নিজস্ব প্রতিবেদক : বরিশাল নগরীতে ব্যাংকের মধ্যে দুই ঘণ্টা আটকে রেখে একজন ব্যবসায়ীকে দফায় দফায় মারধরের অভিযোগ উঠেছে ব্যাংক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে। রেমিট্যান্সের টাকা উঠাতে গিয়ে ব্যাংক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে হয়রানির অভিযোগ করায় ওই ব্যবসায়ীকে মারধর করা হয়েছে বলে জানা গেছে। ১১ ডিসেম্বর বুধবার দুপুরে নগরীর লাইন রোডে অগ্রণী ব্যাংকে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পরপরই মারধরের কয়েকটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ছড়িয়ে পড়ে। মারধরের শিকার ব্যবসায়ী রিয়াজুল ইসলাম রিয়াজ (২৮)। তিনি লাইন রোডের ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর মালতিয়ারের ছেলে।
জানা গেছে, নগরীর লাইন রোডে অবস্থিত মেসার্স মালতিয়া হার্ডওয়ারের মালিক রিয়াজুল ইসলামের নামে বিদেশ থেকে ২ লক্ষ টাকা পাঠানো হয়। বিষয়টি জানতে গতকাল দুপুর ৩টার সময় নগরীর লাইন রোডে অগ্রণী ব্যাংকে তার দোকান কর্মচারীকে পাঠানো হয়। এ সময় দোকান কর্মচারী ব্যাংকের রেমিট্যান্স অফিসার রিফাত শাহারিয়ার কাছে গিয়ে রেমিট্যান্সের বিষয়ে জানতে চাইলে তার সাথে খারাপ আচরন করে। দোকান কর্মচারী বিষয়টি দোকান মালিক রিয়াজকে জানালে তিনি ব্যাংকে গিয়ে খারাপ আচরনের কারন জানতে চাইলে ওই রেমিট্যান্স অফিসার রিফাত শাহারিয়ার তার উপরও চড়াও হয়। এসময় উভয়ের মধ্যে বাকবিতন্ডা শুরু হয়। একপর্যায়ে ব্যাংক কর্মচারী রিফাত শাহারিয়ার ব্যবসায়ী রিয়াজের পরিহিত শার্টের সামনের দিকের কলার চেপে ধরেন।
এ সময় ওই ব্যবসায়ীকে রক্ষা করতে দোকানের কর্মচারী এগিয়ে আসলে ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার সোহেল রানা সহ কয়েকজন মিলে তাদের উপরও অমানষিক নির্যাতন চালায়। হামলার সময় ব্যাংকের দাড়োয়ান ভিতর থেকে কেচি গেট তালা মেরে বন্ধ করে দেয়। হামলার এক পর্যায়ে দোকান মালিক রিয়াজ নিজেকে বাঁচাতে ব্যাংক ম্যানেজার মোঃ রাকিবুল ইসলামের কাছে সাহায্য চাইলেও তিনি তাদের চোর বলে আটকে রাখার নির্দেশ দেন। ব্যাংক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উর্পযুপুরি নির্যাতনে নিস্তেজ হয়ে পড়েন ব্যবসায়ী রিয়াজ। কিছুক্ষন পর হামলার বিষয়টি ব্যাংকের নিচে বিভিন্ন ব্যবসায়ীর মধ্যে ছড়িয়ে পড়লে তারা পুলিশের সহয়তায় দোকান মালিক রিয়াজ ও তার কর্মচারীকে উদ্ধার করেন। পরে পুলিশ ওই ব্যাংকের ম্যানেজার ও দুই অফিসার রিফাত শাহারিয়ার এবং সোহেল রানাকে থানায় নিয়ে যায়।
এ বিষয়ে ব্যাংকের ম্যানেজার মোঃ রাকিবুল ইসলাম বলেন, ব্যবসায়ী রিয়াজ রেমিট্যান্সের টাকা উঠাতে আমার ব্যাংকে আসলে রেমিট্যান্স অফিসারের সাথে বাকবিতন্ডায় জড়িয়ে পড়েন। পরে ব্যবসায়ী রিয়াজকে আমার দুই অফিসার রিফাত শাহারিয়ার এবং সোহেল রানা মারধর করেন। কিন্তু আমি তাকে চোর বলে আটকিয়ে রাখতে বলিনি। আমি ভুক্তভোগীদের আইনগত ব্যবস্থা নিতে বলেছি।
এদিকে দোকান মালিক ব্যবসায়ী সমিতির সদস্যরা জানিয়েছে, ওই দুই অফিসারের বিরুদ্ধে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহন না করলে তারা দোকান বন্ধ করে প্রতিবাদ জানাবে। এবিষয়ে বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো মিজানুর রহমান বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। পরে ব্যাংকের জিএম নুরুল হুদা এসে দুই পক্ষের কথা শুনে ওই দুই ব্যাংক অফিসার রিফাত শাহরিয়ার ও সোহেল রানাকে স্ট্যান্ডরিলিজ করেছে।