বরিশালে ব্যবসায়ী সালাম গোলন্দাজ হত্যা মামলা আড়াল করতে স্বাক্ষীদের বিরুদ্ধে ধর্ষণ চেষ্টা মামলা !

আল-আমিন | ১৮:২২, জুন ১৫ ২০২৪ মিনিট

বরিশালের বানারীপাড়ায় ব্যবসায়ী আব্দুস সালাম গোলন্দাজ (৬০) হত্যা মামলা ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে ওই মামলার স্বাক্ষীদের বিরুদ্ধে ধর্ষণ চেষ্টার মামলা দায়ের করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই ব্যবসায়ীর মৃত্যুর সাড়ে তিন বছর পরে তাকে হত্যার অভিযোগে তার স্ত্রী ও জামাতাসহ চারজনকে আসামী করে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। আব্দুস সালাম গোলন্দাজের বোন নাসিমা ইয়াসমিন বাদী হযে বরিশাল বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সম্প্রতি মামলা দাযের করলে বিচারক মামলাটি এজাহার হিসেবে গণ্য করার জন্য বানারীপাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কে নির্দেশ দেন। ওই নির্দেশের প্রেক্ষিতে ১২ জুন বুধবার মামলাটি বানারীপাড়া থানায় হত্যা মামলা হিসেবে রুজ্জু করা হয়। মামলার আসামীরা হলেন সাবিনা ইয়াসমিন (৫০),তার মেয়ে জামাতা খালিদ মাহমুদ সোহাগ (৩৮), মো. মাসুম (৩৮) ও ভাই দুলাল হাওলাদার (৫৩) । এছাড়া ৭ জুন শুক্রবার সকালে আ,সালাম গোলন্দাজের বড় ভাই ক্যাপ্টেন এম. মোয়াজ্জেম হোসেনের মালিকানাধীন উপজেলার কাজলাহার গ্রামের এবিসি ব্রিকস ও সলিয়াবাকপুর গ্রামের বাড়িতে হত্যা মামলার আসামীরা ও তাদের ভাড়াটে লোকজন হামলা ভাংচুর,লুটপাট এবং আলাউদ্দিন গোলন্দাজসহ কয়েকজনকে মারধর করেন। ১২ জুন বুধবার ওই ইটভাটার মালিক ক্যাপ্টেন এম. মোয়াজ্জেম হোসেনের মামাতো বোন মো. শাহনাজ বেগম বাদী হয়ে বানারীপাড়া থানায় ১২ জনকে আসামী করে ভাটা ও বাড়িতে হামলা,ভাংচুর ও হত্যা প্রচেষ্টার অভিযোগে মামলা দায়ের করেন।হত্যাসহ এ দুটি মামলা ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে ১৩ জুন বৃহস্পতিবার রাতে সাবিনা ইয়াসমিনের ছেলে বউ মেহেরুননেসা ডায়নাকে দিয়ে মামলা দুটির স্বাক্ষীদের বিরুদ্ধে ধর্ষণ চেষ্টার মামলা দায়ের করা হয়। আদালতের নির্দেশে বানারীপাড়া থানায় মামলাটি রুজু করা হয়। এ বিষয়ে ক্যাপ্টেন এম.মোয়াজ্জেম হোসেন বাবুল বলেন , তার ভাই আব্দুস সালাম গোলন্দাজের হত্যা মামলা এবং তার ইটভাটা এবং বাড়িতে হামলা ভাংচুর ও তাদের হত্যা প্রচেষ্টার বিষয়ে দায়ের করা মামলা ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে তিনিসহ মামলা দুটির স্বাক্ষীদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলার আসামী সাবিনা ইয়াসমিন তার পুত্রবধুকে দিয়ে কল্পকাহিনী সাজিয়ে হয়রাণিমূলক মিথ্যা ধর্ষণ চেষ্টার মামলা দায়ের করেছে। তিনি সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত ঘটনা উদঘাটনের জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। এদিকে হত্যা মামলার বাদীর দাবি অর্থ সম্পত্তি আত্মসাৎ ও সাবিনা ইয়াসমিন এবং তার জামাতা খালিদ মাহমুদ সোহাগ পরকীয়া প্রেমের বাধা দূর করার জন্য অসুস্থ সালাম গোলন্দাজকে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দেওয়ার পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী ২০২১ সালের ৮ জানুয়ারী রাত আনুমানিক সাড়ে ১১টা হতে পরদিন ৯ জানুয়ারী সকাল ৬টার মধ্যে বিভিন্ন চেতনানাশক ঔষধ (বিষ) সেবন করিয়ে এবং এক পর্যায়ে শ্বাসরোধ করে নির্মমভাবে হত্যা করেন। আসামীরা সকালবেলা প্রচার করেন যে সালাম গোলন্দাজ হার্ট অ্যাটাক করে মারা গেছেন। আসামিরা তখন তড়িঘড়ি করে তার লাশ দাফন করেন। পরবর্তীতে পরকীয়া প্রেমে আসক্ত সাবিনা ইয়াসমিন বানারীপাড়ার প্রয়াত ছত্তার মৃধার ছেলে আনিছ মৃধার সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে সংসার করার পাশাপাশি তার মেয়েজামাতা খালিদ মাহমুদ সোহাগের সঙ্গেও অবৈধ সম্পর্ক অব্যাহত রাখেন । বাদী দাবি করেন তার ভাইয়ের মরদেহ কবর থেকে উত্তোলন করে ময়না তদন্তের মাধ্যমে রাসায়নিক ও ডিএনএ পরীক্ষা করলে তার মৃত্যুরহস্য উদঘাটন হবে। এদিকে মুঠোফোন বন্ধ থাকায় এ বিষয়ে সাবিনা ইয়াসমিনের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। এ প্রসঙ্গে বানারীপাড়া থানার ওসি মো. মাইনুল ইসলাম বলেন থানায় রুজু হওয়া পৃথক তিনটি মামলার বিষয়ে তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।