স্বামীর ঋণের দায়ে ১৪ মাস বয়সের শিশুসহ স্ত্রী গ্রেপ্তার

আল-আমিন | ১৮:৪৬, ডিসেম্বর ১৮ ২০২৪ মিনিট

নিজস্ব প্রতিবেদক : সাভারের আশুলিয়ায় একটি এনজিও’র দায়ের করা এনআই অ্যাক্টের মামলায় দুই শিশসহ মাকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠিয়েছে পুলিশ। এর আগে রাতভর ওই দুই শিশসহ মাকে থানায় আটকে রাখা হয়। বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) দুপুরে দুই শিশুসহ তাদের মাকে আদালতে পাঠিয়েছে পুলিশ। এর আগে গতকাল রাতে আশুলিয়ার পল্লিবিদ্যুৎ এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার ওই নারীর নাম হানিয়া বেগম, তিনি আশুলিয়ার পল্লীবিদ্যুত এলাকার মনির হোসেনের স্ত্রী। তার সাথে আড়াই বছরের মো. রায়হান ও ১৪ মাস বয়সের মাশরাফ নামের দুটি শিশু সন্তান রয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রায় ১ বছর আগে দি ঢাকা মার্কেটাইল ব্যাংক কো-অপারেটিভ লিমিটেড নামের একটি এনজিও’র পল্লীবিদ্যুৎ শাখা থেকে ৩ লাখ ৪০ হাজার টাকা ঋণ নেন ওই নারীর স্বামী মনির হোসেন। প্রায় ২ লাখ ৪০ হাজার টাকার কিস্তি পরিশোধ করলেও ১ লাখ টাকা পরিশোধে ব্যর্থ হয় মনির। এঘটনায় এনজিও কর্তৃপক্ষ চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এনআই অ্যক্টে একটি মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় ঋণ গ্রহীতা মনির হোসেনের স্ত্রী হানিয়া বেগমকে আসামি করা হলে তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে আদালত। পরে পুলিশ হানিয়া বেগমকে গতকাল রাতে তার আড়াই বছরের রায়হান ও ১৪ মাস বয়সের সন্তান মাশরাফসহ তাকে থানায় নিয়ে যায়। গভীর রাত পর্যন্ত থানার ভিতর একটি কক্ষে আটকে রাখায় ওই নারীর শিশু সন্তানরা ভয়ে কান্না করছিলো। ঋণ গ্রহীতা মনির হোসেন বলেন, ঋণ নিয়েছি আমি, আমাকে গ্রেপ্তার না করে তারা আমার স্ত্রী-সন্তানকে থানায় নিয়ে গেছে। আমি একটা ছোট্ট ব্যবসা করতাম। লোকসানের মুখে পড়ায় কিস্তি দিতে কিছুটা সময় নিচ্ছি। ঋণের বেশিরভাগ টাকাই পরিশোধ করেছি। বাকি ১ লাখ টাকার জন্য তারা আমার স্ত্রী ও দুই শিশু সন্তানকে থানায় নিয়ে গেছেন। গ্রেপ্তার হানিয়া বেগম বলেন, আমি কোনো ঋণ নেই নি। কেন তারা আমাকে গ্রেপ্তার করেছে তা আমি জানি না। শুধু শুনেছি, আমার স্বামী কিস্তি দিতে পারে নাই। তাই তারা আমার নামে মামলা দিয়েছে। অথচ আমি কোন এনজিও থেকে টাকাই তুলিনি। তারা আমার স্বামীকে কিছু না বলে, আমাকে ধরে এনেছে। গ্রেপ্তার অভিযানে নের্তৃত্ব দেয়া আশুলিয়া থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) নজরুল ইসলাম বলেন, হানিয়া বেগমের নামে আদালত গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। তাই তাকে আটক করে থানায় আনা হয়। তার সঙ্গে দুই শিশু সন্তানও রয়েছে। সন্তান বুকের দুধ খাওয়ায় তাদের রেখে আসতে পারিনি। সুশাসনের জন্য নাগরিক কমিটির ঢাকা বিভাগের সমন্বয়ক জিল্লুর রহমান বলেন, এই শীতে বাচ্চা দুটিকে থানায় রাখা অমানবিক। পুলিশ ইচ্ছে করলে বাচ্চা দুটিকে ভালো সুরক্ষা দিতে পারতো। কারণ ওসির অনেক দায়িত্ব ছিল। ওই নারীতো আর হত্যা কিংবা বড় কোনো অপরাধের সঙ্গে জড়িত না। আশুলিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবু বকর সিদ্দিককে একাধিকবার মুঠোফোনে কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেন নি। তবে তিনি রাতেই ঘটনা দুঃখজনক বলে বিষয়টি দেখার কথা জানান।