লালমোহনে বেড়েছে সাপের উপদ্রব, হাসপাতালে ভর্তি ৬ জন

আল-আমিন | ২২:১৯, জুলাই ০৮ ২০২৪ মিনিট

নিজস্ব প্রতিবেদক : ভোলার লালমোহন উপজেলায় হঠাৎ করেই বেড়েছে সাপের উপদ্রব। বিভিন্ন প্রজাতির সাপের কামড়ে রোববার দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত দুই শিশুসহ মোট ৬ জন লালমোহন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে চিকিৎসকের পর্যবেক্ষণে ছিলেন। বিষাক্ত সাপে না কামড়ানোয় এরমধ্যে দুইজন ওইদিন সন্ধ্যায়ই জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে বিদায় নেন। তবে বাকি চারজন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি থেকে ২৪ ঘণ্টা চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষণে ছিলেন। বিষধর সাপে না কামড়ানোয় তাদেরকেও প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে সোমবার সকালে ছাড় দেন কর্তব্যরত চিকিৎসক। লালমোহন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, সাপে কামড়ানোর পর রোববার দুপুরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়েছেন ৫০ বছর বয়সী বিবি জান। তিনি উপজেলার বদরপুর ইউনিয়নের নাজিরপুর এলাকার মৃত ইয়াছিন বেপারির স্ত্রী। একই এলাকা থেকে সন্ধ্যায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়েছেন মোসা. সুরমা বেগম নামে এক তরুণী। এছাড়া কালমা ইউনিয়ন থেকে সাপের কামড়ে আক্রান্ত হয়ে আড়াই বছর বয়সী তাওহীদ এবং মো. মোস্তফা নামে এক বৃদ্ধ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যান। অন্যদিকে সাপে কামড় দেওয়ায় পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ওয়েস্টার্ণপাড়া এলাকা থেকে ১৪ বছর বয়সী নাদিয়া এবং পশ্চিম চরউমেদ ইউনিয়নের পশ্চিম চরউমেদ এলাকা থেকে ৮ বছর বয়সী মো. আব্দুল্যাহকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হয়। শিশু আব্দুল্যাহর বাবা মো. ফজলুর রহমান বলেন, আমার ছেলে তার নানা বাড়িতে ছিল। বিকেলের দিকে বাড়ির উঠানে খেলার সময় তাকে একটি সাপের বাচ্চা কামড় দেয়। বিষয়টি আমাদের জানানোর পর তাৎক্ষণিক সাপটিকে দেখে নিশ্চিত হয়ে আব্দুল্যাহকে লালমোহন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাই। সেখানে নেয়ার পর কয়েক ঘণ্টা চিকিৎসক তাকে পর্যবেক্ষণে রাখেন। যখন কর্তব্যরত চিকিৎসক নিশ্চিত হন; আব্দুল্যাহকে কামড়ানো সাপটি বিষধর নয়, তখন তাকে ছাড় দেওয়া হয়। এরপর আমরা আব্দুল্যাহকে নিয়ে বাড়িতে চলে যাই। এখন আমার ছেলে সুস্থ আছে। অন্যদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এরইমধ্যে লালমোহন উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বিষাক্ত রাসেলস ভাইপার সাপেরও দেখা মিলেছে। বিষাক্ত রাসেলস ভাইপার সাপের দেখা মেলা এলাকার মধ্যে রয়েছে- উপজেলার লর্ডহার্ডিঞ্জ ইউনিয়নের মাদরাসা বাজার, মোতাহারনগর ইউনিয়নের বিচ্ছিন্ন চর কচুয়াখালী, ধলীগৌরনগর ইউনিয়নের বাতিরখাল মৎস্যঘাট এবং লালমোহন পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ড। এসব স্থানে দেখা মেলা রাসেলস ভাইপার সাপগুলোকে আতঙ্কিত হয়ে স্থানীয়রা পিটিয়ে মেরে ফেলেন। লালমোহন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. মো. মহসিন খান বলেন, সাপের কামড়ে আক্রান্ত হয়ে কয়েকজন রোগী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এসেছিলেন। তাদের আমরা পর্যবেক্ষণে রেখেছি। তবে ২৪ ঘণ্টার মধ্যেও তাদের শরীরে কোনো বিষক্রিয়া দেখা না যাওয়ায় সোমবার সকালে তাদেরকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে ছাড় দেওয়া হয়েছে। এই স্বাস্থ্য কর্মকর্তা আরো বলেন, কোনো ব্যক্তিকে সাপে কামড়ালে গ্রাম্য ওঝা বা কবিরাজের কাছে গিয়ে সময় নষ্ট করা যাবে না। ওঝা বা কবিরাজের কাছে গিয়ে সময় নষ্ট করলে সাপে কামড়ানো রোগীর প্রাণহানীর আশঙ্কা অনেকাংশে বৃদ্ধি পায়। তাই যত দ্রুত সম্ভব সাপে কামড়ানো রোগীকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসতে হবে। আমাদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পর্যাপ্ত অ্যান্টিভেনম রয়েছে।