নিজস্ব প্রতিবেদক : নিলামে বিক্রি না হওয়ায় মোংলা বন্দরে শুল্কমুক্ত সুবিধায় আনা সাবেক এমপিদের গাড়ি সরবরাহকারী দেশ জাপানে ফেরত যাচ্ছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এসব গাড়ি ফেরত পাঠাচ্ছে।
এরই মধ্যে চলতি মাসের ১৮ তারিখ পানামা পতাকাবাহী লোটাস লিডার জাহাজে নীলফামারীর-৪ আসনের সাবেক এমপি সিদ্দিকুল আলমের প্রাডো ল্যান্ড ক্রুজার গাড়িটি ফেরত পাঠিয়েছে এনবিআর।
আরেক সাবেক এমপি কক্সবাজার-১ আসনের ও কল্যান পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহিমের ল্যান্ড ক্রুজারও ফেরত পাঠানোর সব প্রক্রিয়া চূড়ান্ত হয়েছে।
বুধবার (২০ ফেব্রুয়ারি) মোংলা কাস্টমস হাউস কর্তৃপক্ষের কমিশনার ম. সফিউজ্জামান এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘মোংলা বন্দরে শুল্কমুক্ত সুবিধায় গত বছরের ১৭ জুলাই জাপান থেকে মোট চারটি প্রাডো ল্যান্ড ক্রুজার গাড়ি আমদানি করা হয়।
তার মধ্যে একটি গাড়ি জাপানে ফেরত পাঠানো হয়েছে এবং আরও একটি গাড়ি ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে। বাকি দুটি গাড়িও সংশ্লিষ্ট আমদানিকাররা চাইলে ফেরত পাঠানো হবে।’
ম. সফিউজ্জামান বলেন, ‘শুল্কমুক্ত সুবিধায় আমদানি হওয়া আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক এমপিদের ল্যান্ড ক্রুজার ছাড়িয়ে নিতে দিতে হবে মোটা অংকের শুল্ক। কারণ সংসদ ভেঙ্গে দেওয়ার পর শুল্কমুক্ত সুবিধা বাতিল করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। তিন থেকে চারগুণ শুল্ক দিয়ে এসব গাড়ি নিতে কেউ আগ্রহ দেখায়নি। তাই ফেরত পাঠানো হচ্ছে।’
মোংলা কাস্টম হাউস কর্তৃপক্ষের একটি সূত্র জানিয়েছে, গত ৬ আগস্ট রাষ্ট্রপতি সংসদ ভেঙ্গে দিলে কপাল পোড়ে দ্বাদশ সংসদের সদস্যদের। আরও অনেক কিছুর মতো শুল্কমুক্ত সুবিধায় আমদানি করা বিলাসবহুল গাড়িও হাতছাড়া হয় তাদের।
এসব গাড়ি ছাড়িয়ে তা ব্যবহারের সুযোগ পাননি কক্সবাজার-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও কল্যান পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহম্মদ ইব্রাহিম, নীলফামারী-৪ আসনের সিদ্দিকুল আলম, দিনাজপুর-১ আসনের মুহাম্মদ জাকারিয়া ও সংরক্ষিত আসনের নাসিমা জামান ববি।
তারা আত্মগোপনে বা বিদেশে পালিয়ে গেলে গাড়িগুলো সময়মতো ছাড় না করায় তা নিলামে তোলে মোংলা কাস্টম হাউস। তবে তাতেও সমাধান না হওয়ায় বিলাসবহুল এসব গাড়ি সরবরাহকারী দেশে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছে এনবিআর।
সূত্র বলছে, তৎকালীন সামরিক সরকার এইচ এম এরশাদ এমপিদের খুশি করতে ১৯৮৭ সালে প্রথম শুল্কমুক্ত গাড়ি আমদানির সুবিধা দেন। ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিধানটি বাতিল করলে ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে বিধানটি আবার চালু করে। এতে গেল ১৫ বছরে সরকার রাজস্ব হারায় কয়েক হাজার কোটি টাকা।