বরিশালে মেধাবী শিক্ষার্থী সিনথিয়ার দায়িত্ব নিলেন ইউএনও ফারিহা
নিজস্ব প্রতিবেদক : বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলা সদরের এসএম বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এসএসসিতে বিজ্ঞান শাখায় জিপিএ-৫ পেয়েছে নুসরাত জাহান সিনথিয়া। এমন ভালো ফল অর্জন করলেও তার মুখে হাসি ফোটেনি। দরিদ্র পরিবারের সন্তান হওয়ায় ভালো কলেজে ভর্তি হয়ে লেখাপড়া চালিয়ে নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েন। কারণ তার পরিবারের পক্ষে এ ব্যয়ভার বহন করা সম্ভব নয়।
অবশেষে মেধাবী এই ছাত্রীর মুখে হাসি ফোটাতে এগিয়ে এলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারিহা তানজিন। সিনথিয়ার কলেজে ভর্তিসহ লেখাপড়ার দায়িত্ব নিয়েছেন তিনি।
অদম্য মেধাবী সিনথিয়ার সাফল্য নিয়ে মঙ্গলবার বরিশাল ক্রাইম নিউজসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলে বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারিহা তানজিনের দৃষ্টিগোচর হয়। পরে ইউএনও তার অফিসে সিনথিয়ার পরিবারকে উপস্থিত হতে বলেন। ইউএনও তার পরিবারের উপস্থিতিতে সিনথিয়ার ভালো কলেজে ভর্তি ও তার লেখাপড়ার ব্যয়ভার বহনের দায়িত্ব নেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন সিনথিয়ার পিতা পত্রিকা বিক্রেতা মো. ছগির সিকদার, তার মা জাহানুর আক্তার সিমু, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শেখর রঞ্জন ভক্ত, উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা দৌলাতুন নেছা নাজমা ও উপজেলা আইসিটি কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম।
উপজেলার বাকাল ইউনিয়নের ফুল্লশ্রী গ্রামের পত্রিকা বিক্রেতা ও তিন সন্তানের বাবা ছগির সিকদারের বড় মেয়ে সিনথিয়া। তার মেঝ ছেলে হাসান সিকদার সদর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণিতে লেখাপড়া করছে। চার বছরের ছোট ছেলে হোসাইন সিকদারকে স্কুলে ভর্তি করা হয়নি। তার মা জাহানুর আক্তার সিমু একজন গৃহিণী।
সিনথিয়া জানায়, নিজে বাসায় দৈনিক ১৬ ঘণ্টা লেখাপড়া করেছি। এখন ভালো কোনো কলেজে ভর্তি ও পড়ালেখায় প্রয়োজনীয় অর্থ তার বাবার পক্ষে জোগান দেওয়া সম্ভব নয়। অর্থের অভাবে তার ভালো কলেজে ভর্তি অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। ভবিষ্যতে লেখাপড়া করে ডাক্তার হয়ে দরিদ্রদের সেবা করতে চায় সিনথিয়া।
ছগির শিকদার জানান, অভাব-অনাটনের মধ্যেও পত্রিকা বিক্রি করে মেয়েকে লেখাপড়া করিয়েছি। পাঁচজনের সংসারে পত্রিকা বিক্রির আয় দিয়ে সংসার চালানো দায় হয়ে পড়েছে। মেয়ের কলেজে পড়ালেখার খরচ কোথায় পাবো। কোনো রকম খেয়ে না খেয়ে বেঁচে আছি।
সিনথিয়ার লেখাপড়ার দায়িত্ব নেওয়ায় ইউএনওকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের অনেক স্বপ্ন মেয়েটিকে নিয়ে। ওর পড়ার খরচ নিয়ে আমার ভাবতে হবে না, এটা জেনে স্বস্তি পাচ্ছি।