বরিশালে সংখ্যালঘু নারী ও তার মেয়েকে মারধর

আল-আমিন | ২১:৫৮, এপ্রিল ১৫ ২০২৪ মিনিট

নিজস্ব প্রতিবেদক : বরিশাল নগরীতে ভাড়া নিয়ে দ্বন্দ্বে সংখ্যালঘু নারী ও তার ১১ বছরের মেয়েকে বেধরক মারধরের অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত (৫ এপ্রিল) শুক্রবার রাত সাড়ে ৯ টার দিকে নগরীর ১৯ নং ওয়ার্ডস্থ নাজির মহল্লার বিশ্বাস বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় কোতয়ালী মডেল থানায় একটি এজাহার দায়ের করেছেন ওই নারীর স্বামী বিকাশ চন্দ্র দাস। অভিযুক্তরা হলেন- নাজির মহল্লা বিশ্বাস বাড়ির মৃত সামশুল আরেফিন বিশ্বাসের ছেলে আবিয়াত কৌনিক (২৪) ও তার মা শাহানাজ বেগম (৫০)। এজাহার সূত্রে জানা যায়- বিকাশ চন্দ্র দাস তার স্ত্রী ও মেয়েকে নিয়ে দীর্ঘদিন যাবত বিশ্বাস বাড়ীর ২য় তলায় ভাড়াটিয়া হিসাবে বসবাস করে আসছে এবং বিশ্বাস বাড়ির পিছনের টিনশেড একটি ঘরের ভিতরে তার স্ত্রী বিডি ফুডের ডিলার এবং প্রাইম কসমেটিকসের মালামাল রেখে ব্যবসা পরিচালনা করেন। বিকাশের বাড়িওয়ালা রুবাইয়াত কৌশিকের সাথে তার সৎ মা শাহানাজ বেগম ও সৎ ভাই আবিয়াত কৌনিকের পারিবারিক ভাগবাটোয়ারার বিষয়ে নিয়ে বিরোধ চলছে। বিকাশ সময় মতো বাড়িভাড়া বাড়িওয়ালার কৌশিকের কাছে পরিশোধ করেন। কিন্তু শাহানাজ বেগম ও কৌনিক বাড়িভাড়া তাদের বলে দাবী করেন। এ নিয়ে তারা বিকাশের সাথে দুরব্যবহার করেন এবং তাদের পরিবারের ক্ষয়ক্ষতি করার হুমকি দিয়ে আসছিলেন। এরই ধারাবাহিকতা গত ৫ এপ্রিল রাত সাড়ে ৯ দিকে বিকাশের স্ত্রী ইতি রানি দাস বাজার থেকে বাড়িতে ফেরার পথে শাহানাজ বেগম ও কৌনিকসহ অজ্ঞাত ৭/৮ জনের একটি সন্ত্রাসী দল তার স্ত্রীর পথরোধ করে তার কাছে বাড়িভাড়া দাবি করেন। তখন ইতি রানি দাস বাড়িভাড়া কৌশিকের কাছে দেয়া হয়েছে। আপনারা কৌশিক ভাইকে ডাকেন। তার সামনাসামনি আপনারা দুজন মিলে যাকে ভাড়া দিতে বলবেন আমরা তাকেই ভাড়া দিব বলে জানালে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে ইতি রানিকে কিলঘুষি মেরে শরীরে বিভিন্ন স্থানে নীলাফুল জখম করে। এ সময় কৌনিক তার কাপরচোপর টানা হেচড়া করে শ্লীলতাহানী করে। অন্যদিকে শাহনাজ বেগম ইতি রানির চুলের মুঠি ধরে মাটিতে ফেলে দিয়ে তার পার্স ব্যাগে থাকা ৫০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এরপর ইতি রানির ডাক চিৎকারে তার মেয়ে ইশিকা ছুটে আসলে তাকেও মেরে নীলাফুল জখম করে। তাদের চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে সন্ত্রাসীরা তাদেরকে হত্যা-জখমের হুমকি দিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। পরে তাদের উদ্ধার করে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বিকাশ চন্দ্র দাস বলেন- আমি ভাড়া দিয়ে ওখানে বসবাস করি। আমাকে শাহনাজ বেগম নিজেই কৌশিকের কাছে ভাড়া দিতে বলেছিল। সে অনুযায়ী আমি কৌশিকের সাথে ভাড়ার চুক্তি করি। তাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব থাকতে পারে, সেটা আমার দেখার বিষয় না। আমার স্ত্রী ও মেয়ের উপর হামলা হয়েছে। আমি থানায় মামলা দিয়েছি। এ জন্য তারা আমাদের অব্যহত হুমকি দিয়ে আসছে। আমি ও আমার পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছি। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই। ঘটনাটি সুষ্ঠু তদন্তে মাধ্যমে সুবিচার ও নিরাপত্তা পেতে প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ভূক্তভোগী পরিবার। এ বিষয়ে অভিযুক্তদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই পার্থ সারথী বলেন- প্রাথমিকভাবে মারধরের সত্যতা পাওয়া গেছে। মামলা হয়েছে, তদন্ত চলছে। কোতয়ালী মডেল থানার ওসি (তদন্ত) মোঃ আমানুল্লাহ আল বারি বলেন- এ ঘটনায় থানায় মামলা রুজু করা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।