তজুমদ্দিনে দেখা মিললো রাসেল ভাইপার, আতঙ্কে এলাকাবাসী

আল-আমিন | ১৯:৫১, জুন ২০ ২০২৪ মিনিট

ভোলার তজুমদ্দিনেও দেখা মিলল ভয়ংকর বিষধর রাসেলস ভাইপারের। গত দুই দিনে চাঁদপুর ইউনিয়নের চৌমুহনী ও সোনাপুর ইউনিয়নের চাঁপড়ী গ্রামে দুটি সাপকে এলাকাবাসী পিটিয়ে মেরে ফেলার ঘটনা ঘটে। এতে পাশ্ববর্তী এলাকাগুলোতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে মানুষ । বৃহস্পতিবার (২০ জুন) সকালে তজুমদ্দিন উপজেলার সোনাপুর ইউনিয়নের কাচারী বাড়ির জসিম (৩৪) বাড়ির পেছনে কলা বাগানে যায়। এসময় বিষধর রাসেলস ভাইপার দেখে চিৎকার করলে লোকজন জড়ো হয়। পরে এলাকাবাসী দলবেঁধে লাঠি, টেটা, বর্শা হাতে সাপটিকে খুঁজে পিটিয়ে মেরে ফেলে। চাঁপড়ী গ্রামের নুরে আলম মাতাব্বর (৩২) জানান, কাচারী বাড়ীর জসিম কলা কাটতে বাগানে গেলে সাপের দেখা পায়। পরে সবাই মিলে রাসেলস ভাইপার সাপ নিশ্চিত হয়ে এটিকে পিটিয়ে মেরে ফেলে। নদী ও নিন্মাঞ্চল এলাকা হওয়ায় এখন আমরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছি। অপদিকে বুধবার (১৯ জুন) বিকেলে চাঁদপুর ইউনিয়নের চৌমুহনী ঘাট সংলগ্ন একটি ফসলি জমিতে ফুটবল খেলতে গেলে কয়েক কিশোর আরেকটি বিষধর সাপ দেখতে পায়। একপর্যায়ে সাপটি তাদের আক্রমণ করতে আসলে রাসেলস ভাইপার সন্দেহে কিশোররা মিলে পিটিয়ে সাপটিকে মেরে ফেলে। পরে পলিথিন পেঁচিয়ে সাপটিকে মাটির নিচে পুঁতে রাখে তারা। রায়হান নামে এক কিশোর জানান, বিভিন্ন সময় ফেসবুকে রাসেল ভাইপার সাপ দেখেছি। এবার বাস্তবে ফসলি জমিতে ফুটবল খেলতে গিয়ে সাপটিকে নিজ চোখে দেখলাম। পরে সাপটির ছবি তুলে ইন্টারনেটের মাধ্যমে শনাক্ত করি যে সাপটি বিষাক্ত রাসেল ভাইপার। সাপটি দেখে এলাকার সবাই আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। তবে এই সাপটির ছবি ফেসবুকে প্রকাশ করা হলে অনেক নেটিজেন এটিকে রাসেলস ভাইপার মানতে নারাজ। তবে তাদের অনেকেই এটিকে বিষাক্ত প্রজাতির সাপ বলে দাবী। জানা গেছে, বাংলাদেশে বর্তমানে যেসব সাপ দেখা যায় সেগুলোর মধ্যে রাসেল ভাইপার সবচেয়ে বিষাক্ত। এই সাপের কামড়ে শরীরের দংশিত অংশে বিষ ছড়িয়ে অঙ্গহানি, ক্রমাগত রক্তপাত, রক্ত জমাট বাঁধা, স্নায়ু বৈকল্য, চোখ নষ্ট হয়ে যাওয়া, পক্ষাঘাত ও কিডনির ক্ষতিসহ বিভিন্ন ধরনের শারীরিক উপসর্গ দেখা দেয়। এ বিষয়ে দৌলতখান বনবিভাগের রেঞ্জ অফিসার মো: সাইফুল ইসলাম জানান, তীব্র বর্ষায় নির্মাণচল প্লাবিত হওয়ায় রাসেল ভাইপার লোকালয়ে চলে এসেছে। পানি কমে গেলে এগুলো আবার তাদের আবাসস্থলে চলে যাবে বলে মনে করি। সাপ দেখলেই আতঙ্কিত না হওয়ার জন্য পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, অনেক স্থানে সাপ দেখলেই মানুষ তা পিটিয়ে মেরে ফেলার চেষ্টা করে। সাপ প্রকৃতিতে অনেক অবদান রাখছে। আক্রান্ত না হলে কাউকে আঘাত করে না। সেজন্য সাপ দেখলে প্রথমে তাকে চলে যাওয়ার সুযোগ দেয়া উচিৎ। সোনাপুর ইউনিয়নের চাপরি এলাকায় এলাকাবাসী যে সাপটিকে পিটিয়ে মেরেছে সেটি ছবি দেখে রাসেল ভাইপার বলে তিনি নিশ্চিত করেন। রাসেলস ভাইপার সাপ লোকালয়ে সাধারণত খুব কমই দেখা যায়। বাচ্চা দেওয়ার কারণে হয়তো ওই সাপটি লোকালয়ে চলে এসেছে। তবে সবাইকে এ বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।