ভারতে ধর্মীয় সমাবেশে পদদলিত হয়ে মৃত্যু বেড়ে ১২১/ গ্রেপ্তার হতে পারেন ভোলে বাবা

দেশ জনপদ ডেস্ক | ২২:১৩, জুলাই ০৩ ২০২৪ মিনিট

নিজস্ব প্রতিবেদক : ভারতের উত্তরপ্রদেশে একটি ধর্মীয় সমাবেশে পদদলিত হওয়ার ঘটনায় মৃত্যু বেড়ে ১২১ জনে দাঁড়িয়েছে। স্থানীয় প্রশাসনের বরাতে বুধবার (৩ জুলাই) সকালের সর্বশেষ প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে এনডিটিভি। নিহতদের মধ্যে নারীর সংখ্যাই শতাধিক এবং সাত শিশু রয়েছে। এ ছাড়া আরও ২৮ জন আহতাবস্থায় চিকিৎসাধীন। তাদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। এর আগে মঙ্গলবার (২ জুলাই) উত্তরপ্রদেশের হাথরাসে ভোলে বাবার সৎসঙ্গে মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটে। সেখানে পদপিষ্ট হয়ে অসংখ্য মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমেছে গোটা দেশে। ঘটনাস্থলে রাজ্যের জ্যেষ্ঠ পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তারা কাজ করছেন। এদিকে যেকোনো সময় ভোলে বাবা গ্রেপ্তার হতে পারেন বলে গুঞ্জন উঠেছে। উত্তেজনা এড়াতে হাথরাসে কঠোর অবস্থানে আছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। পাশাপাশি ভোলে বাবার আশ্রম রাম কুটির প্রাঙ্গণে বিপুল পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। জানা গেছে, সৎসঙ্গে যোগ দিতে ভোলে বাবার ভক্ত সেখানে জড়ো হন। তারা ভোলে বাবার পায়ের ধুলো ও আশীর্বাদ নিতে উদগ্রিব হয়ে উঠেন। পেছনের কাতারের ভক্তরা মঞ্চের কাছাকাছি যেতে ছোটাছুটি শুরু করেন। এতে সৃষ্ট বিশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। পুলিশ জানিয়েছে, হাথরাসে সৎসঙ্গ আয়োজকদের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলার অভিযোগপত্র অনুসারে, সেখানে ৮০ হাজার জনের জন্য অনুমতি দেওয়া হয়েছিল কিন্তু আড়াই লাখেরও বেশি ভক্ত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। আরও বলা হয়, অনিয়ন্ত্রিত ভক্তরা দ্রুত অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করার চেষ্টার কারণে মাটিতে বসে থাকা ভক্তরা পিষ্ট হয়ে যায়। অপরদিকে রাস্তার অপর পাশে পানি ও কাদা ভরা মাঠের ভিড়কে আয়োজক কমিটি জোর করে থামিয়ে দেয়। এতে ভিড়ের চাপ আরও বাড়তে থাকে এবং নারী, শিশু ও পুরুষরা পিষ্ট হতে থাকে। এ সময় উপস্থিত পুলিশ ও প্রশাসনিক কর্মকর্তারা যথাসম্ভব দুর্ঘটনার মাত্রা কমানোর চেষ্টা করেছিলেন। তারা আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠান। কিন্তু আয়োজকরা এ ব্যাপারে কোনো সহযোগিতা করেনি। এ ঘটনায় উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ দুঃখ প্রকাশ করেছেন এবং ঘটনার তদন্তে একটি কমিটি গঠন করার নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি এ ব্যাপারে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানান। এ ছাড়া মৃতদের পরিবারকে দুই লাখ টাকা এবং আহতদের চিকিৎসার জন্য ৫০ হাজার টাকা করে ক্ষতিপূরণের ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। নিহত ও তাদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করেছেন ভারতের প্রেসিডেন্ট দ্রৌপদী মুর্মুও। তেমনি হাথরাসের ঘটনায় শোকপ্রকাশ করেছেন মোদী। তিনি আহতদের চিকিৎসায় সব রকম সাহায্যের আশ্বাস দিয়ে বলেন, প্রশাসন উদ্ধারকাজ করছে। এ ঘটনায় তিনি শোকাহত। তবে এই পরিস্থিতির জন্য ভোলে বাবাকে দায়ী করতে নারাজ খোদ ভুক্তভোগীরা। ভারতের সংবাদমাধ্যম সংবাদ প্রতিদিনে পদপিষ্ট হয়ে মারা যাওয়া কারপুরী চান্দের পরিবারের এক সদস্যকের বক্তব্য প্রকাশ করা হয়। সেখানে তিনি বলেন, ‘যেখানে মহিলারা বসেছিলেন সেখানেই দুর্ঘটনা ঘটেছে। আমিও ওখানে ছিলাম। তদন্ত করে দেখা হোক এর জন্য কে দায়ী। কিন্তু আমি মনে করি না এতে বাবার কোনো দোষ আছে।’