই শিক্ষার্থী তার ঘরের সামনে এসে ডাক চিৎকার দিলে প্রতিবেশি লোকজন ছুটে এসে ছেড়া কাপড়ে বেহাল অবস্থায় দেখতে পায়। এ সময় ওই শিক্ষার্থীর বাবা-মা দুইজনই অসুস্থ অবস্থায় বিছানায় পড়ে ছিল। এরপর খবর পেয়ে পুলিশ রাতেই অভিযান চালিয়ে বেল্লাল হোসেন ও ফয়সালকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। এদের মধ্যে আটক বেল্লাল ব্যবসায়ী শিবু বণিক অপহরণ মামলার অন্যতম আসামী। ১৫ দিন আগে জামিনে ছাড়া পায় সে।
অভিযুক্ত বেল্লাল হোসেন এর স্ত্রী রিপা বলেন, যাকে ধর্ষণের কথা বলা হচ্ছে সে আমার সহপাঠী। আমার স্বামীর সঙ্গে তার একসময় প্রেমের সম্পর্ক ছিল। আমার স্বামীকে না পেয়ে সে মিথ্যা অভিযোগ দিয়েছে। ঘটনার সময় আমার স্বামী বেল্লাল হোসেন আমার সঙ্গেই ঘুমিয়ে ছিল। তবে অপর অভিযুক্ত ফয়সালের পরিবারের কাউকে না পাওয়ায় তাদের বক্তব্য জানা যায়নি।
এ বিষয়ে বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামাল হোসেন বলেন, ঘটনা শোনার সাথে সাথে আমরা অভিযুক্ত বেল্লাল ও ফয়সালকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হই। এঘটনায় এখনও মামলা হয়নি। আটককৃতদের ৫৪ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে কোর্টে সোপর্দ করা হবে। বেল্লাল শিবু লাল দাসকে অপহরণ ও ডাকাতি মামলার আসামি। সে কিছুদিন আগে জেল থেকে জামিনে বের হয়েছেন।