ত্রান কমিটি গঠন নিয়ে দ্বন্দ্ব, চেয়ারম্যানকে হত্যার চেষ্টা

কামরুন নাহার | ০২:০২, মে ০৩ ২০২০ মিনিট

  নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ বরিশাল সদর উপজেলা জাগুয়া ইউনিয়নের ত্রাণ বিতরনের কমিটি গঠন নিয়ে সংঘর্ষের ঘটনায় ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তাক আলম চৌধুরীর উপর সসস্ত্র হামলার চেষ্টা চালানো হয়েছে। স্থানীয় সুত্র জানায়, শনিবার (২মে) দুপুরে করোনার ত্রান দুস্থদের মাঝে বিতরনের জন্য ইউনিয়নের ৯টি ওয়ার্ডের কমিটি গঠন করার জন্য সভার আয়োজন করা হয়। সভায় ইউপি চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে ৯টি ওয়ার্ডের মেম্বার ও আ’লীগ নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। সভা চলাকালীন সময়ে ৪ নং ওয়ার্ডের কমিটি গঠন নিয়ে উক্ত ওয়ার্ড মেম্বার আলমগীর ও ৫নং ওয়ার্ড সদস্য কামাল ফরাজি মাষ্টারের মধ্যে কথা কাটাকাটি একপর্যায়ে উত্তেজনা শুরু হয়। কিন্তু ইউপি চেয়ারম্যান ও ওয়ার্ড সদস্যদের হস্তক্ষেপে বিষয়টি সমাধান কার হয়। তবে তুচ্ছ বিষয়টিকে আরো ঘোলাটে করে তোলে ৪নং ওয়ার্ডের এক সদস্য সাইদুল সিকদার। তিনি সভাস্থল থেকে বের হয়ে তার পিতা আনছার উদ্দিন, ছোট ভাই ওয়ার্ড ছাত্রদলের নেতা ওয়াবদুল ও ৩নং ওয়ার্ডের বিতর্কিত মেম্বার জামাল সরদারের নেতৃত্বে বিশাল সন্ত্রাসী গ্রুপ নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদের সভাস্থল ঘেরাও করে। কিছুক্ষন পরে সন্ত্রাসীরা প্রত্যেকে দেশীয় অস্ত্র রামদা ও দা নিয়ে পরিষদে হামলা চালায়। তবে ভিতরে অবস্থানকালীন ওয়ার্ড সদস্যরা পরিষদের গেইট বন্ধ করে দিয়ে চেয়ারম্যানকে প্রানে রক্ষা করে অন্যত্র সরিয়ে নিতে সক্ষম হয়। পরে কোতয়ালি থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। এ ব্যাপারে জাগুয়ার ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তাক আলম চৌধুরী বলেন, গত মাসের ২৪ তারিখ জাগুয়া ইউনিয়নের করোনার ত্রান দুস্থদের মাঝে বিতরনের জন্য ইউনিয়নের ৯টি ওয়ার্ডের উপকারভোগী নির্বাচন কমিটি গঠন করার জন্য সদর উপজেলা থেকে একটি নির্দেশনা দেওয়া হয়। সেই মোতাবেক আজ শনিবার (২মে) সকল ওয়ার্ডের মেম্বার, সদস্য ও স্থানীয় আ’লীগ নেতৃবৃন্দের নিয়ে দুপুরে ইউনিয়ন পরিষদে সভার আয়েজন করি। সভাকালীন সময়ে সদস্যদের মাঝে সামান্য বাকবিতন্ডা হলেও তা মিটে যায়। এর কিছুক্ষন পর ৩নং ওয়ার্ডের মেম্বার জামাল সরদারের নেতৃত্বে ৪নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা সাইদুল সিকদার, তার পিতা আনছার উদ্দিন ও তার ছোট ভাই ছাত্রদল নেতা ওবায়দুল সিকদারসহ প্রায় ২০ জনের একটি সন্ত্রাসী গ্রুপ রামদা নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদে হামলা চালায়। তবে ভিতরে অবস্থানকারী ওয়ার্ড সদস্যরা পরিষদের গেইট বন্ধ করে দেয়ায় সাইদুল গংদের সন্ত্রাসী গ্রুপ ভিতরে ঢুকতে পারেনি। আমি সাথে সাথে ইউএনওকে ফোন দিয়েছি কিন্তু রিসিভ করেননি। এরপর কোতয়ালি থানায় ফোন দিলে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনেন। তিনি আরো বলেন, আমার উপর হামলার চেষ্টা কারীদের বিরুদ্ধে থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছি। এদিকে কোতয়ালি মডেল থানার ওসি নুরুল ইসলাম বলেন, জাগুয়া ইউনিয়নের ত্রান বিতরন কমিটি গঠন নিয়ে চেয়ারম্যান মোস্তাক আলম চৌধুরীর উপর হামলার চেষ্টা চালানো হয়েছে। তিনি থানায় এসে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। আগামিকাল রবিবার (৩মে) ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সকল ওয়ার্ড মেম্বার ও স্থানীয়দের সাথে কথা বলে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহন করা হবে। এদিকে ঘটনার বিবরন দিয়ে ৭ নং ওয়ার্ড মেম্বার বাশার জানায়, চেয়ারম্যানের উপর হামলার চেস্টাকারী আনসার উদ্দিন একজন ভুমিদস্যু। ইউনিয়নের সকল অপকর্মের মূলহোতা ওয়ার্ড মেম্বার জামাল সরদারের একান্ত সহযোগী এই আনসার উদ্দিন। মেম্বারের সহযোগীতায় অসহায় মানুষদের অনেক জমি ও বাড়ি দখল করে নিয়েছে আনসার উদ্দিন। এছাড়াও শেরেবাংলা বাজারে অনেকদিন যাবত ইউনিয়ন পরিষদের একটি স্টল জবর দখল করে ভোগ করে আসছে। শুধু তাই নয়, সরকারি রাস্তা দখল করে সাধারন মানুষদের চলতে দেয় না। ওয়ার্ড মেম্বার বাশার আরো জানায়, মামলাবাজ আনসারের রয়েছে একটি সন্ত্রাসী বাহিনী। যার ভয়ে কেউ প্রতিবাদ করার সাহস পায় না। তার সন্ত্রাসী বাহিনীর প্রধান হচ্ছে তারই দুই পুত্র সাইদুল সিকদার ও ওবায়দুল সিকদার। এদিকে স্থানীয় সুত্র আরো জানায়, গত মাসের শেষের দিকে জাগুয়া ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান নিবার্চিত করা হয় মেম্বার জাকিরকে। আর এতে ক্ষিপ্ত হয় মেম্বার জামাল। যে কারনে আনসার উদ্দিন গংদের দিয়ে সুচতুর মেম্বার জামাল চেয়ারম্যান মোস্তাক আলম চৌধুরী ও জাকিরের উপর হামলার চেস্টা চালায়।