বরিশালে স্কুলছাত্রকে হ*ত্যার পর মেঘনা নদীতে লা*শ ভাসিয়ে দেয় বন্ধুরা

এ.এ.এম হৃদয় | ২২:১৬, জুলাই ০২ ২০২৪ মিনিট

নিজস্ব প্রতিবেদক : বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জের জাঙ্গালিয়া ইউনিয়নে শুভ খন্দকার (১৪) নামে এক স্কুলছাত্রকে হত্যার পর তার লাশ মেঘনা নদীতে ভাসিয়ে দেয় বন্ধুরা। নিখোঁজের এক মাস পর সোমবার ( ১ জুলাই) জিজ্ঞাসাবাদের জন্য চার বন্ধুকে আটক করে পুলিশ। পরে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা এ স্বীকারোক্তি দেয়। আটকদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায়, শুভ খন্দকার লেঙ্গুটিয়া ৬নং ওয়ার্ডের ইব্রাহিম খন্দকারের ছেলে এবং জাঙ্গালিয়া ইউনিয়নের লেঙ্গুটিয়া মুসলিম স্কুল অ্যান্ড কলেজের নবম শ্রেণির ছাত্র। গত ২ জুন সকালে শুভকে সুকৌশলে ভোলার চরফ্যাশনের বেতুয়া লঞ্চঘাটে নিয়ে রাত ৩টার দিকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে। এরপর মেঘনা নদীতে লাশ ভাসিয়ে দেয় তার বন্ধুরা। জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের বরাতে ওসি বলেন, শুভ খন্দকারকে নদীর পাড়ে নিয়ে মারধর করে ইসমাইল, হাসিব ও আহাদ পরবর্তীতে পানিতে ডুবিয়ে তার মৃত্যু নিশ্চিত করে নদীতে লাশ ভাসিয়ে দেয় সহযোগী ভাঙারি মাইদুল। পর দিন চরফ্যাশন থানা পুলিশ অজ্ঞাত পরিচয়ে লাশটি উদ্ধার করে পোস্ট-মর্ডান শেষে দাফন করেন বলে জানান মেহেন্দিগঞ্জ থানার ওসি ইয়াছিনুল হক। তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয় পুলিশ। নিহত শুভ খন্দকার (১৪) উপজেলার জাঙ্গালিয়া ইউনিয়নের লেঙ্গুটিয়া গ্রামের ইব্রাহিম খন্দকারের ছেলে। সে লেঙ্গুটিয়া মুসলিম স্কুল অ্যান্ড কলেজের নবম শ্রেণির ছাত্র। আটক ১৫ বছর বয়সী কিশোর আহাদ চৌকিদার একই ইউনিয়নের জুয়েল চৌকিদারের ছেলে। অপর অভিযুক্তরা হলেন, মেহেন্দিগঞ্জ পৌরসভার কালিকাপুর ওয়ার্ডের বাদল পালোয়ানের ছেলে ইসমাইল, অম্বিকাপুর ওয়ার্ডের বাছেদ রাঢ়ির ছেলে হাসিব, উত্তর উলানিয়া ইউনিয়নের আ. মজিদ রাঢ়ির ছেলে জাঙ্গালিয়া ইউনিয়নের লেঙ্গুটিয়া বাজারের ভাঙারি মালের ব্যবসায়ী মাইদুল ইসলাম। নিহতের পিতা ইব্রাহিম খন্দকার জানান, গত ২ জুন তার ছেলে শুভ খন্দকার বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরতে গিয়ে নিখোঁজ হয়। খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে ঘটনার এক সপ্তাহ পর ৯ জুন তিনি মেহেন্দিগঞ্জ থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। এরপর তদন্ত শুরু করে পুলিশ। কয়েক দিনের মধ্যেই ঘটনার রোমহর্ষক রহস্য উদঘাটন করেন পুলিশ। পরে অভিযোগের ভিত্তিতে সোমবার নিহতের বন্ধু আহাদ চৌকিদার, ইসমাইল, ভাঙারি মাইদুল ইসলাম ও হাসিবকে আটক করা হয়। এ ঘটনায় আরও কেউ জড়িত ছিল কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানান ওসি। পুলিশ বলছে মোটরসাইকেল কেলেঙ্কারি নিয়ে শুভকে হত্যা করা হয়েছে আর পরিবার বলছে প্রেম সংগঠিত ঘটনায় হত্যা করা হয়েছে। নিহতের মা আয়েশা বেগম বলেন, আমার ছেলেকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। আমি এর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই। অভিযুক্ত আহাদ চৌকিদারের পিতা জুয়েল চৌকিদার বলেন, তার ছেলে ওদের সঙ্গে ভোলা পর্যন্ত গিয়েছিল, কিন্তু সে চরফ্যাশন যায়নি এবং হত্যার সঙ্গে সম্পৃক্ততা নেই। স্থানীয়রা জানান, শুভ নিখোঁজ ছিলেন না, পরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যা করা হয়েছিল। হত্যার পর তার লাশ নদীতে ভাসিয়ে দেওয়া হয়। হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তার বাবা ইব্রাহিম বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। জানা গেছে, গ্রেপ্তারদের মধ্যে দুজন অপ্রাপ্ত বয়স্ক। গ্রেপ্তার দুজনকে আদালতে তোলে পুলিশ। বিচারক তাদের কারাগারে পাঠান। ইসমাইল আদালতে দোষ স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিও দিয়েছেন। এদের মধ্যে মাইদুল ইসলামের ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। আলামত হিসেবে মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়।