গৌরনদীতে পরাজিত প্রার্থীর ১৩ সমর্থককে কুপিয়ে ও পিটিয়ে জখম

আল-আমিন | ২১:২৯, জুন ১১ ২০২৪ মিনিট

নিজস্ব প্রতিবেদক : বরিশালের গৌরনদীতে উপজেলা পরিষদের নির্বাচনের ফল ঘোষণার পর পৃথক স্থানে পরাজিত প্রার্থীর ১৩ কর্মী-সমর্থককে পিটিয়ে ও কুপিয়ে জখম করা হয়েছে। গতকাল সোমবার রাতে বিজয়ী প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকেরা এসব হামলা চালায় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। আহতদের গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ছাড়া উপজেলার বার্থী এলাকায় পরাজিত মোটরসাইকেল প্রতীকের এক কর্মীর দোকানে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলার চাদশী ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি মো. নয়ন খান অভিযোগ করে বলেন, ‘গতকাল সোমবার রাতে আমি বাড়ি থেকে পশ্চিম শাওড়া মোল্লাবাড়ি বাসস্ট্যান্ডে পৌঁছালে নতুন উপজেলা চেয়ারম্যান মো. মনির হোসেন মিয়ার সমর্থক মেহেদী হাসান (৫২), জসিম শরীফ (৩৮) ও সৈয়দ জসিম (৪৫) লাঠিসোঁটা ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে আমার ওপর হামলা চালায়।’ চাদশী ইউনিয়ন যুবলীগের সহসভাপতি মো. শাহাদত হোসেন বলেন, ‘গতকাল রাতে আমি দক্ষিণ মাঠে ব্রিজের ওপর পৌঁছালে মনির হোসেন মিয়ার সমর্থক সন্ত্রাসী জসিম শরীফ, সৈয়দ জসিম ও মেহেদী হাসান রড দিয়ে পিটিয়ে আমাকে রক্তাক্ত করে এবং আমার বাঁ হাতটি ভেঙে দেয়।’ পরাজিত প্রার্থী হারিছুর রহমানের সমর্থক বার্থী ইউপি সদস্য করিম লস্কর অভিযোগ করে বলেন, ‘বিজয়ী প্রার্থী মনির হোসেন মিয়ার সমর্থক ও বার্থী ইউনিয়নের ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি জাফর প্যাদার (৩৫) নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী আমার বার্থী বাজারের একটি দোকানঘর তালাবদ্ধ করে রেখেছে।’ বার্থী ইউনিয়ন যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. আজিজুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, ‘আমি রামসিদ্ধি বাজারে পৌঁছালে মনির মিয়ার ১০-১২ সমর্থকের হামলায় আমি গুরুতর আহত হয়েছি।’ এ ছাড়া বিজয়ী প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের হামলায় পরাজিত প্রার্থী হারিছুর রহমানের সমর্থক রাব্বি সরদার, মাছের আড়তদার সিরাজ হাওলাদার, পৌর এলাকার কাছেমাবাদ মহল্লার মৃদুল সরদার, শরিকল ইউনিয়নের শরিকল গ্রামের টিপু মৃধা, কুড়িরচর গ্রামের মফছের ফকির, ছাত্রলীগ কর্মী মহিবুল ইসলাম, নলচিড়া ইউনিয়নের কাণ্ডপাশা গ্রামের মিলন মিয়া ও ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সদস্য উজ্জ্বল হোসেন আহত হয়েছেন। অভিযোগের ব্যাপারে জানতে ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি জাফর প্যাদার মোবাইলে ফোন দেওয়া হলে তা বন্ধ পাওয়া যায়। অভিযোগ অস্বীকার করে মেহেদী হাসান বলেন, ‘হামলার সঙ্গে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই।’ অভিযোগ সম্পর্কে নবনির্বাচিত উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. মনির হোসেন মিয়া বলেন, হারিছুর রহমান পরাজিত হয়ে নিজেই কয়েক শ সন্ত্রাসী নিয়ে দিয়াসুর গ্রামে হামলা চালিয়ে আমার সমর্থকদের ১৫-২০টি বাড়ি ভাঙচুর, লুটপাট করেছে। দিয়াসুর গ্রামে তাণ্ডব চালিয়েছে। সেই ঘটনা ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে এবং ধামাচাপা দিতেই মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে।’ এ বিষয়ে জানতে চাইলে গৌরনদী মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মাজাহারুল ইসলাম বলেন, বিক্ষিপ্ত বিচ্ছিন্নভাবে কিছু সহিংসতার খবর পাওয়া গেছে। একাধিক ঘটনায় লিখিত অভিযোগও পাওয়া গেছে। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।