বাকেরগঞ্জে কিশোর গ্যাংয়ের অত্যাচারে গৃহবন্দি এক বৃদ্ধ দম্পতি!
আল-আমিন|১৬:৪৮, মে ০২ ২০২৪ মিনিট
বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলায় কিশোর গ্যাংয়ের অত্যাচারে গৃহবন্দিত্বের জীবনযাপন করছে এক বৃদ্ধ দম্পতি। তাদের
অত্যাচারে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী। আদালতে একাধিক মামলা থাকলেও ধরা ছোয়ার বাইরেই রয়েছেন তারা।
কবাই ইউনিয়নের ডোলা গ্রামের বৃদ্ধ বারেক হাওলাদার অভিযোগ করে বলেন, কিশোর গ্যাংয়ের অত্যাচারে আমি ও আমার পরিবারের লোকজন এখন অতিষ্ঠ। বর্তমানে আমার বয়স ৮০ বছর পেরিয়েছে। আদালতে একাধিক মামলা করেও কিশোর গ্যাংয়ের হাত থেকে আমার রক্ষা হচ্ছে না। নিজ বাড়ির উঠানে টিউবওয়েল থেকে খাবার পানি আনতে গেলে কলস লাথি মেরে ফেলে দেয় ওরা।
বৃদ্ধা নূরজাহান বেগম বলেন, কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য রাকিব, পারভেজ ও রানাসহ ৩/৪ জন গত বছরে আমাকে ও আমার মেয়ে নিলুফাকে এলোপাতাড়ি মারধর করে। হামলার ঘটনায় আমরা হাসপাতালেও চিকিৎসাধীন ছিলাম। এ ঘটনায় বরিশাল আদালতে মামলা করা হলে, তা সমাধানের দায়িত্বভার স্থানীয় চেয়ারম্যানকে দেন বিচারক। কিন্তু এখন পর্যন্ত স্থানীয় চেয়ারম্যান কোনো সমাধান দেননি। আস্কারা পেয়ে এই কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা কিছুদিন পূর্বে আমাদের অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে। এই কিশোর গ্যাং স্থানীয় অসহায় মানুষদের জমিজমা দখলের কাজে লিপ্ত রয়েছে। আমরা ওদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ।
এসবের প্রতিকার পেতে র্যাব ও পুলিশসহ সকল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছি। তবে ঘটনাস্থলে সংবাদকর্মীরা গেলে কিশোর গ্যাংয়ের এসব অপকর্মের প্রমাণ পাওয়া যায়। এলাকায় স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা ছোট-বড় গ্রুপে ভাগ হয়ে চুরি, ছিনতাই, মাদকসহ নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষকে ছুরিকাঘাতের ঘটনা ঘটছে।
তাছাড়া ওই বৃদ্ধের পরিবার সূত্র জানায়, উপজেলার কবাই ইউনিয়নের ডোলা গ্রামের হানিফ হাওলাদারের ছেলে রাকিব ও পারভেজ, একই গ্রামের আলম শিকদারের ছেলে রনি, হাকিম আলি শিকদারের ছেলে রানাসহ ৭ থেকে ৮ জনের কিশোর গ্যাং সে দিন ডোলা গ্রামে প্রকাশ্যে বৃদ্ধ মা-মেয়েকে পিটিয়েছে।
এদিকে স্থানীয় বাসিন্দা শহীদ বলেন, এই কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা সম্প্রতি জোরপূর্বক আমাদের পুকুরের মাছ ধরে নিয়ে গেছে। আবার জমির ফসল কেটে নিয়ে যায়। এদের হাত থেকে পরিত্রাণের জন্য উপায় খুঁজছি।
এদিকে ঘটনাস্থলে গিয়ে কথা হয় কিশোর গ্যাংয়ের প্রধান রাকিবের সঙ্গে। রাকিব বলেন, আমার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা হয়েছে। এতে আমি একবারও কারাগারে যাইনি। আমি বরিশাল বিএম কলেজ হোস্টেলে থাকি ও আদালতের মহুরি। কোথায় কি করা লাগবে আমি ভালো জানি।
অন্যদিকে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য পারভেজ বলেন, আমার বিরুদ্ধে আদালতে মামলা চলমান রয়েছে। তবে সেই মামলায় আদালতে হাজিরা দেই।
দলের আরেক সদস্য পারভেজ বলেন, সাংবাদিক ভাই, আমি এসব অপকর্মে জড়িত নয়।
বাকেরগঞ্জ সার্কেল এএসপি ফরহাদ সরদার বলেন, সুস্পষ্ট তথ্য পাওয়া গেলে অবশ্যই কিশোর গ্যাংয়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এমনকি প্রত্যেক টহল পুলিশ টিমকে এ বিষয়ে বলা হয়েছে।