বরিশালে বাবা-ছেলের সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি ‍সার্ভে ও রেজিস্ট্রেশন নৌযান মালিকরা

এ.এ.এম হৃদয় | ২১:০৬, জুলাই ১৬ ২০২৪ মিনিট

বরিশাল আঞ্চলিক অভ্যন্তরীণ নৌযানের সার্ভে ফিটনেস ও নিবন্ধনে চলছে ব্যাপক অনিয়ম। বলা চলে বরিশালে নৌযানের সার্ভে এবং রেজিস্ট্রেশন অফিসে বাপ ছেলের কাছে জিম্মি ও অসহায় ছোট নৌযান মালিকরা। বরিশালে নৌযানের সার্ভে ও রেজিস্ট্রেশন অফিসে পুরাতন নৌযান রেজিস্ট্রেশন করতে হলে বরিশালের সার্ভে অফিসের প্রধান অফিস সহকারী ইদ্রিস ও তার ছেলে রাহাত মিলে এক প্রকার জিম্মি ও অসহায় করে নৌযান মালিকদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। বরিশালের নৌযান ও সার্ভে অফিস এমন জায়গায় যেইখানে নেই কোন সচেতন মানুষের আসা-যাওয়া তারই সুবাদে ইদ্রিসের নেতৃত্বে গড়ে তুলেছেন বিশাল এক সিন্ডিকেট যার মাধ্যমে বরিশাল বিভাগ থেকে সার্ভে ও রেজিস্ট্রেশনের নামে বছরে হাতিয়ে নেন প্রায় কয়েক কোটি টাকা। ছদ্মবেশে ইদ্রিসের অনিয়ম দুর্নীতির অনুসন্ধানের জন্য সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় অফিসে বসেই অবাধে ঘুষের টাকা নেওয়ার দৃশ্য যা রীতিমতো অবাক করে দেয় অনুসন্ধানকারীদের কেই। ইদ্রিসের ঘুষের টাকা কম হওয়ায় টাকা ফেরত দিয়ে তার টেবিলের ফাইলের উপরে রেখে দেন তিনি। ইদ্রিসের দাবি আরো বেশী টাকা তা না হলে কাজ না করে দেওয়ার হুমকি প্রকাশ্যেই কারণ তার সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত তার উর্ধতন কতৃপক্ষ সিরাজুল ইসলাম। সিরাজের যোগ সাজসে এমন কাজ করে আসছে বলে ভুক্তভোগীদের অভিযোগ সূত্রে জানা যায়। আত্মবিশ্বাস নিয়ে ইদ্রিস সেবা নিতে আসা ভুক্তভোগীদের কে জানিয়ে দেন উর্ধতন কতৃপক্ষ কাছে অভিযোগ আর সমাধান চাইলে তাতে কোন কাজ হবে না আমার কাছেই আসতে হবে আমার কাজের ব্যাপারে স্যারেরা সব কিছু জানেন। বরিশালে নৌযানের সার্ভে ও রেজিস্ট্রেশন অফিসে নৌযান নবায়ন করতে আসলে ইদ্রিস সিন্ডিকেট করে তার ছেলে রাহাত ছাড়া অন্য কেউ অনলাইনে আবেদন করলে তা গ্রহন যোগ্য হবে না জানান সেবা নিতে আশা ভুক্তভোগীদের কে। অনুসন্ধানে সরজমিনে আরো দেখা যায় ইদ্রিসের ছেলে বারবারি তার বাবার অফিসে আসে বিভিন্ন অনলাইনের আবেদনের কাজ নিতে এবং অনেকের সাথে ইদ্রিসের ছেলে টাকা পয়সা লেনদেনের আলাপ-আলোচনা করে নবায়নের জন্য বাড়তি টাকা নিয়ে নেন। ছদ্দবেশী অনুসন্ধানকারীদের কাছে ইদ্রিসের ভাষ্য হলো আমার ছেলে ছাড়া এই আবেদন আর কেউ করতে পারে না আমার ছেলে আবেদন না করলে সার্ভে ও নবায়ন রেজিস্ট্রেশন ও হবে না এই দপ্তর থেকে। তারই বাস্তবতার জন্য অনুসন্ধানকারীরা যায় ইদ্রিসের ছেলের দোকানে দোকানে যাওয়ার পরে ঠিকই একই ভাষ্য ইদ্রিসের ছেলের আমি ছাড়া এই আবেদন বরিশালে আর কেউ করতে পারে না ইদ্রিসের ছেলে একটি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় ল এর ইংলিশ মিডিয়ামের ছাত্র তিনি তার ইউনিভার্সিটি ক্লাস ও লেখাপড়া বাদ দিয়ে কেন এখানেই আবেদন করেন জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিকদের উপর ক্ষেপে উঠে দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়ে তাদেরকে উল্টো ভিডিও করতে থাকেন। এ যেন চোরের মায়ের বড় গলা। ইদ্রিসের ছেলে একটি প্রাইভেট ইউনিভার্সিটির ছাত্র হওয়া পরেও তাকে দোকান করে দিয়েছে বান্দ রোডে যার পজিশন প্রায় পাঁচ লাখ টাকার উপরে দোকান ভাড়া গুনতে হয় মাসে ৮ থেকে ৯ হাজার টাকা কিন্তু দোকানের মধ্যে শুধুই একটা কম্পিউটার প্রিন্টার্স ছাড়া আর কিছু দেখতে পাওয়া যায় নাই যাবিইবা কেন ওখানে বসেই তো হয় ইদ্রিসের ঘুষের টাকার অধিকাংশ লেনদেন।এটা হল ইদ্রিসের লোক দেখানো নামে মাত্র ছেলের নামে একটি দোকান নেওয়া । অনিয়ম দুর্নীতি করে বরিশালে নৌযানের সার্ভে ও রেজিস্ট্রেশন অফিসের ইদ্রিস অবৈধ ভাবে ঘুষ বাণিজ্যের মাধ্যমে আয় করেছেন কোটি কোটি টাকার অঢেল সম্পদ। বরিশাল ও ঢাকায় নামে বেনামে গড়েছেন সম্পদ যার অনুসন্ধান চলমান। ইদ্রিসের এলাকার কতিপয় লোকেরা বলেন প্রশ্ন ফাঁসে কেলেঙ্কারির সাথে জড়িত আবেদ আলীর ছেলের মতই ইদ্রিস আলীর ছেলের চলাফেরা। তারা আরো বলেন দুদক অনুসন্ধান করলেই আসল থলের বিড়াল বেড়িয়ে আসবে জনগণের সামনে। ইদ্রিস কাছে আসা নৌযান মালিকদের জিম্মি করে অনলাইনে কাজ করার জন্য পাঠিয়ে দেওয়া হয় তার ছেলে রাহাতের দোকানে রাহাত বান্দ রোড স্টীমার ঘাট মসজিদ সংলগ্ন একটি দোকান ভাড়া নিয়ে অনলাইনের কাজ করছেন।আর অনলাইনে কাজ করার ফি নির্ধারণ করে দেন ইদ্রিস নিজেই। ইদ্রিসের অফিসের মোটা অংকের ধার্যকৃত টাকা না দিলে মিলে না লাইসেন্সের নবায়ন।এমনই তথ্য পাওয়া গিয়েছে সরজমিনে গিয়ে। বরিশালে নৌযানের সার্ভে ও রেজিস্ট্রেশন অফিসে দেখা যায় একজন লাইসেন্স নবায়ন করতে আসলে তাকে তার লাইসেন্স নবাবয়ন করার জন্য অতিরিক্ত টাকাসহ তার ছেলে রাহাতের সাথে যোগাযোগ করতে বলা হয়।কেউ সুপারিশ করলে অথবা অতিরিক্ত টাকা না দিলে তাকে দেওয়া হয় তার নৌযান বন্ধ করে দেয়ার হুমকি। ভোলা থেকে বরিশালে সার্ভে ও রেজিস্ট্রেশন নবায়ন করতে আসা মীর হাবিবুল্লাহ (হা-মীম লঞ্চের স্বত্বঅধিকারী) অভিযোগ করে বলেন আমরা ছোট লঞ্চ ও ট্রলার নবায়ন করতে এসে একপ্রকার ইদ্রিস ও তার ছেলে রাহাতের কাছে অসহায় হয়ে পড়েছি। আমাদের নৌযান নবায়ন করতে আসলে তার ছেলেকে দিয়ে অনলাইন আবেদন না করলে সেই কাগজ কোন গ্রহণযোগ্য হবে না বলে ইদ্রিস ও তার অফিসের লোকজন জানান। ইদ্রিসের ছেলে হাতের কাছে অনলাইন আবেদন করলে তাকে দিতে হবে মোট অংকের অতিরিক্ত ফি। তিনি বলেন আমি নগদ টাকা দিয়েছি তাতে কম হয়েছে তাই সে টাকা ফেরত দিয়ে তার টেবিলের উপরে রেখে দিয়েছে ।তখন তার কথামতো গিয়ে দেখা যায় ইদ্রিসের টেবিলের উপর এক হাজার টাকার অনেকগুলো নোট। মীর হাবিবুল্লাহ জানান তাদের ইচ্ছে মত কাজ না করলে আমাদের লাইসেন্স বাতিল করে দিবে। উক্ত সব ঘটনার ভিডিও রেকর্ড অনুসন্ধানকারীদের সংরক্ষণে আছে। ইদ্রিসের ও তার ছেলের অনিয়ম দুর্নীতির বিষয়ে আরেক ব্যক্তি নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তিনি জানান আমি আমার সকল প্রকার কাগজ পত্র দিয়ে নিজের নামে আইডি করে নিতে চাইলে তা না করে দিয়ে তাদের মনের মত লোকের নামে আইডি খুলে দিয়ে আমাদের হয়রানি করে। আর অতিরিক্ত টাকা না দিলে সার্ভে ও রেজিস্ট্রেশন করবে না বলে সাব জানিয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেন আমরা এক প্রকার অসহায় ও জিম্মি হয়ে পরেছি বরিশালে নৌযানের সার্ভে ও রেজিস্ট্রেশন আঞ্চলিক অফিসের কাছে। আমরা অসহায় আমাদের দেখার মত কেউ নাই। এবিষয়ে জানতে বরিশালে নৌযানের সার্ভে ও রেজিস্ট্রেশন অফিসের ইদ্রিসের কাছে ফোনে করলে তিনিনজানান আপনি আমার অফিসে আসেন আমি ফোনে এর চেয়ে বেশি আর কিছু বলতে পারব না বলে ফোনের লাইন কেটে দেন। উপরোক্ত অনিয়ম দুর্নীতি ও ঘুষ বাণিজ্যের বিষয় জানার জন্য বরিশালের আঞ্চলিক নৌযান সার্ভে ও রেজিস্ট্রেশন অফিসের সিরাজুল ইসলামকে বারবার মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে তার মোবাইল নাম্বারের হোয়াটসঅ্যাপে ক্ষুদে বার্তা পাঠালে তার কোন উত্তর দেওয়নি তিনি। বরিশাল আঞ্চলিক নৌযান সার্ভে ও রেজিস্ট্রেশন অফিসের সকল অনিয়ম দুর্নীতির বিষয় নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের উক্ত বিভাগের মহা-পরিচালক কমডোর মো: মাকসুদ আলম এর সাথে মুঠোফোন কথা বললে তিনি জানান আমরা দুর্নীতির ব্যাপারে জিরো টলারেন্স আপনার কাছে যেসব তথ্য আছে দ্রুত আমাকে হোয়াটসঅ্যাপ করেন আমি দুর্নীতিবাজ যে হোক না কেন তার বিরুদ্ধে অবশ্যই যথাযথ ব্যবস্থা নেব ।