বরিশালে জমি কিনে বিপাকে পড়েছেন ৪ সহোদর

এ.এ.এম হৃদয় | ২১:৪৯, জুলাই ১৬ ২০২৪ মিনিট

নিজস্ব প্রতিবেদক : বরিশাল সদর উপজেলার শায়েস্তাবাদ ইউনিয়নের পিতম্বরকাঠি গ্রামে জমি কিনে বিপাকে পড়েছেন ৪ ভাই। মৃত আমজাদ হোসেনের ক্রয় করা ৬ একর ২৯. ৫০ শতাংশ সম্পত্তি তার মৃত্যুর পর ছেলে সাাজ্জাদ হোসেন বিক্রি করে মহিউদ্দিন সিকদার গংকে বুঝিয়ে দিয়ে আমেরিকা চলে যান। এদিকে সেই জমিতে ললুপ দৃষ্টি দেন মৃত আমজাদ হোসেনের ভাগিনা আমিনুল, জহিরুল, ভাগ্নি জামাই আবুল হোসেন ও তার ছেলে সাজ্জাদ। সেই জমিতে চাষাবাদে বিভিন্নভাবে বাঁধা দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি তাদের ফাঁসাতে আদালতে দুটি মামলা ও কাউনিয়া থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। এতে করে জমি দখলে থাকলেও ভোগ করতে পারছে না ভুক্তভোগীরা। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়ভাবে ও থানা পুলিশের মাধ্যমে একাধিকবার সালিশ বৈঠক করা হলেও কোন সিদ্ধান্তই মানতে নারাজ আমিনুল গংরা। ভুক্তভোগীরা হলেন- শায়েস্তাবাদ ইউনিয়নের পিতম্বরকাঠি গ্রামের মৃত লেফাজ উদ্দিন সিকদারের মহিউদ্দিন সিকদার, প্রবাসী মোঃ মোজাম্মেল হক, প্রবাসী মোশারেফ সিকদার ও ফেরদাউস আহমেদ। অভিযুক্তরা হলেন- একই গ্রামের মৃত সেকান্দা আলী হাওলাদারের ছেলে আমিনুল ইসলাম, মৃত বেলায়েত হোসেনের জহিরুল ইসলাম স্বপন, আমিনুলের ভগ্নিপতি আবুল হোসেন ও তার ছেলে সাজ্জাদ হোসেন প্রিন্স। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ- মৃত আমজাদ হোসেনের ক্রয়কৃত পিতম্বরকাঠি মৌজার ৮৭ নং জেএলের বিএস ২৯৫ নং খতিয়ানের ১৭৫, ২০১, ১৩৫, ২০৩, ২৬২, ১৯৮, ১৯৯, ১৭৪ ও ২০০ নং দাগের ৫ একর ৫৬ শতাংশ ও উত্তর রামকাঠি মৌজার ৮৪ নং জেএলের বিএস ৭২১ নং খতিয়ানের ৪৯ ও ৭৬ দাগের ৭৩.৫০ শতাংশ মোট ৬ একর ২৯.৫০ শতাংশ সম্পত্তির পৈত্রিক সূত্রে মালিকানা পেয়ে মহিউদ্দিন সিকদার গংদের কাছে বিক্রি করেন। এরপর এ সকল দাগের জমি মহিউদ্দিন সিকদার গংদের বুঝিয়ে দিয়ে আমেরিকা চলে যান সাজ্জাদ হোসেন। আগে থেকেই মামার জমিতে ললুপ দৃষ্টি ছিল মৃত আমজাদ হোসেনের ভাগিনা আমিনুল, জহিরুল, ভাগ্নি জামাই আবুল হোসেনের। এমনকি সেই জমিতে বর্গা চাষাবাদ করতো আমিনুল গং। তাদের জমি না দিয়ে সকল সম্পত্তি বিক্রি করে দেয়ায় বিপাকে পড়েন আমিনুল গং। এদিকে তারা দিশেহারা হয়ে মহিউদ্দিন সিকদার গংকে জমি ভোগ করতে নানাভাবে বাঁধা দিতে শুরু করেন। কখনো জমিতে সাইনবোর্ড লাগিয়ে, কখনো চাষাবাদে বাঁধা দিয়ে, আবার খুন-জখমের হুমকি দিয়ে অথবা আদালতে মামলা ও থানায় অভিযোগ দিয়ে। এরই ধারাবাহিকতায় মহিউদ্দিন সিকদার গংকে ফাঁসাতে আদালতে ‘অগ্রক্রয়াধিকার’ (প্রিয়াংশন) মামলা করেন। যার নং (৩০/২০২৪)। অন্যদিকে আমিনুল গং নিজেদের ঘর ভেঙে প্রতিপক্ষ মহিউদ্দিন সিকদার গংকে কুপকাত করতে আরেকটি মামলা দায়ের করেন। (যার নং-৭৫/২০২৪)। ফলে টাকা দিয়ে জমি ক্রয় করেও ভোগ করতে পারছে না ভুক্তভোগীরা। মহিউদ্দিন সিকদার গংদের মধ্যে মোঃ মোজাম্মেল হক ও মোশারেফ সিকদার সৌদি প্রবাসী। তারা প্রবাসে থেকে কষ্টের অর্জিত টাকা দিয়ে ৪ ভাই মিলে জমিটি ক্রয় করেন। আমিনুল গংদের কার্যক্রমে তারাও দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন। তারা নিজের ক্রয়কৃত জমি নির্ভেজাল ভাবে ভোগ দখল করতে ও আমিনুল গংদের হয়রানির হাত থেকে রক্ষা পেতে প্রশাসেনর উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। আমিনুলের দাবি- আমরা ছোট বেলা থেকেই মামা বাড়িতে থেকে তাদের জমিতে বর্গা চাষাবাদ করে আসছি। এটা আমার মামা আমজাদের ক্রয় করা সম্পত্তি সেটা আমি মানি। আমরা এতো বছর এই জমিতে বর্গা চাষাবাদ করেছি। আমাদের না জানিয়ে আমার মামাতো ভাই সাজ্জাদ সেই জমি অন্যত্র বিক্রি করেছে। আমাদের জানালে আমরাও কিছু জমি কিনতাম। আপনারা উল্লেখিত দাগে জমি পাবেন কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন- না আমরা জমি পাবো না, কিন্তু মামা আমাদের সাথে বেইমানি করেছে আমাদের কথা একবারও ভাবেনি। অথচ আমিনুল গং মাধ্যম হয়ে তার মামাদের অসংখ্য জমি বিভিন্ন ক্রেতার কাছে বিক্রি করিয়ে দিয়েছেন। এই জমিটি বিক্রির বিষয়েও তিনি সবই জানতেন বলে দাবি করেছেন সাাজ্জাদ হোসেন। মহিউদ্দিন সিকদার গং বলেন- আমরা টাকা দিয়ে জমি কিনেছি। কেনার পরে আমাদের জমি বুঝিয়ে দিয়েছে। কিন্তু আমিনুল গং অহেতুক জমি দাবি করে আমাদের বিপাকে ফেলেছে। তারা জমি পেলে সেটা তার ছোট মামার সাথে বুঝবে। আমাদের হয়রানি করার কোন মানে নাই।’’