রুপাতলীতে দোকানিকে প্রকাশ্যে মারধর, উত্তেজনা
নিজস্ব প্রতিবেদক : ভূমি সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদনে সাক্ষাৎকার দেওয়ায় স্থানীয় পঞ্চাশোর্ধ্ব এক দোকানিকে মারধর করেছে প্রতিপক্ষরা। সোমবার আসরের নামাজ শেষে বাসায় ফেরার পথে আবু আকন নামের এই ব্যবসায়ীকে দক্ষিণ রুপাতলী মোল্লাবাড়ি মসজিদের কাছাকাছি রাস্তার ওপর ফেলে প্রকাশ্যে বেদম পিটুনি দিয়েছেন কথিত মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রশিদ আকন এবং ছেলে-সন্তানেরা। একপর্যায়ে স্থানীয় ব্যবসায়ী ও পথচারীরা দৌড়ে এসে তাকে উদ্ধার করেন। পরবর্তীতে সন্ধ্যার দিকে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে আকন বাড়িতে উভয়গ্রুপের মুখোমুখি অবস্থান নিলে উত্তেজনাকর পরিবেশ তৈরি হয়। খবর পেয়ে সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক খোকন চন্দ্র ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিবেশ নিয়ন্ত্রণে নেন। তবে এই ঘটনায় তিনি কাউকে আটক করতে পারেননি।
ভুক্তভোগী আবু আকন জানান, পার্শ্ববর্তী বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রয়াত আব্দুল মন্নান খান বাদশ মিয়ার বাসার ওপর দিয়ে আব্দুর রশিদ আকনসহ আশপাশের বাসিন্দারা হাঁটাচলা করতেন। কিন্তু কিছুদিন পূর্বে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানেরা তাদের বাবার স্মৃতি রক্ষায় বাসার অভ্যন্তর থেকে বহিরাগতদের চলাচল বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেন। এতে ক্ষুব্ধ অংশটি বরিশাল সিটি কর্পোরেশনে অভিযোগ করাসহ নানান কায়দায় মুক্তিযোদ্ধা পরিবারকে হয়রানি করে আসছে।
বিভিন্ন মাধ্যম জানা গেছে, এসব ঘটনায় মুক্তিযোদ্ধার পরিবারের পক্ষে সংবাদমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দেওয়ার কিছুদিন ধরে আবু আকনকে হুমকি-ধামকি দিয়ে আসছিলেন আব্দুর রশিদ আকনসহ তার দুই ছেলে কবির এবং রফিক। এবং সোমবার বাদ আসর মোল্লাবাড়ি মসজিদে নামাজ শেষে ফেরার পথে আবু আকনকে রাস্তায় ফেলে প্রকাশ্যে মারধর করে রশিদ আকনসহ সন্তানেরা। তখন স্থানীয় দোকানি এবং পথচারীরা ছুটে গিয়ে তাকে উদ্ধার করলেও পরক্ষণে এই ঘটনা নিয়ে আকন বাড়িতে আবু আকন এবং রশিদ আকনের সন্তনেরা মারমুখি অবস্থান নিলে উত্তেজনা দেখা দেয়। পরে কোতয়ালি থানা পুলিশের এসআই খোকন চন্দ্র দে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিবেশ নিয়ন্ত্রণে নেন এবং ভুক্তভোগীকে লিখিত অভিযোগ করার পরামর্শ দেন।
আবু আকনের স্ত্রী মিনারা বেগম জানান, প্রয়াত বাদশা মিয়ার সন্তনেরা তাদের বাসার ভেতর থেকে চলাচলের পথ দিতে চাইছেন না। কিন্তু তারপরেও তাদের নানাভাবে হয়রানি করা হচ্ছে, সেই ঘটনায় তার স্বামী মিডিয়ায় সাক্ষাৎকার দেওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে আবু আকন এবং তার সন্তানেরা হামলা করেছেন।
মেয়ে মিতু আক্তার জানান, তার বাবাকে রাস্তায় মারধর করেই ক্ষ্যান্ত হননি আবু আকন। বাসায় এসেও ফের মারধর করতে উদ্যত হন। সেই সময় প্রতিবাদ করাসহ থানায় খবর দিলে পুলিশ আসে। কিন্তু রশিদ আকন বা তার ছেলেদের আটক করেনি।
আবু আকনকে প্রকাশ্যে মারধরের বিষয়টি পুলিশের উপস্থিতিতে স্বীকার করেছেন রশিদ আকন। এমনকি তিনি নিজেকে বীর মুক্তিযোদ্ধা দাবি করলেও পরক্ষণে এটাও স্বীকার করে যে তার ভাতা আপাতত বন্ধ আছে। কিন্তু তিনি এর চেয়ে বেশি কিছু মিডিয়ায় বলতে চাইছেন না। পুলিশ এবং স্থানীয়দের উপস্থিতিতে কথিত মুক্তিযোদ্ধার এমন রুষ্ট আচারণে বিস্ময়ের তৈরি করেছে।
পুলিশ কর্মকর্তা খোকন চন্দ্র দে জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে উত্তপ্ত পরিবেশ নিয়ন্ত্রণ নিয়েছেন। এবং এই ঘটনায় ভুক্তভোগী আবু আকনকে থানায় অভিযোগ করতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।’