সন্ত্রাসে ওষ্ঠাগত উত্তর আমানতগঞ্জবাসী মুক্তি চায়, প্রতিমন্ত্রী-মেয়রের হস্তক্ষেপ কামনা

আল-আমিন | ১৯:৪২, জুন ২৪ ২০২৪ মিনিট

নিজস্ব প্রতিবেদক : উত্তর আমানতগঞ্জের বিএনপি নেতা মিরাজ সিকদারসহ তার গোটা বাহিনীকে শায়েস্তা করতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে এলাকাবাসী। শনিবার সাংবাদিক হাসিবুল ইসলামের ভাইদের মারধর এবং কুপিয়ে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় স্থানীয়রা জোটবদ্ধ হয়েছে। আওয়ামী লীগ নেতা নিরব হোসেন টুটুলের ছত্রছায়ায় থাকা ৯/১০ সন্ত্রাসী এলাকার নিরীহ মানুষকে অত্যাচার নিপীড়ন করাসহ চোরা কারবারি করতে গিয়ে ধারাবাহিক ত্রাস চালাচ্ছে, যার সর্বশেষ শিকার হয়েছেন তারিকুল ইসলাম এবং তার ভাইয়েরা। শনিবার সিকদারপাড়া মসজিদের সম্মুখে তাদের মারধর করাসহ কুপিয়ে জখম করে মিরাজসহ তাদের বাহিনী। প্রতিমন্ত্রী কর্নেল (অবসরপ্রাপ্ত) জাহিদ ফারুক শামীম এবং সিটি মেয়র আবুল খায়ের ওরফে খোকন সেরনিয়বাতের নতুন বরিশালে সাংবাদিকের ভাইদের মারধর করাসহ তাদের কুপিয়ে হত্যাচেষ্টার বিষয়টি অনেকেরই মানতে কষ্ট হচ্ছে। এই ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে শনিবার রাতে মামলা হলেও সোমবার পর্যন্ত কোনো আসামিকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। জানা গেছে, থানায় মামলা ঠেকাতে মিরাজ বিভিন্ন মহল থেকে সুপারিশ রেখেছিল, কিন্তু শীর্ষ পুলিশ কর্মকর্তা জিহাদুল কবিরের কঠোর তদারকির কারণে তাদের মিশন সফল হয়নি। বরং পুলিশ কমিশনারের নির্দেশেই অভিযুক্ত মিরাজসহ সকলকে গ্রেপ্তার করতে তৎপর রয়েছে কোতয়ালি পুলিশ। রোববার রাতভর তাদের গ্রেপ্তারে বাসাবাড়িতে হানা দিয়েছে, কিন্তু ঘটনার পর থেকে এই গুন্ডা বাহিনীটি আত্মগোপনে আছে। বিপরিতে সংক্ষুব্ধ এলাকাবাসী সাংবাদিক পরিবারটিকে ঘিরে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আছে। স্থানীয় সূত্র জানায়, মিরাজ, সেলিম, সাকিন, সবুজ, নয়নসহ ৯/১০জনের বাহিনীটি গত ৫ বছর উত্তর আমানতগঞ্জে ভূমিদস্যুতা, চুরি, ছিনতাইসহ তালতলী মৎস্য বন্দর থেকে রেণুপোনা পাচারের মতো জঘন্য কাজে লিপ্ত। এই কর্মকান্ড চালাতে গিয়ে তারা এলাকার অসংখ্য নিরীহ মানুষের ওপর অত্যাচার চালিয়েছে। তাদের যন্ত্রণায় গত ৫ বছর কোনো ব্যবসায়ী তালতলী বন্দরে শান্তিতে ব্যবসা করতে পারেনি, প্রত্যেকের দিতে হয়েছে চাঁদা। কিন্তু সর্বশেষ সাংবাদিক নেতার ভাইদের মারধর ও হত্যাচেষ্টা ঘটনা যেনো তাদের গলায় কাটা আটকে দিয়েছে। বিশেষ করে মামলাটি কোতয়ালি থানায় হওয়ায় তারা ঘোর আতঙ্কে আছে, এলাকায় ঢুকলে খাবে গণপিটুনি, রয়েছে গ্রেপ্তারের ভীতিও। সব ভাবনা চিন্তা করে মিরাজসহ তাদের সাঙ্গপাঙ্গরা শহরের কোথায় গাঢাকা দিয়েছে। বিস্ময়কর বিষয় হচ্ছে, এমন বাস্তবতার মধ্যেও তারা বিভিন্ন মাধ্যমে একের পর এক খুন জখমের হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। তাছাড়া কাউনিয়া থানা পুলিশকেও যেনো তারা ভাড়া খাটাচ্ছে! মিরাজ বাহিনীর হামলার শিকার স্থানীয় যুবকেরা একত্রিত হলেই কিছুক্ষণের মধ্যে কাউনিয়া থানা পুলিশের একটি টহল গাড়ি সেখানে চলে যায়। এবং ভুক্তভোগীদের হয়রানি করে। থানা পুলিশের ওসি মো. আসাদুজ্জামানের এমন আচারণে সংক্ষুব্ধ উত্তর আমানতগঞ্জবাসী। জানা গেছে, বিএনপি নেতা মিরাজ, সেলিম, সাকিন এবং সবুজদের কাউনিয়া থানায় অবাধ যাতায়াতে মাঠপর্যায়ের অনেক পুলিশ কর্মকর্তা ক্ষুব্ধ-বিরক্ত। কিন্তু ওসির কামাই পুত হওয়ায় কেউ তাদের বিরুদ্ধে মুখ খোলেন না। এলাকাবাসী বলছে, উত্তর আমানতগঞ্জে নোংরা পরিবেশ তৈরি হওয়ার নেপথ্যে ওসি আসাদুজ্জামানে ভূমিকা রয়েছে। মিরাজ, সেলিম, সবুজেরা বিএনপি ঘরনার রাজনৈতিক হয়েও একের পর অপরাধ করে পার পেয়ে যাচ্ছে, তাতে সহযোগিতা করেছেন ওসি। যার দরুণ, এই বাহিনীর ত্রাস দিনেদিনে বৃদ্ধি পাচ্ছে, পরপর দুই সাংবাদিককে প্রকাশ্যে পিটিয়ে এবং কুপিয়ে নিজেদের ক্ষমতা জাহির করে। অবশ্য এই সন্ত্রাসী বাহিনীর বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে ব্যবস্থাগ্রহণ করতে মাঠপুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন পুলিশ কমিশনার। মূলত তার নির্দেশেই পুলিশের কয়েকটি টিম বিএনপি নেতা মিরাজসহ অভিযুক্তদের খুঁজছে। রোববার রাতভর মিরাজসহ সকলের বাসাবাড়িতে তল্লাশি করেছে পুলিশ। কিন্তু গ্রেপ্তার এড়াতে সকলে আত্মগোপনে আছে। রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় বিএনপি মোড়ক পাল্টে কথিত আওয়ামী লীগ বনে যাওয়া মিরাজসহ তার সাঙ্গপাঙ্গদের গ্রেপ্তার করাসহ শাস্তির দাবি জানিয়েছে উত্তর আমানতগঞ্জবাসী। এক্ষেত্রে নতুন বরিশালের অভিভাবক পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী এবং সিটি মেয়রের হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়েছে। পাশাপাশি বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার এবং র‌্যাবপ্রধানের ভূমিকা চেয়েছে এলাকাবাসী। এদিকে ঐক্যবদ্ধ এলাকাবাসী মিরাজসহ সকল পাচারকারীদের অবৈধ আয়ের কোটি কোটি টাকা জব্দের দাবি জানিয়েছে। জানা গেছে, এমন একটি অভিযোগ দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) জমা দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি টুটুলের এই সন্ত্রাসী বাহিনীর প্রতিটি সদস্যের নির্মিত প্লান বহির্ভুত বিল্ডিং নির্মাণের ঘটনায় ব্যবস্থাগ্রহণ চেয়ে সিটি মেয়রের কাছে অভিযোগ করতে যাচ্ছে। জানা গেছে, নিরব হোসেন টুটুলের প্রভাব খাটিয়ে মিরাজ, সবুজ, সাকিনসহ সকলে অবৈধ অর্থ ইনকাম করে এবং তা দিয়ে একেক জনে ২/৩ টি করে ভবন নির্মাণ করেছে।’