নারী পুলিশ ছাড়াই মহিলা আসামী আটক করে বিতর্কে কোতয়ালী মডেল থানা পুলিশ

আল-আমিন | ২২:২৭, এপ্রিল ০৮ ২০২৪ মিনিট

নিজস্ব প্রতিবেদক : বরিশাল সদর উপজেলার চরমোনাই ইউনিয়নের চর খানম এলাকা থেকে গভীর রাতে নারী পুলিশ সদস্য ছাড়াই দুই মহিলা আসামীকে আটক করে বিতর্কের জন্ম দিলো কোতয়ালী মডেল থানা পুলিশ। এ নিয়ে আটক আসামীদের স্বজনরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। পাশাপাশি বিষয়টি নিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। রোববার (৭ এপ্রিল) দিবাগত রাত আড়াইর দিকে তাদের আটক করে সাড়ে তিন টার দিকে থানায় নিয়ে আসা হয়। আটককৃতরা হলেন- চরমোনাই ইউনিয়নের চর খানম এলাকার আবদুল হক হাওলাদারের মেয়ে হালিমা বেগম ও একই এলাকার মন্নান হাওলাদারের মেয়ে তানজিলা বেগম। জানা যায়- রোববার দিবাগত রাত আড়াইর দিকে চরমোনাই ইউনিয়নের চর খানম এলাকা থেকে হালিমা বেগম ও তানজিলা বেগমকে আটক করেন কোতয়ালী মডেল থানার এএসআই জাকির ও এএসআই জসিম। পরে তিন টার দিকে তাদের বেলতলা খেয়াঘাট এলাকায় নিয়ে আসেন এএসআই জাকির ও এএসআই জসিম। সেখানে তাদের সাথেই ছুটে আসেন আটকদের স্বজনরা। নারী পুলিশ সদস্য ছাড়া দুই মহিলা আসামী আটকের সংবাদ পেয়ে খেয়াঘাটে ছুটে যান সংবাদকর্মীরা। সেখানে গিয়ে সংবাদকর্মীরা জানতে পারেন এএসআই জাকির ও এএসআই জসিম ওয়ারেন্টভূক্ত দুই মহিলাকে নারী পুলিশ সদস্য ছাড়াই আটক করে নিয়ে এসেছেন। সংবাদকর্মীদের দেখে আটকের স্বজনরা হৈচৈ শুরু করেন। এ সময় সংবাদকর্মীরা নারী পুলিশ সদস্য ছাড়া দুই মহিলা আসামী আটকের কারণ জানতে চাইলে আটককৃতদের দ্রুত গাড়িতে তুলে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। আটক হালিমা বেগম ও তানজিলা বেগম ২০২২ সালের সিআর নং-৩৮৭ মামলার ওয়ারেন্টভূক্ত আসামী বলে জানা গেছে। আটকদের স্বজনরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন- মহিলা আসামী আটক করতে নারী পুলিশ প্রয়োজন ছিল। কোন নারী পুলিশ না নিয়েই গভীর রাতে এএসআই জাকির ও এএসআই জসিম স্যার হালিমা ও তানজিলাকে আটক করে নিয়ে আসেন। আমরা নারী পুলিশ ছাড়া মহিলা আসামী আটকের কারণ জানতে চাইলে চড়াও হয়ে আমাদেরও আটকের ভয় দেখান। তাদের অভিযোগ- গভীর রাতে এএসআই জাকির ও এএসআই জসিম স্যার বাসার দরজা খুলতে বললে হালিমা ও তানজিলা বেশী রাত হয়ে গেছে ভেবে ভয়ে দরজা না খুললে দরজা ভেঙে তাদের আটক করে থানায় নিয়ে আসেন। তারা আরও অভিযোগ করেন- ২৫ হাজার টাকা না দেয়ার কারণেই হালিমা ও তানজিলাকে আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। এএসআই জাকির বলেন- এই দুই মহিলার বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট রয়েছে তাই আটক করেছি। নারী পুলিশ ছাড়া মহিলা আসামী গ্রেপ্তার করা যাবে কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন- আটকের পরে ওসি স্যারকে জানালে স্যার থানায় নিয়ে যেতে বলেছেন, তাই থানায় নিয়ে এসেছি। তিনি আরও বলেন- নারী পুলিশ ছাড়াও মহিলা আসামী আটক করার বিধান রয়েছে। যেহেতু তারা ওয়ারেন্টভূক্ত আসামী। ২৫ হাজার টাকা চাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে এএসআই জাকির বলেন- ২৫ হাজার টাকা আমরা চাইনি। মামলাটা যারা তদন্ত করেছে তারা চেয়েছিলো। এদিকে ঘটনার বিষয়ে জানতে কোতয়ালী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এটিএম আরিচুল হকের মুঠোফোনে কল দিলে প্রথমে তিনি বলেন- ওই অভিযানে নারী পুলিশ ছিল। পরে প্রতিবেদকের কাছে পুরো ঘটনার ভিডিও রয়েছে জানালে তাৎক্ষনিক ভোল পাল্টে তিনি বলেন- এ বিষয়ে আমি কিছুই জানিনা। তবে নারী পুলিশ ছাড়া মহিলা আসামী আটকের কোন বিধান নেই। যদি কোন অফিসার এমন কাজ করে থাকেন তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ বিষয়ে অতিরিক্ত উপ–পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) মোঃ ফজলুল করিম বলেন- নারী পুলিশ ছাড়া মহিলা আসামী আটকের কোন সুযোগ নেই। তবে কোন অফিসার এমন কাজ করে থাকেন তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।