চরমোনাইতে তরমুজ পরিবহনের ট্রাক থেকে চাঁদা দাবির অভিযোগ
আল-আমিন|২২:০৪, মার্চ ২৩ ২০২৪ মিনিট
নিজস্ব প্রতিবেদক : বরিশাল সদর উপজেলার চরমোনাইতে তরমুজ পরিবহনের ট্রাক থেকে চাঁদা দাবির অভিযোগ করেছেন তরমুজ ব্যবসায়ীরা। এমনকি চাঁদা না দিলে পরিবহন আটকে দেয়া হবে বলে হুমকি প্রদান করেছেন। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, চরমোনাইর বিশ্বাসের হাট ব্রিজ সংলগ্ন ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশের নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মোহাম্মদ ফয়জুল করিমের জমি তরমুজ পরিবহনের জন্য ভাড়া নেয় রাসেল নামের এক ব্যবসায়ী।
সেখান থেকে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে তরমুজ পাঠান তিনি। বুধবার (২০ মার্চ) স্থানীয় শাহীন শরীফ ও মিজান মুন্সির নেতৃত্বে ১০/১২ জন ব্যক্তি গিয়ে রাসেলের কাছে চাঁদা দাবি করেন। পাশাপাশি চাঁদা দিতে না পারলে পরিবহন আটকে দেয়া হবে বলে হুমকি প্রদান করেন শাহীন শরীফ ও মিজান মুন্সি।
ব্যববসায়ীরা জানান, বরিশালে এ বছর তরমুজের বাম্পার ফলন হয়েছে। দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে তরমুজ ব্যবসায়ীরা এখান থেকে তরমুজ কিনে পরিবহনে করে বিভিন্ন স্থানে নিয়ে যান। এই সুযোগে স্থানীয় শাহীন শরীফ ও মিজান মুন্সি তাদের ১০/১২ সহযোগীকে নিয়ে প্রতিদিন ২ হাজার টাকা করে চাঁদা দাবি করেন। এ সময় তরমুজ ব্যবসায়ী রাসেলের ভাই রাব্বি কিসের চাঁদা দিতে হবে জানতে চাইলে শাহীন শরীফ ও মিজান মুন্সি বলেন- এখান থেকে তরমুজ পরিবহন করতে হলে প্রতিদিন আমাদের লোকদের ২ হাজার টাকা দিতে হবে।
তরমুজ ব্যবসায়ী রাসেল বলেন- আমরা ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশের নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মোহাম্মদ ফয়জুল করিমের কাছ থেকে তার জমি ভাড়া নিয়ে আমরা ঘাট দিয়ে তরমুজ এনে দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠাই। সব ঠিকঠাক চলছিল। হঠাৎ গত বুধবার স্থানীয় শাহীন শরীফ ও মিজান মুন্সির নেতৃত্বে ১০/১২ জন ব্যক্তি নিয়ে ঘাটে আসেন।
এসে বিভিন্ন হুমকি ধামকি দিয়ে প্রতিদিন ২ হাজার টাকা করে চাঁদা দাবি করেন। তখন আমার ছোট ভাই রাব্বি কিসের চাঁদা জিজ্ঞেস করলে তারা বলেন- এখান থেকে তরমুজ পরিবহন করতে হলে প্রতিদিন ২ হাজার করে চাঁদা দিতে হবে। না হলে এখানে পরিবহন ঢুকতে দেয়া হবে না, তরমুজও পরিবহন করতে পারবে না। আমরা বিষয়টি জমির মালিককে জানিয়েছি।
ঢাকার ট্রাক চালক রশিদ জানান, চাঁদা না দিলে ট্রাক আটকে রাখবে বলে হুমকি প্রদান করে। আমরা দুর দুরান্ত থেকে তরমুজ নিত আসি। স্থানীয়রা এভাবে চাপ দিলে আমরা কোথায় যাবো? ওই ঘাট তত্ত্বাবধানের দায়িত্বে থাকা এ্যাডভোকেট রাজু বলেন- আমি ঘাটে ছিলাম না। পরে ঘাটে এসে জানতে পারি শাহীন শরীফ ও মিজান মুন্সির নেতৃত্বে ১০/১২ জন ব্যক্তি এসে ঘাটে চাঁদা দাবি করেছে এবং চাঁদা না দিলে পরিবহন আটকে দেয়ার হুমকি দিয়ে চলে যান। আমি শাহিনের ফোনে কল দিলে শাহীন বলেন- ওই জমি আমি মুফতি সাহেবকে কিনিয়ে দিয়েছি। ওখানে ঘাট হলে আমরাও টাকা পাওয়ার অধিকার আছে।
অভিযুক্ত শাহীন শরীফ চাঁদা দাবির বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, আমরা ওখানে গিয়ে ট্রান্সপোর্টের গাড়ি দেয়ার কথা বলেছি, কিন্তু কোন চাঁদা চাইনি। আপনাদের গাড়ি আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন- না আমাদের গাড়ি নেই, তবে মিজান মুন্সির ভগ্নিপতির কিছু গাড়ি আছে। আমরা মুফতি সাহেবের জমিতে গিয়ে চাঁদা চাইবো, এটা হয় না। কোতয়ালী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আরিচুল হক বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। এরকম চাঁদা দাবির অভিযোগ পাওয়া গেলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’