‘দুম্বা’ পালনে সফল পটুয়াখালীর শানু মৃধা
নিজস্ব প্রতিবেদক : মরু আঞ্চলের প্রাণী হলেও বেশ কয়েক বছর আগ থেকেই দেশের বিভিন্ন এলাকায় বাণিজ্যিকভাবে দুম্বা পালন শুরু হয়েছে। এরই ধারবাহিকতায় দুই বছর আগে দুটি দুম্বা দিয়ে খামার শুরু করেন পটুয়াখালী শহরের কলাতলা এলাকার বাসিন্দা শানু মৃধা।
দুম্বা পালন করে সফল হয়েছেন তিনি। এবছর কোরবানিতে এই খামারের দুটি দুম্বা বিক্রির উপযোগী করে প্রস্তুত করা হয়েছে। রোগবালাই কম হওয়ায় এবং খাবার খরচ সাশ্রয়ী হওয়ার কারণে অনেকেই তার মতো দুম্বা পালনে আগ্রহী হচ্ছেন। প্রাথমিক পর্যায়ে পরামর্শ প্রাণী সম্পদ বিভাগও ছোট পরিসরে এ ধরনের খামার করার পরামর্শ দিচ্ছে।
জানা যায়, তিনি এর আগে ছাগল এবং ভেড়া পালন করলেও বছর দুয়েক আগে বাড়ির ছাদে বড় আকারের দুটি খোঁয়াড় তৈরি করে দুম্বা লালন-পালন শুরু করেন। সেই দুটি দুম্বা থেকে দুই বছরে ছোট-বড় মিলিয়ে তার খামারে এখন দুম্বার সংখ্যা ৯টি। ইতিমধ্যে এক লাখ ২০ হাজার টাকায় একটি দুম্বা বিক্রিও করেছেন।
শানু মৃধা জানান, দুম্বা লালন পালন করা খুবই সহজ। তিনি যশোর জেলা থেকে দুটি দুম্বা এনে লালন পালন শুরু করেন। প্রথম পর্যায়ে একটি বাচ্চা দিলেও এখন দুটি করে বাচ্চা পাচ্ছেন। পাশপাশি তিনি গাড়লের সাথে দুম্বার ক্রস করে উন্নত জাতের ভেড়া উৎপাদনেও সফল হয়েছেন। ধীরে ধীরে তার খামার সম্প্রসারণের পরিকল্পনা করছেন বলেও জানান তিনি।
তিনি আরও জানান, লালন পালন ও খাবারের পদ্বতি সহজ হওয়ায় পরিবারের সদস্যরাই প্রাণী পালন করতে পারেন ফলে বাড়তি কর্মচারী নিয়োগের প্রয়োজন হয়না। একটি পূর্ণবয়স্ক দুম্বা তিন থেকে চার বছরে প্রায় ২০০ কেজি পর্যন্ত ওজন হয়। প্রতিটি দুম্বার জন্য দৈনিক ৩৫-৪০ টাকার খাবার প্রয়োজন হয়।
সরেজমিনে দেখা যায়, ভিন্নধর্মী এ পশুর খামার দেখতে প্রতিদিনই জেলার বিভন্ন দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ ছুটে আসছেন। আসন্ন কোরবানি ঈদে বিক্রির উপযোগী হয়েছে খামারের দুটি দুম্বা। যার বাজারমূল্য চাওয়া হয়েছে দুই লাখ ৮০ হাজার টাকা। তার সাফল্য দেখে এলাকার অনেকেই এখন দুম্বা পালনে আগ্রহী হচ্ছেন।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো. ফজলুল হক সরদার বলেন, দুম্বা ও ভেড়া কাছাকাছি প্রজাতির প্রাণী। দুম্বা মরু অঞ্চলের প্রাণী হলেও এটি সহনশীল। তারপরও শুরুর দিকে শানু মৃধার মতো ছোট পরিসরে উদ্যোগ নেওয়া সুবিধাজনক। তিনি আরও বলেন, দুম্বা ভেড়ার মতোই দ্রুত বংশ বৃদ্ধি করে। অর্থনৈতিক দিক দিয়ে ছাগল ভেড়ার চেয়ে দুম্বা পালন লাভজনক। কোরবানির সময় এর বাণিজ্যিক চাহিদা বেশ সম্ভাবনাময়।