বরিশালে ঘূর্ণিঝড়ের সময় আশ্রয়কেন্দ্র বন্ধ করে উধাও শিক্ষক

আল-আমিন | ১৫:৪৮, জুন ০১ ২০২৪ মিনিট

নিজস্ব প্রতিবেদক : ঘূর্ণিঝড় রেমালের ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেতের মধ্যে আশ্রয়কেন্দ্র না খুলে উধাও হয়েছিলেন সরকারি ডব্লিউ বি ইউনিয়ন ইনস্টিটিউশন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। এর আগে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেতের মধ্যে নিয়মনীতি না মেনে স্কুল খোলা রেখে শিক্ষার্থীদের টেস্ট পরীক্ষা ও ক্লাস নিয়েছিলেন তিনি। এমন অভিযোগ উঠেছে বরিশাল জেলার উজিরপুর পৌরসভার সরকারি ডব্লিউ বি ইউনিয়ন ইনস্টিটিউশন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শাহ আলমের বিরুদ্ধে। জানা গেছে, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ৮ থেকে ১০ ফুট পর্যন্ত পানি উঠে বাড়িঘর, গরুর খামারসহ সকল স্থাপনা তলিয়ে যায়। কোনো উপায় না পেয়ে জীবন বাঁচাতে আশ্রয়কেন্দ্রে এসে দেখে দরজায় তালা। এ সময় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শাহ আলমের কাছে আশ্রয়কেন্দ্র খুলে দেওয়ার জন্য বারবার বলা হলেও তিনি খুলতে অপারগতা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন ‘মানুষ ও গবাদিপশু রাখতে বিদ্যালয় তৈরি করা হয় নাই। আমি স্কুলের দরজা খুলব না, দেখি এতে আমার কী হয়।’ এর আগে নিয়মের তোয়াক্কা না করে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেতের মধ্যে সকালে স্কুল খোলা রেখে টেস্ট পরীক্ষা ও ক্লাস নেন ওই প্রধান শিক্ষক। অভিযোগ সূত্রে আরও জানা যায়, বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার, স্বেচ্ছাচারিতা, শিক্ষার্থীদের মারধর, ঠিকমতো স্কুলে না আসা, অনিয়ম-দুর্নীতিসহ নানা অভিযোগ রয়েছে এই শিক্ষকের বিরুদ্ধে।  মো. আউয়াল, মো. জাহাঙ্গীর, মো. ইব্রাহিম, মো. শফিক, রিপনসহ একাধিক ব্যক্তি জানান, ঝড়ের দিন আমরা দুই শতাধিক লোক আমাদের গবাদিপশু ও মূল্যবান মালামাল নিয়ে স্কুলে আশ্রয় নিতে আসি। প্রধান শিক্ষক শাহ আলম আমাদের সাথে খুব খারাপ আচরণ করেছেন, প্রাণ বাঁচাতে আশ্রয়কেন্দ্রে এসে তালা মারা দেখে তাকে অনেক অনুরোধ করেছি। তিনি খোলেননি। পরে ৪-৫ ঘণ্টা পানির মধ্যে থাকার পর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার হস্তক্ষেপে তালা খুলে আমাদের আশ্রয় দেওয়া হয়। ইউএনও স্যার না এলে আমাদের সকলকে বন্যার পানিতে ডুবে মরতে হতো। প্রধান শিক্ষক শাহ আলমের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তারা। এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক মো. শাহ আলমের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিদ্যালয় গরু-ছাগল, হাঁস-মুরগি রাখার স্থান নয়। তাই বিদ্যালয়ের কক্ষ খুলি নাই। সূত্রে জানা যায়, ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে উপজেলার ৪২টি বিদ্যালয়কে আশ্রয়কেন্দ্র ঘোষণা করে তা খোলা রেখে আশ্রয় নেওয়া মানুষের জন্য পর্যাপ্ত সুপেয় পানি, শুকনো খাবার, স্যালাইল ও বিভিন্ন ওষুধ বিতরণ করা হয়েছে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে।