বরিশালে স্ত্রী-সন্তানকে ফেলে এক সন্তানের জননীকে নিয়ে উধাও ছাত্রনেতা আজাদ

এ.এ.এম হৃদয় | ১৮:১৫, ফেব্রুয়ারি ০৯ ২০২৫ মিনিট

বরিশালে স্ত্রী ও দেড় বছরের পূত্র সন্তানকে ফেলে রেখে এক সন্তানের জননীকে নিয়ে উধাও হয়েছেন জাতীয় পার্টির সহযোগী ছাত্র সংগঠন জাতীয় ছাত্র সমাজ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আবদুল্লাহ আল আজাদ (২৭)। এখন পর্যন্ত পালিয়ে যাওয়া পরকীয়া যুগলকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। প্রেমিক আজাদের ব্যবহৃত ও প্রেমিকা আন্নির ব্যবহৃত মোবাইল নাম্বারে কল দেয়া হলেও তারা ফোন রিসিভ করছে না। শিশু কন্যাসহ পরের স্ত্রীকে নিয়ে উধাও হওয়া আজাদ বাকেরগঞ্জ পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ডস্থ মাঝি বাড়ির বাসিন্দা মোঃ ফিরোজ আলমের পূত্র। পরকীয়া প্রেমিকের সাথে অজানার উদ্দেশ্যে পাড়ি দেয়া আন্নি আক্তার (২৪) বরিশাল নগরীর ২৪নং ওয়ার্ডস্থ ধানগবেষণা রোডের দারোগা বাড়ি মসজিদ গলির বাসিন্দা নওশাদ খান বাচ্চুর কন্যা এবং একই ওয়ার্ডের ব্যবসায়ী রাকিবের স্ত্রী। এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। পরকীয়া প্রেমিকের সাথে স্ত্রী উধাও হওয়ার সময় সোনা ও টাকা নিয়ে গেছেন বলে জানা গেছে। উভয়ের পরিবারের লোকজন জানান, যারা এ বয়সে সুখের সংসার ভেঙে অন্যের হাত ধরে পালায় তারা জীবনে সুখী হতে পারে না। গৃহবধূকে নিয়ে উধাও হওয়া আবদুল্লাহ আল আজাদের স্ত্রী ঝালকাঠী জেলার ৯নং দপদপিয়া ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা ভুক্তভোগী কেয়া আক্তার সুইটি জানান, গত ৩ বছর পূর্বে পারিবারিকভাবে আবদুল্লাহ আল আজাদের সাথে তার বিয়ে হয়। তাদের ঘরে রুহাব বিন আবদুল্লাহ নামে দেড় বছরের একটি পূত্র সন্তান রয়েছে। অভিযোগ করে কেয়া বলেন, বিয়ের কয়েক মাস পর থেকেই আজাদ বিভিন্ন নারীদের সাথে অবৈধ সম্পর্ক স্থাপন করেন। তিনি তার প্রতিবাদ করতে গিয়ে আজাদের হাতে একাধিকবার শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। সর্বশেষ বরিশাল নগরীর ধানগবেষণা রোডের বাসিন্দা ব্যবসায়ী রাকিবের স্ত্রী আন্নি আক্তারকে নিয়ে গত জানুয়ারী মাসের ১২ তারিখ ঢাকায় পালিয়ে যায় ‘জাতীয় ছাত্র সমাজ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য’ আবদুল্লাহ আল আজাদ। পরে আন্নির স্বামী রাকিবের অভিযোগের ভিত্তিতে ঢাকা সাভার থানা পুলিশ আন্নিকে আজাদের কাছ থেকে উদ্ধার করে আন্নির স্বামীর হাতে বুঝিয়ে দেয়। এঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই ২য় দফায় অর্থাৎ চলতি মাসের ৫ ফেব্রুয়ারী কেয়া আক্তার সুইটি ও তার দেড় বছরের শিশু পূত্র রুহাব বিন আবদুল্লাহকে ফেলে রেখে ব্যবসায়ী রাকিবের স্ত্রী পরকীয়া প্রেমিকা আন্নি আক্তার ও রাকিবের শিশু কন্যা আরিবা(৩)কে নিয়ে নিরুদ্দেশ হয়ে যায় আবদুল্লাহ আল আজাদ। জানা গেছে- গত ৭ বছর পূর্বে নিজের পছন্দে রাকিবকে বিয়ে করেন আন্নি। শিশু কন্যাকে সাথে নিয়ে পরকীয়া প্রেমিক আজাদের সাথে স্ত্রী আন্নি পালিয়ে যাওয়ার ঘটনায় পাগল প্রায় রাকিব। ওই প্রেমিক জুটি ঘর ছেড়ে অন্যত্র পালিয়ে গিয়ে দুজনের ছবি তুলে  ফেইসবুক আইডিতে পোস্ট করে, যা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়। এ ঘটনায় দুই এলাকার লোকজনের মাঝে হাসির খোরাক জন্ম দিয়েছে। পরকীয়ার বিষয়ে ও স্বামী উধাও হওয়ার ঘটনা নিয়ে আজাদের স্ত্রী কেয়া আক্তার সুইটি আরও জানান, গত ৩ বছর পূর্বে ইসলামি শরিয়াহ মোতাবেক কাবিননামামূলে আবদুল্লাহ আল আজাদের সঙ্গে পারিবারিকভাবে তার বিয়ে হয়। তিনি আরও বলেন, এ সংসারে তার কোলজুড়ে আসে এক পূত্র সন্তান। বিয়ের কয়েক মাস পর থেকেই আন্নি আক্তার সহ একাধিক নারীর সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে আমাকে জ্বালাপোড়া ও শারীরিক নির্যাতন শুরু করে আজাদ। সংসারের সুখের আশায় পিতার বাড়ি থেকে একাধিকবার টাকা পয়সা এনে দিয়েছি তাকে। সেই টাকা পয়সা তিনি পরকীয়া প্রেমিকাদের পিছনে নষ্ট করতেন। তিনি বলেন, আন্নিসহ আরও নারীদের সাথে আজাদ অবৈধ সম্পর্ক গভীর করে তোলে। আমি তার প্রতিবাদ করলে আমাকে বিভিন্ন সময় নির্যাতন করে আহত করে সে। আমি তার নির্যাতনে হাসপাতালেও ভর্তি হয়েছি। তিনি বিয়ের পর থেকেই আমার কোন দায়িত্ব পালন করেনি। এদিকে এলাকাবাসী জানিয়েছেন, স্ত্রী সন্তানকে রেখে পরকীয়া প্রেমিকাকে নিয়ে পালিয়ে যাওয়া খুব দুঃখজনক। তাদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি। ভুক্তভোগী রাকিব জানান, আন্নি আমার স্ত্রী। আমার ৩ বছরের শিশু কন্যা আরিবাকে নিয়ে আজাদের সাথে পালিয়ে গেছে সে। এমনকি সে পালিয়ে যাওয়ার সময় আমার ঘরে রক্ষিত স্বর্ণ, নগদ কয়েক লাখ টাকা লুট করে নিয়ে যায়। সন্তান সহ স্ত্রী পালিয়ে যাওয়ার আমি অসুস্থ। আমি এ অপরাধীদের বিচার দাবি করছি। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী কেয়া আক্তার সুইটি ও রাকিবের পক্ষ থেকে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।