বরিশালে নেই শিশুদের পেন্টা ভ্যালেন্ট ও পিসিভি টিকা, দুশ্চিন্তায় অভিভাবকরা
নবজাতক শিশুদের পাঁচটি রোগের প্রতিষেধক পেন্টা ভ্যালেন্ট ও পিসিভি টিকা নেই গোটা বরিশালে। বিগত একমাস ধরে টিকা সংকটের কারণে প্রতিদিন সরকারি হাসপাতাল ও টিকাদান কেন্দ্রে গিয়ে ভোগান্তিতে পরেছেন অভিভাবকরা। যথাসময়ে টিকা দিতে না পারায় টিকার কার্যকারিতা ও নবজাতকের স্বাস্থ্য ঝুঁকির কথা ভেবে দুশ্চিন্তায় পরেছেন নবজাতক শিশুদের অভিভাবকরা।
বুধবার দুপুরে সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে জানা গেছে, নবজাতকদের এই টিকা নির্ধারিত কেন্দ্রের বাহিরে পাওয়ার কোন সুযোগ নেই। যেকারণে নবজাতকদের টিকা কার্যক্রম পরেছে অনিশ্চয়তার মধ্যে। কবে নাগাদ টিকা কার্যক্রম স্বাভাবিক হবে সে বিষয়ে নির্দিষ্ট কোন তথ্যও মিলছে না।
সূত্রমতে, সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির (ইপিআই) আওতায় জন্মের পর থেকে ২৩ মাস বয়সের মধ্যে ১০টি বিভিন্ন রোগের প্রতিষেধক হিসেবে শিশুদের সাত ধরনের টিকা দেওয়া হয়। টিকাগুলো হলো-বিসিজি, ওপিডি বা পোলিও, আইপিভি, পিসিভি, পেন্টা ভ্যালেন্ট, এমআর-১ ও এমআর-২। এরমধ্যে গত একমাস ধরে পিসিভি ও পেন্টা ভ্যালেন্ট পাওয়া যাচ্ছেনা।
বরিশাল সদর হাসপাতালে টিকাদান কর্মসূচীর সেবিকারা জানিয়েছেন, প্রতিদিন হাসপাতালে দুইশ’ নবজাতক শিশুকে টিকা দেওয়া হয়। কিন্তু টিকা না থাকায় শিশুদের টিকা দেয়া যাচ্ছেনা। টিকা না পেয়ে অভিভাবকরা হতাশ হয়ে ফিরে যাচ্ছেন। নির্দিষ্ট সময় টিকা দিতে না পারায় অভিভাবকরা অনেকটা শংকিত হয়ে পড়েছেন।
সেবিকারা আরও জানিয়েছেন, এসব টিকা বিদেশ থেকে আমদানী করতে হয়। বাহিরে কোথাও পাওয়া যায় না। তবুও অভিভাবকরা বিভিন্ন ওষুধের দোকানে গিয়ে টিকার সন্ধান করেন। এতে তাদের আরো ভোগান্তি বাড়ছে।
নগরীর হাসপাতাল রোডের বাসিন্দা মো. রিয়াজ হোসেন জানিয়েছেন, তার কন্যা শিশুকে নিয়ে বেশ কয়েকবার সদর হাসপাতালের টিকা কেন্দ্রে গিয়েছিলেন। কিন্তু টিকা না থাকায় প্রতিবার ফিরে এসেছেন। সময়মতো টিকা দিতে না পারায় হতাশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, নির্দিষ্ট সময় টিকা দিতে না পারলে সন্তান ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডা. মলয় কৃষ্ণ বড়াল বলেন, আমরা চাহিদা পাঠিয়েছি। কিন্তু এখনো আসেনি। মাসিক স্বাস্থ্য কমিটির সভায়ও বিষয়টি উপস্থাপন করা হয়েছে। সভায় ইউনিসেফের প্রতিনিধি জানিয়েছেস, দ্রুত সময়ের মধ্যে টিকা আনার চেষ্টা করা হচ্ছে। নবজাতকদের এসব টিকা দেরীতে দিলে কোন সমস্যা হবে না বলেও তারা আশ্বস্ত করেছেন।
সদর হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, টিকা আমদানী করার পর ঢাকার মহাখালী থেকে বরিশাল সিটি করপোরেশনের স্বাস্থ্য শাখায় পাঠানো হয়। তারা সরকারি হাসপাতালসহ বিভিন্ন টিকা কেন্দ্রে এসব টিকা পাঠিয়ে থাকেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জেলার প্রতিটি উপজেলার সরকারি হাসপাতাল ও টিকা কেন্দ্রগুলোতেও গত এক মাস ধরে নবজাতক শিশুদের পাঁচটি রোগের প্রতিষেধক পেন্টা ভ্যালেন্ট ও পিসিভি টিকা নেই।
এ ব্যাপারে বরিশাল সিটি করপোরেশনের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মঞ্জুরুল ইমাম বলেন, প্রতি সপ্তাহে চাহিদা ঢাকায় পাঠানো হচ্ছে। কিন্তু তারা দিচ্ছে না। টিকা পেলেই কেন্দ্রগুলোতে সরবরাহ করা হবে। নবজাতক শিশুদের পাঁচ বছর বয়সের মধ্যে এসব টিকা দিতে হয়। দেরী হলে কোন সমস্যা হবে না।