মাঠ প্রশাসনে করোনা আক্রান্ত ১০৭ জন

কামরুন নাহার | ১৫:৪৩, মে ০৩ ২০২০ মিনিট

করোনা দুর্যোগ মোকাবিলায় সামাজিক দূরত্ব ও হোম কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত এবং মৃত ব্যক্তির দাফন ও ত্রাণ বিতরণসহ বিভিন্ন প্রত্যক্ষ কাজ করতে গিয়ে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছেন প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তারা। ডিসি, এডিসি, ইউএনও, এসিল্যান্ড ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটসহ মাঠ প্রশাসনের ১০৭ কর্মকর্তা-কর্মচারী এ পর্যন্ত এ রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। শুধু এই কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নন, তাদের এই ঝুঁকিপূর্ণ দায়িত্বের কারণে তাদের আত্মীয়স্বজনও আক্রান্ত হচ্ছেন কিংবা ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। ইতোমধ্যে প্রশাসন ক্যাডারের ২১ কর্মকর্তা আক্রান্ত হয়েছেন, যাদের একজন মারাও গেছেন। কর্মচারী আক্রান্ত হয়েছেন ৮৬ জন। তাদের মধ্যে জেলা প্রশাসনের দু'জন অকালে মারা গেছেন। আক্রান্তদের মধ্যে নারায়ণগঞ্জ ও হবিগঞ্জ জেলায় চারজন, নরসিংদীতে সাতজন, কিশোরগঞ্জ, গাজীপুর, চাঁদপুর ও চট্টগ্রামে একজন করে, সৌদি আরবে একজন এবং দুদকের একজন কর্মকর্তা মারা গেছেন। সারাদেশে করোনায় আক্রান্তদের ৮৪ ভাগই ঢাকা মহানগর ও ঢাকা বিভাগের। ফলে এ বিভাগে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে কাজ করছেন প্রশাসনের কর্মকর্তারা। বর্তমানে সারাদেশে ৪৮৬ জন ইউএনও রয়েছেন। এদের মধ্যে ১৪০ জন ইউএনও নারী। এ ছাড়া আট জেলায় নারী কর্মকর্তারা জেলা প্রশাসকের দায়িত্ব পালন করছেন। তারাও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছেন। প্রায় প্রতিটি উপজেলায় সহকারী কমিশনারও (ভূমি) আছেন। বর্তমানে মাঠ প্রশাসনে তাদের কাজের পরিধি বেশি। ইউনিয়ন পর্যায়ে সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও ইউএনওদের সব কাজের সমন্বয় করতে হচ্ছে। তারা প্রতিটি ইউনিয়নে গিয়ে তালিকা করছেন এবং করোনাভাইরাস মোকাবিলার পাশাপাশি অসহায় মানুষের ত্রাণ সহায়তা নিশ্চিত করছেন।  এমন অবস্থাও হয়েছে যে, একজন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) করোনার লক্ষণ নিয়ে মৃত ব্যক্তির জানাজা পড়াতেও হয়েছে। আবার জ্বর, ঠাণ্ডায় আক্রান্ত এক বৃদ্ধাকে আত্মীয়স্বজনরা ফেলে রেখে গেলে তার ভরণ-পোষণের দায়িত্ব নিতে হয়েছে একজন সহকারী কমিশনারকে (ভূমি)। এর মধ্যে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রীর উদ্যোগে মেহেরপুর জেলা প্রশাসনে ভ্রাম্যমাণ মেডিকেল সার্ভিস চালু হয়েছে। বেশকিছু এলাকায় জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব রোধে চালু হয়েছে ভ্রাম্যমাণ বাজার। এ বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেন, করোনাভাইরাসের শুরু থেকে প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের সম্মুখভাগে কাজ করতে হচ্ছে। ইতোমধ্যে কয়েকজন কর্মকর্তা করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। তাদের মাস্ক ও গ্লাভসসহ নিরাপদ পোশাক পরে ও নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে কাজ করতে বলা হয়েছে। তাদের সুরক্ষা সামগ্রী কেনার জন্য আলাদা অনুদান দেওয়া হয়েছে। কারণ তারা অসুস্থ হলে কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়বে। সূত্র: দৈনিক সমকাল