পটুয়াখালীতে অলৌকিক প্রভাব খাটিয়ে এক মাসের হাজিরা একদিনে দেন সহকারী শিক্ষক!
পটুয়াখালী সদর উপজেলাধীন ৩ নং ইটবাড়িয়া ইউনিয়নের ১৪৫ নং পূর্ব চান্দখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মোঃ শামীম আহমেদের বিরুদ্ধে অলৌকিক শক্তির প্রভাব খাটিয়ে এক মাসের হাজিরা ১ দিনে কমপ্লিট করার অভিযোগ উঠেছে।
জানা গেছে- ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক মোঃ শহিদুল ইসলামকে এক প্রকারের জিম্মি করে সহকারী শিক্ষক মোঃ শামীম আহমেদ নিয়মিত বিদ্যালয়ে না এসে, প্রতি মাসের হাজিরা খাতায় ১ দিনে স্বাক্ষর দেন ও প্রতিমাসের সরকারি বেতন ভাতা উঠিয়ে নেয়। সহকারী শিক্ষক মোঃ শামীম আহমেদ তিনি অত্র প্রতিষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন ২০১৪ সালের ১০ মে। তারপর থেকে এভাবে প্রতিষ্ঠানের কোন নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে অলৌকিক শক্তির প্রভাব খাটিয়ে বিদ্যালয় ঠিকমতো আসেনি।
সারজমিনে বিদ্যালয়টিতে সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে দেখা যায়- পুরো বিদ্যালয়টিতে মাত্র ৪ জন শীক্ষার্থী নিয়ে ক্লাস করাচ্ছেন শিক্ষকরা। কিন্তু জানা গেল ওই স্কুলে মোট শিক্ষক রয়েছে ৬ জন, তার ভিতরে ২ জন অনুপস্থিত।
এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক মোঃ শহিদুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন- ২ জন শিক্ষক অসুস্থ থাকায় তারা ছুটিতে গিয়েছে। তার ভিতরে একজন শিক্ষক ট্রেনিংয়ে ছিল ও মোঃ শামীম আহমেদ ৩ দিনের ছুটি নিয়ে ৪ দিন পার হলেও বিদ্যালয় এখন আসেনি।
সংবাদকর্মীরা তথ্য নিয়ে বিদ্যালয় থেকে বের হতে না হতেই পটুয়াখালী চৌরাস্তায় সাংবাদিকদের চা খাওয়ানোর জন্য স্বাভাবিক মানুষের মতো দাঁড়িয়ে ছিলো অসুস্থ শিক্ষক মোহাম্মদ শামীম আহমেদ।
প্রধান শিক্ষকের কাছে সহকারী শিক্ষক মোঃ শামীম আহমেদ ঠিকমতো বিদ্যালয় আসেনা ও যেদিন আসে সেদিন পিছনের দিনগুলোর স্বাক্ষর দেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক বিষয়টি স্বীকার করে বলেন- এরআগে সহকারী শিক্ষক মোঃ শামীম আহমেদ এ ধরনের কাজ কয়েক বার করেছে, তাকে অসংখ্যবার বুঝিয়ে বলেছি কিন্তু সে আমার কথা ঠিক মতো শোনে না।
কিন্তু সাংবাদিকরা সংবাদ সংগ্রহ করে আসার সময় হঠাৎ করেই প্রধান শিক্ষক সাংবাদিকদের কাছে এসে দুই চোখের পানি ছেড়ে দিয়ে অশ্রু ভেজা কন্ঠে বলেন, আমি তাকে অসংখ্যবার বোঝানোর চেষ্টা করেছি, সে আমার কথা সে বোঝেনা, আমি কি করবো বলেন।
সহকারী শিক্ষক মোঃ শামীম আহমেদের বিষয়ে এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের কাছে জানতে চাইলে তারা বলেন- মোঃ শামীম স্যার মাসের ভিতরে ৬ থেকে ৭ দিন স্কুলে আসে বাকি দিনগুলোতে আমরা কখনো স্কুলে আসতে দেখি না। আমরা বিষয়টি প্রধান শিক্ষকের কাছে কয়েকবার বলেছি। তিনি এ বিষয়ে কোন ব্যবস্থা নেয় না।
সকল বিষয়ে পটুয়াখালী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ মোল্লা বক্তিয়ার রহমানের কাছে মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন- আমার কাছে এখন পর্যন্ত কোন অভিযোগ আসেনি, অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইন অনুব্য ব্যবস্থা নিব।’