বরিশালে রাজা হত্যায় জড়িত আসামীদের ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন
নিজেস্ব প্রতিবেদক|২২:২৪, ফেব্রুয়ারি ০৩ ২০২৫ মিনিট
নিজস্ব প্রতিবেদক : বরিশাল সদর উপজেলার চাঁদপুরা ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ড পূর্ব হিজলতলা এলাকায় লাউ গাছ নিয়ে বিরোধকে কেন্দ্র করে আব্দুর রাজ্জাক খান ওরফে রাজা খানকে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এদিকে মামলার বাদীকে ফাঁসাতে বিবাদীরা নিজেদের বসতঘর ভাংচুর করে বাদীর বিরুদ্ধে মামলা দেওয়ার ষড়যন্ত্র করছে বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।
আজ সোমবার (৩ জানুয়ারী) দুপুরে মৌলভীরহাট (হিজলতলা) এলাকায় আসামিদের ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন করেন স্থানীয়রা।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, মামলার ৩ নং আসামি কামাল হোসেন খান ৫ নং আসামী জালাল হাওলাদার জামিনে বের হয়ে বাদী ফয়জুন্নেসা বেগমকে মামলা তুলে নিতে ও তার কলেজ পড়ুয়া মেয়েকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে আসেন।
গত (২৪ জানুয়ারী) শুক্রবার বিকাল সাড়ে ৪ টার দিকে বাদীর বসত ঘরের সামনে এ হত্যার ঘটনা ঘটে।
নিহতের স্ত্রী ফয়জুন্নেসা অভিযোগ করেন, গত ২৪ জানুয়ারী জমি জমা সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে আমাকেসহ আমার স্বামীকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করার উদ্দেশ্যে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে মারাত্মক জখম করে আসামী কামাল হোসেনের ছেলে রিফাত হোসেন, জালাল হাওলাদারের ছেলে ফয়সাল হাওলাদার, জালালের স্ত্রী বকুল বেগম, মৃত কদম আলী খানের ছেলে কামাল হোসেন খান, কামাল হোসেনের স্ত্রী খাদিজা বেগম, মৃত আদম আলী হাওলাদারের ছেলে জালাল হাওলাদার, জালাল হাওলাদারের ছেলে উজ্জল হাওলাদার, নাসির উদ্দিনের স্ত্রী ফেরদৌসী বেগমসহ অজ্ঞাত ৫/৭ জন সন্ত্রাসীরা। এতে গুরুতর আহত অবস্থায় আমার স্বামী রাজ্জাক খান ওরফে রাজা মিয়াকে উদ্ধার করে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এই ঘটনায় ঐদিনই বন্দর থানায় আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়।
হত্যা মামলায় ১ নং আসামী রিফাত হোসেন বর্তমানে জেল হাজতে রয়েছে এবং ৩ নং আসামি কামাল হোসেন খান ও ৫ নং আসামী জালাল হাওলাদার বিজ্ঞ আদালত থেকে জামিনে বের হয়ে গত শুক্রবার সকাল সাতটায় বাদীর বসত ঘরের সামনে এসে মামলা তুলে নিতে প্রাণ নাশের হুমকি দেয়। বর্তমানে বাদী ও তার পরিবার আসামিদের ভয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে।
নিহতের চাচাতো ভাই অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কনস্টেবল আঃ মান্নান খান কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, আসামী কামালের নেতৃত্বে তার ছেলে রিফাত ও স্ত্রী মিলে লাউ গাছ নিয়ে বিরোধকে কেন্দ্র করে আমার ভাইকে দেশীয় অস্ত্র শস্ত্র দিয়ে মাথার উপর আঘাত করে মেরে ফেলেছে। এখন বিবাদীরা জামিনে এসে নিজেদের ঘর ভাংচুর করে ও আমাদের স্ব পরিবারকে মামলার ভয়ভীতি দেখিয়ে মামলা তুলে না নিলে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে আসছেন।
নিহতের কলেজ পড়ুয়া মেয়ে মিতু আক্তার জানান, পূর্বের পরিকল্পিতভাবে লাউ গাছ নিয়ে বিরোধকে কেন্দ্র করে আমার বাবাকে রিফাত দেশীয় অস্ত্র দিয়ে মাথার উপর আঘাত করে মেরে ফেলেছে। এখন আসামিরা ২১ দিন জেল হাজতে থেকে বের হয়ে আমাদের মামলা তুলে নিতে ও মামলার খরচ বাবদ দুই লাখ টাকা দিতে হবে বলে হুমকি দিয়ে আসছে। মামলা তুলে না নিলে আমাকে কলেজে যেতে দেখলে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে যাবে তারা। আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার ও মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার স্যারসহ সকল প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের সহযোগিতা একান্ত কামনা করছি।
এবিষয় বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, নিহত পরিবারের পক্ষ থেকে একটি হুমকির জিডি দায়ের করা হয়েছে। দায়েরকৃত জিডি তদন্ত চলমান রয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।