মদপান করে নারীকে ধর্ষণের পর হত্যা, কসাইয়ের স্বীকারোক্তি

আল-আমিন | ২১:৪০, জুন ১১ ২০২৪ মিনিট

কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার রৌমারী-ঢাকা মহাসড়ক থেকে সোমবার (১০ জুন) সকালে মৃত অবস্থায় উদ্ধার নারীর (৪৫) পরিচয় পেয়েছে পুলিশ। পরিবারকে খুঁজে তাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন রৌমারী থানার ওসি আব্দুল্লা হিল জামান।

এদিকে ওই নারীকে ধর্ষণের পর মাথায় আঘাত করে হত্যা করা হয় বলে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে গ্রেফতার দুই আসামি আবুল কালাম (৪৫) ও লালকু মিয়া (৪৬)। মঙ্গলবার (১১ জুন) দুপুরে কুড়িগ্রাম চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে (রৌমারী আমলি) তারা জবানবন্দি দেয়। সংশ্লিষ্ট আদালতের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা (জিআরও) মো. রানা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

জিআরও রানা জানান, আসামিরা দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে। আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. মজনু মিয়া তাদের জবানবন্দি রেকর্ড করেন। পরে আসামিদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

গ্রেফতার আবুল কালাম ও লালকু মিয়া উপজেলার শৌলমারী ইউনিয়নের বড়াইকান্দি বাজারের মাংস বিক্রেতা আমিনুলের সহযোগী। বড়াইকান্দি বাজারের কাছে তাদের বাড়ি।

আদালত সূত্র জানায়, জবানবন্দিতে অভিযুক্ত আবুল কালাম বলেছেন, ঘটনার রাতে (রবিবার) আমিনুল ও আরও কয়েকজন কসাইসহ বড়াইকান্দি বাজারে মদ পান করে। এরপর আমিনুলসহ অন্যরা বাড়ি চলে গেলেও কালাম ও লালকু বাজারে অপেক্ষা করে। এ সময় বৃষ্টি শুরু হলে পাশের দোকানের বারান্দায় থাকা ভুক্তভোগী মানসিক ভারসাম্যহীন নারীকে আবুল কালাম ধর্ষণ করে। তার সঙ্গে ধস্তাধস্তি হলে মাথায় লোহার রড দিয়ে আঘাত করে। তাকে সহযোগিতা করে লালকু মিয়া।

লালকু মিয়া তার জবানবন্দিতে দাবি করে, নিষেধ করলেও আবুল কালাম ওই নারীকে ধর্ষণ করে এবং শেষে মাথায় আঘাত করে। এতে ওই নারী অসুস্থ হয়ে পড়লে তারা ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। পরে ভোরে আমিনুল ওই নারীকে জখম অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে তাদের ডেকে আনেন। তখন তারা ঘটনা জানায়। এ সময় আমিনুল তাদের দুজনকেই চড় মারে। লাশ উদ্ধারের পর পুলিশ তাদের গ্রেফতার করে।

এ ঘটনায় কসাই আমিনুল মামলার সাক্ষী হয়েছেন বলে মামলা সূত্রে জানা গেছে।

ধর্ষণ ও আঘাতে মারা যাওয়া নারীর পরিচয় পেয়েছে পুলিশ। লাশের আঙুলের ছাপ থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী ওই নারীর বাড়ি ঢাকার গাজীপুর সদরে। সোমবার (১০ জুন) সকালে উপজেলার শৌলমারী ইউনিয়নের বড়াইকান্দি বাজারের সামনে মহাসড়ক থেকে ওই নারীর লাশ উদ্ধার করে রৌমারী থানা পুলিশ।

স্থানীয়রা জানান, ওই নারী মানসিক ভারসাম্যহীন। তার পরিচয় কেউ জানেন না। গত দেড় বছর ধরে তিনি বড়াইকান্দি বাজার এলাকায় ঘোরাফেরা করতেন। রবিবার দিবাগত রাতে তাকে হত্যা করা হয়। সড়কে তার লাশ পড়ে ছিল। মাথার মাঝখানে ‘ধারালো অস্ত্রের’ আঘাত ছিল।

ওসি আব্দুল্লা হিল জামান বলেন, ‘ভুক্তভোগী নারীর পরিচয় পাওয়া গেছে। আমরা তার পরিবারকে চিহ্নিত করে তাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করছি। লাশ উদ্ধারের পর দ্রুততম সময়ে জড়িত আসামিদের গ্রেফতার করা হয়েছে। তারা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। আদালত তাদের কারাগারে পাঠিয়েছেন।’