বরিশালে শব্দদূষণে অতিষ্ঠ জনসাধারণ, নেই কোন তদারকি

আল-আমিন | ২১:০৭, মে ১৬ ২০২৪ মিনিট

নিজস্ব প্রতিবেদক : বরিশাল নগরীতে দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে অবৈধ যানবাহন। বেশিরভাগ মোটরসাইকেল, অটোরিকশা, সিএনজি, মাহিন্দ্রা এবং থ্রি হুইলারের সংযুক্ত করা হয়েছে উচ্চশব্দ সৃষ্টিকারী হর্ণ। এতোদিন যানজট নামক দুর্ভোগের শিকার নগরবাসীর জন্য নতুন যন্ত্রণার নাম অতিরিক্ত শব্দ দূষণ। বিষয়টি নিয়ে কর্তৃপক্ষের কোন তদারকি নেই বলেও অভিযোগ রয়েছে। এসব বিষয় মাঝে মাঝে বিআরটিএ ও ট্রাফিক বিভাগের পক্ষ থেকে নাম মাত্র অভিযান পরিচালনা করা হলেও শব্দদূষণ থেকে মুক্তি বা কোন প্রতিকার পাওয়া যাচ্ছে না। কিছুদিন আগেও কিরিং কিরিং শব্দ করে যে রিক্সাগুলো চলাচল করতো এখন সেগুলোতে লাগানো হচ্ছে হাইড্রলিক্স হর্ন। বরিশাল নগরীর প্রতিটি অলি-গলিতে ছেয়ে গেছে ব্যাটারী চালিত রিক্সায়। এই রিক্সাগুলো বিদ্যুৎ অপচয়ের পাশাপাশি একদিকে যেমন সৃষ্টি করছে যানজট অন্য দিকে টিট টিট হর্ণ বাজিয়ে সৃষ্টি করছে অতিরিক্ত শব্দদূষণ। নগরবাসীর অভিযোগ, কোথায় হর্ন দিতে হবে, কতটুকু সময় পর পর হর্ন দিতে হবে জানে না কোন রিক্সার চালক বা মালিক। চলার সময়,ব্রেক করার সময় এমনকি দাড়িয়ে থাকলেও তারা শুধু শুধু হর্ণ বাজিয়ে থাকে। শব্দদূষণ কি এর প্রভাবে মানুষের কি কি সমস্যা হতে পারে জানে না বেশিরভাগ মানুষ। শুধু তাই নয় এই অশিক্ষিত চালকগুলোর নেই কোন প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা বা প্রশিক্ষণ। অতিরিক্ত শব্দ দূষণের বিষয় চিকিৎসকরা জানিয়েছেন ভয়াবহ পরিস্থিতির কথা। বরিশাল নগরীর বিভিন্ন স্থানে শব্দ দূষণের মাত্রা ১৭০-১৮০ ডিসিবেল। যা স্বাভাবিক মাত্রায় চেয়ে কয়েকগুণ বেশি। একজন মানুষ যতগুলো কারণে মানুসিক ভাবে অসুস্থ হয় তার মধ্যে শব্দ দূষণ অন্যতম। একথায় নিজেরাই নিজেদের ক্ষতি করছে। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় অতিরিক্ত মাথাব্যথা, মেজাজ খিটখিটে, স্মৃতি শক্তি কমে যাওয়াসহ এমনকি সারাজীবনের জন্য নষ্ট হতে পারে মানুষের শ্রবণশক্তি। এদিকে সব ধরনে সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ জরুরি বলে মনে করেন সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা। তাদের দাবী দিন দিন যেভাবে যানবাহনে উচ্চ শব্দের হর্ণ লাগানো হচ্ছে তাতে কিছুদিন পর এই শহরে বসবাস করা কঠিন হয়ে যাবে। তাই কোন আশ্বাস নয় দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করার দাবি সকল শ্রেণি পেশার মানুষের। এদিকে যানজন, বিদ্যুৎ অপচয় ও অতিরিক্ত শব্দ দূষণ সবকিছু বিবেচনা করে ঢাকার শহরে অটোরিকশা চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেছে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়। তবে এই আইন বরিশালেও বাস্তবায়ন হবে কি-না অথবা কবে হবে সে বিষয় এখনও পরিস্কার কোন ধারণা পাওয়া যায়নি। এ বিষয় বরিশাল বিআরটিএ বিভাগীয় পরিচালক মোঃ জিয়াউর রহমান বলেন, ফিটনেস প্রদানের সময় গাড়িতে অতিরিক্ত শব্দসৃষ্টিকারী অবৈধ হর্ণ লাগানো আছে কি-না সেটা আমরা চেক করি। যদি থাকে তাহলে সেটা খুলে রাখা হয় এবং ভবিষ্যতে আর না লাগানোর জন্য নির্দেশনা প্রদান করি। এছাড়াও বিআরটিএ কর্তৃক ড্রাইভারদের বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কর্মশালায় শব্দ দূষণ নিয়ে আলোচনা করা হয়। তার পরেও যদি কেউ আইন অমান্য করে মানুষের ভোগান্তি সৃষ্টি করে তবে তাদের বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমাদের এই কার্যক্রম আগামীতেও অব্যাহত থাকবে। এ বিষয় বিএমপি ট্রাফিক বিভাগের এডিসি রুনা লায়লা বলেন, যে সমস্ত যানবাহনে অতিরিক্ত শব্দদূষণ হয় সেগুলোর বিরুদ্ধে আমরা জিরো টলারেন্স। জনসাধারণের ভোগান্তি হয় এমন কোন যানবাহন সড়কে চলতে পারবে না চলতে দিব না। অবৈধ হর্ণ বন্ধে আমাদের মামলা ও আটক অভিযান অব্যাহত রয়েছে।