পটুয়াখালী মহিলা আ. লীগের সাধারণ সম্পাদক বেবী গ্রেপ্তার

এ.এ.এম হৃদয় | ১৯:২২, জুলাই ১০ ২০২৪ মিনিট

নিজস্ব প্রতিবেদক  : ৯ কোটি টাকার ব্যাংক ঋণের মামলায় পটুয়াখালী জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাকিয়া সুলতানা বেবীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ বুধবার শহরের ফায়ার সার্ভিস রোড এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জসীম গ্রেপ্তারের বিষয়টি করেছেন। তিনি বলেন, ‘প্রায় ৯ কোটি টাকা ব্যাংক ঋণের মামলায় আদালতের পরোয়ানা থাকায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে তাকে আদালতে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।’ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, ১৯৮৫ সালে পটুয়াখালী বিসিকের একটি টেক্সটাইল কোম্পানির নামে দুই কোটি ২৩ লাখ ২৪ হাজার টাকা ঋণ নেয় জাকিয়া সুলতানার বেবীর স্বামী মো. সিরাজুল ইসলাম। প্রতিষ্ঠানটির ৭৫ ভাগ শেয়ার স্বামী সিরাজুল এবং ২৫ ভাগ শেয়ার স্ত্রী জাকিয়ার নামে দেখানো হয়। স্বামীর মৃত্যুর পর প্রতিষ্ঠানটির শতভাগ শেয়ারের মালিক হন জাকিয়া সুলতানা বেবী। টেক্সটাইলটি মাস দু-এক চালু থাকার পর পরবর্তীতে বন্ধ হয়ে যায়। ১৯৮৫ থেকে ১৯৯৪ সাল পর্যন্ত ব্যাংকের বকেয়া ঋণের পরিমাণ দাঁড়ায় ৮ কোটি ৩৮ লাখ ৭২ হাজার টাকা। এরপর ঋণের অর্থ পরিশোধ না করায় ব্যাংক ম্যানেজার বাদী হয়ে ২০০৪ সালে পটুয়াখালী অর্থ ঋণ আদালতে জাকিয়া সুলতানা বেবীকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন। আরও জানা যায়, ব্যাংকের মূল টাকা আদায়ের জন্য ১৯৯৪ সালের ৯ এপ্রিল, ২০১১ সালের ২৭ জুলাই এবং ২০২২ সালের ১২ জানুয়ারি শতভাগ সুদ মওকুফ অনুমোদন দেয় ব্যাংক পরিচালনা পর্ষদ। এতে সর্বশেষ মওকুফ সুবিধায় তিন কোটি ১৪ লাখ ৭৫ হাজার টাকা পরিশোধযোগ্য ধার্য করে এবং ৬ বছরে ৭২টি কিস্তির সুবিধা দেওয়া হয় তাকে। কিন্তু জাকিয়া সুলতানা বেবী এ সুবিধা গ্রহণ না করে উল্টো ব্যাংক কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনেন এবং পরোয়ানা থানা সত্ত্বেও তিনি ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের প্রভাব খাঁটিয়ে বীরদর্পে ঘুরে বেড়ান। এ বিষয়ে ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপক জিল্লুর রহমান বলেন, ‘১৯৯৪ সাল পর্যন্ত সুদে-আসলে বর্তমান লেজার স্থিতি অনুযায়ী এ পর্যন্ত সুদ মওকুফের পর জাকিয়া সুলতানা বেবির আবেদনের প্রেক্ষিতে তাঁর কাছে ব্যাংকের বকেয়া পাওনা হয়েছে প্রায় নয় কোটি টাকা। ২০২৩ সালের ২১ নভেম্বর ঋণ গ্রহীতার বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট আদালত থেকে পরোয়ানা জারি হয়।’ তিনি আরও বলেন, ‘গত মে মাসে জাকিয়া সুলতানা বেবী ১৯ লাখ টাকা ব্যাংকে জমা দিয়েছিলেন। ২০২২ সালের ১২ জানুয়ারি সোনালী ব্যাংক কেন্দ্রীয় পরিচালনা পর্ষদের কাছে সুদ মওকুফের আবেদনের প্রেক্ষিতে বোর্ড সভায় ৩ কোটি ১৪ লাখ ৭৫ হাজার টাকা পরিশোধ করার সিদ্ধান্ত দেয়। কিন্তু সে সিদ্ধান্ত না মেনে বেবি প্রতিনিয়ত খেলাপি তালিকার শীর্ষ ওঠেন। পরবর্তীতে ব্যাংকের হস্তক্ষেপে বুধবার জাকিয়াকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।’