বরিশাল শহরের রুপাতলী হামিদ খান সড়কে আবাসিক বাসা-বাড়ির অভ্যন্তরে অবস্থিত বেকারীর কালো ধোঁয়া স্থানীয় বাসিন্দাদের অস্বস্তির মধ্যে ফেলে দিয়েছে। সিটির ২৪ নং ওয়ার্ডের আপন বেকারীটি পরিচালনায় গণআপত্তি থাকা সত্বেও কোনো প্রতিকার নেই। বরং সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানসমূহের নীরবতায় বেকারীটি দিনে দিনে হামিদ খান সড়কসহ আশপাশ এলাকার পরিবেশ বিষাক্ত করে তুলেছে কালো ধোঁয়ায়। ফলে এনিয়ে বাসিন্দাদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে, যা এখন পরিবেশ অধিদপ্তর পর্যন্ত গড়িয়েছে। তবে এই বেকারীটি সম্পর্কে এতদিন জানা ছিল না, জানিয়ে পরিবেশ অধিদপ্তর বলছে, আবাসিক এলাকাসমূহে বেকারী করা হলে সেটা আইনের লঙ্ঘন।
অবশ্য বেকারী মালিক রাহাতও স্বীকার করেছেন, এতে আইনের লঙ্ঘন হচ্ছে, কিন্তু তারপরেও তাৎক্ষণিকভাবে সরিয়ে নেওয়া যাচ্ছে না।
স্থানীয়দের অভিযোগ, বেকারীর কালো ধোঁয়া তাদের জীবন ওষ্ঠাগত করে তুললেও সরকারি কোনো দপ্তর ব্যবস্থা নিচ্ছে না। এমনকি এলাকাবাসী ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রতিবাদ করাসহ প্রতিষ্ঠান মালিকদের কারখানা অন্যত্র সরিয়ে নিতে বললেও তা কর্ণপাত করছে না। বরং তারা যেনো কালো ধোঁয়া তৈরির মাত্রা আরও বাড়িয়ে দিয়েছেন। প্রচণ্ড তাপদাহের মধ্যে এই কালো ধোঁয়ায় আশপাশের ভবন মালিকসহ বাসিন্দারা শ্বাসকষ্টে ভুগছেন, বাড়ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি, যা বেকারী মালিকও স্বীকার করেন। কিন্তু তারা কারখানা সরিয়ে নেই, নিচ্ছি বলে কালক্ষেপন করছেন। সর্বশেষ আরও ৬ মাসের সময় দাবি করেছেন।
বাসিন্দারা বলছেন, ইতিমধ্যে কালো ধোঁয়ায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুশয্যায় আছে, তারপরেও কারাখানা না সরিয়ে সময় দাবি করা অমানবিক। এতে আরও মানুষ রোগাক্রান্ত হয়ে পড়বেন, মন্তব্য পাওয়া যায়। বিষয়টি কারখানা মালিকদের দীর্ঘদিন ধরে বলা হলেও তারা শুনছেন না। উল্টো ধোঁয়া যেনো আবার বাড়িয়ে দিচ্ছে, যা বহুতল আবাসিক ভবনের জানালা দিয়ে প্রবেশ করে নাগরিক জীবন ওষ্ঠাগত করছে।
এলাকাবাসীর এমন অভিযোগ অসত্য নয় বলে স্বীকার করেছেন আপন বেকারীর মালিক রাহাদ। তার দাবি, বেকারীটি অন্যত্র সরাতে আরও ৬ মাস সময় লাগবে, আর্থিক সংকটের কারণে তারা এখনই পারছেন না। তাছাড়া চুলা বন্ধ রেখে ওভেন কিনবেন, সেই সামর্থও এখন নেই। এনিয়ে এলাকাবাসীর চাপাচাপিতে তারাও অস্বস্তিতে আছেন।
তবে নামপ্রকাশ না করার শর্তে চল্লিশোর্ধ্ব এক ব্যক্তি জানান, কারাখানাটি সরিয়ে নেওয়ার জন্য কয়েক বছর ধরে বলা হচ্ছে। কিন্তু তারা কর্ণপাত করেনি, সবশেষ দুই বছর ধরে বলে আসছে সরিয়ে নিচ্ছি, সরাচ্ছি। কিন্তু তাদের উদ্যোগ লক্ষ্যণীয় নয়।
প্রতিষ্ঠানটি সার্বিত্র চিত্র বরিশাল পরিবেশ অধিদপ্তরের জেলা কার্যালয়ের শীর্ষ কর্মকর্তার কাছে তুলে ধরা হলেও তিনিও বিস্ময়প্রকাশ করেন। এবং তিনি বলছেন, আবাসিক এলাকায় এই বেকারি পরিচালনার করলেতো পরিবেশ দূষণ হবেই। কিন্তু এটা পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৫ (সংশোধিত ২০১০) অনুযায়ী দণ্ডনীয় অপরাধ।
এই কর্মকর্তা বলেন, হামিদ খান সড়কের আপন বেকারীটি পরিবেশ দূষণ করছে, তা সম্পর্কে অবগত ছিলেন না। যেহেতু বিষয়টি কানে এসেছে, শীঘ্রই তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থাগ্রহণ করা হবে।’