সন্ত্রাসী লিটু’র পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ

কামরুন নাহার | ১৮:৫৪, এপ্রিল ২৩ ২০২০ মিনিট

অনলাইন ডেস্ক ॥ বরিশাল সদর রোডে বাসিন্দা হিরু উদ্দিন লিটু একের পর এক সন্ত্রাসের সৃষ্টি করেও ধরাছোয়ার বাইরে থাকা নিয়ে নানা প্রশ্নে সৃষ্টি হয়েছে। সর্বশেষ এই বেসামাল ব্যক্তি হিরা নামের এক যুবককে ধারালো অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে নিজ বাসায় অবরুদ্ধ করে রাখলে পুলিশ উদ্ধারে গেলে এলোপাতাড়ি গুলি ছোড়ে। এতে পুলিশের কেউ হতাহত না হলেও একপর্যায়ে অবরুদ্ধ হিরাকে উদ্ধারে সফলতা আসে। বুধবার বিকেলের এই সশস্ত্র সন্ত্রাসের কদিন আগে শহরের আগরপুর রোডে এক চা দোকানিকে কুপিয়ে জখম করে এক সময়কার ত্রাস লিটু। একের পর অঘটনের জন্ম দেওয়া এই লিটুকে আইনের আওতায় না নেওয়ায় পুলিশের ভুমিকা নিয়ে নানা মহলের প্রশ্ন দেখা দেয়। ৯৬’র ত্রাস সেই হিরুর স্বরূপে ফিরে আসা নিয়ে সদর রোডে বাসিন্দা ভীতসন্তুস্ত হয়ে পড়েছেন, কে কখন তার হাতে নাজেহাল হন। এই বিষয়টি সম্পর্কে অবগত থাকলেও পুলিশের নিলুপ্তার কারণে তাকে আইনের মুখোমুখি করা যাচ্ছিল না। তবে নিশ্চিত হওয়া গেছে- হিরাকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করা ও পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণের ঘটনায় এবার পুলিশ লিটুকে কোনভাবে সুযোগ দিতে চাইছে না। সুত্রের খবর হচ্ছে- পাওনা দুই হাজার টাকা আদায়ের জন্য স্থানীয় একটি পত্রিকা অফিস স্টাফ হিরা লিটু খোঁজ শুরু করে। আগরপুর রোডের বাসিন্দা এই যুবককে বিকেলে হাতে নাগালে পেলে তাকে ধারালো অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে পেটাতে পেটাতে তার বাসায় নিয়ে যায়। অশ্বিনী কুমার হলের বিপরিতে তিন তলা বিশিষ্ট বাস ভবনের দ্বিতীয় তলায় তাকে আটকে রাখে প্রহর করে। হিরার পরিবারের অভিযোগ রাত ১০টা পর্যন্ত অবরুদ্ধ করে রাখা অবস্থায় ওই যুবককে কয়েক দফা শারীরিক নির্যাতন করে। এসময় চিৎকার চেচামেচিতে এলাকাবাসী জড়ো হলেও বাড়ির আশেপাশে কেউ যেতে সাহস দেখায়নি। এই বিষয়টি একপর্যায় থানায় অবহিত করলে পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে আসলেও বাসায় প্রবেশ করতে পারেনি। পরে পুলিশের তৎপরতা দেখে ভয়ে হিরাকে গেট খুলে বের করে দেয় লিটু। এসময় বিকারগ্রস্ত লিটু গ্রেপ্তার আতঙ্কে তিনতলায় অবস্থান নিয়ে গেট আটকে দেয়। পুলিশ নানামুখী তৎপরতা চালালে লিটু বাসার জানালা খুলে পুলিশকে লক্ষ্য করে এয়ারগান দিয়ে এলোপাড়াতি গুলি ছোড়ে। সেই গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হওয়ায় পুলিশ সদস্যদের কেউ হতাহত হননি। কিন্তু বেসামাল লিটু ভবনের ছাদ দিয়ে লাফ দিতে পারেন এমন ঘটনা এড়িয়ে যেতে একপর্যায়ে অবস্থান থেকে পিছনে চলে আসতে বাধ্য হয়। স্থানীয় একটি সূত্র জানায়, মাদক ক্রয়ের জন্য ২ হাজার টাকা দিলে প্রতিবেশি হিরার তা ভেঙে ফেলায় লিটুকে এড়িয়ে চলছিলেন। মাদক ও টাকা একটিও না পেয়ে লিটু বুধবার হিরাকে আগরপুর রোডের মুখ থেকে অস্ত্র ঠেকিয়ে ধরে নিয়ে যায়। বাসায় আটকে সেই টাকা উদ্ধারে হিরাকে কয়েক দফা মারধর করে। এর আগে গত ১০ এপ্রিল মাদকের জন্য আগরপুর সড়কের চা দেকানি মুন্নাকে কুপিয়ে জখম করে। সূত্র জানায়- একই দিন দুপুরে স্থানীয় সাকিব নামক এক যুবককে লক্ষ্য করে নিজ বাসভবনের ছাদ থেকে এয়ারগান দিয়ে গুলি ছোড়ে। এতে সাবিকসহ তার এক বন্ধু আহত হলেও তবে অতটা গুরুতর না হওয়ায় বিষয়টি পুলিশ পর্যন্ত পৌঁছায়নি। এত অপরাধের পরেও লিটুকে আইনের আওতায় আনার ক্ষেত্রে পুলিশের ভুমিকা লক্ষ্যণীয় না হওয়ায় বিতর্ক জোরালো রুপ নিয়েছে। কোতয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরুল ইসলাম জানান, লিটুর বিরুদ্ধে কেউ মামলা না করায় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ সম্ভব হচ্ছে না। তবে এবারের গুলিবর্ষণের ঘটনায় লিটুকে গ্রেপ্তারে পুলিশ অগ্রসর হতে পারে বলে আভাস পাওয়া গেছে।’