বরিশালে ঘূর্ণিঝড়ের রেশ না কাটতেই নদীর তীব্র ভাঙন

আল-আমিন | ২১:০৭, জুন ০৭ ২০২৪ মিনিট

নিজস্ব প্রতিবেদক : বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জে ঘূর্ণিঝড় রিমালের রেশ না কাটতেই নদীর তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। এরইমধ্যে প্রায় ৩ শতাধিক বসতভিটা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। সরেজমিনে দেখা যায়, রিমালের ক্ষত এখনো বয়ে বেড়াচ্ছে মেহেন্দিগঞ্জের মানুষ। তার মধ্যে শুরু হয়েছে নদী ভাঙন। বর্ষার শুরুতেই উপজেলার জাঙ্গালিয়া, শ্রীপুর, দড়িচর খাজুরিয়া, জয়নগর, চানপুর, আলীমাবাদ ও চরগোপালপুর ইউনিয়নে প্রায় ৩ শতাধিক বসতভিটা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। মেঘনা, ইলিশা, মাসকাটা, গজারি, তেতুলিয়া ও কালাবদর নদীর ভাঙন অব্যাহত আছে। এই নদীগুলোর প্রবল স্রোতে এরইমধ্যে মেহেন্দিগঞ্জের হাট বাজার, সরকারি গুচ্ছ গ্রামের ঘর, সিসি ব্লক বাঁধের একাংশ, দুই শতাধিক পরিবারের বসতভিটা ও ফসলি জমি বিলীন হয়ে গেছে। হুমকির মুখে হাজারো বসতভিটাসহ সরকারি-বেসরকারি বহু স্থাপনা। সদর ইউনিয়নের লালমিয়ারহাট এলাকার হালিমা বেগম (৪৫) বলেন, খুব কষ্ট করে এলাকায় ৫ শতাংশ জমির ওপর বসতভিটা গড়েছি। এক সপ্তাহ আগে ইলিশা নদীতে ঘরসহ বসতভিটা বিলীন হয়ে গেছে। তিন কন্যাসন্তান নিয়ে চরম অসহায় হয়ে পড়েছি। নতুন করে বসতভিটা গড়ে তোলার সামর্থ্যও আমার নেই। আমি বাঁচব কী করে?। জাঙ্গালিয়া ইউনিয়নের সিন্নিরচর সরকারি গুচ্ছগ্রামের বাসিন্দা জেসমিন বেগম (৩০) বলেন, পাঁচ দিন আগে মাসকাটা নদীর ভাঙনে সরকারি গুচ্ছগ্রামের ৮-১০টি ঘর বিলীন হয়ে গেছে, তার ঘরটিও হুমকির মুখে রয়েছে। চানপুর ইউনিয়নের চরখাগকাটা এলাকার জাহাঙ্গীর আলম ঢালী বলেন, ইলিশা নদীর ভাঙনে তার ঘরসহ এক একর সুপারি বাগান বিলীন হয়ে গেছে। এতে প্রায় ২০ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। চানপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বাহাউদ্দীন ঢালী জানান, ঘূর্ণিঝড় রিমালের তাণ্ডবে তার ইউনিয়নে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সেই রেশ না কাটতেই ইলিশা নদীর তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। যার ফলে এখানকার মানুষ দিশেহারা হয়ে পড়েছে। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা খগো পতি রায় বলেন, নদী ভাঙনে ১২টি বিদ্যালয় স্থানান্তরিত হয়েছে। গোটা উপজেলায় নদী ভাঙন চলছে। উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. কামাল হোসেন বলেন, ঘূর্ণিঝড় রিমাল এবং নদী ভাঙন দুই প্রাকৃতিক দুর্যোগে মৎস্য খাতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এতে প্রায় ১০-১২ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম রাকিব বলেন, ঘূর্ণিঝড় রিমালেরর কারণে মেহেন্দিগঞ্জে পাকা রাস্তা ও কাঁচা রাস্তা ভেঙে ২০ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।