সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের (সওজ) দরপত্র প্রতিযোগিতায় রীতিমতো জালিয়াতির হাট বসেছে। দরপত্রে অংশ নিয়ে অভিজ্ঞতার জাল সনদ ইজিপিতে আপলোড করে কাজ বাগিয়ে নেওয়ার নজিরবিহীন প্রমাণ মিলেছে। গুরুতর এমন জালিয়াতির সঙ্গে বেশিরভাগ প্রভাবশালী ঠিকাদার জড়িত। প্রায় ৬১ প্রভাবশালী ঠিকাদার এই কাজে ধরা পড়েছেন।
দুঃসাহসিক এই জালিয়াতির ঘটনাকে সওজ সরাসরি প্রতারণার সঙ্গে তুলনা করেছে। যাদের বিরুদ্ধে গুরুতর এমন অভিযোগ তাদের হাতেই আছে হাজার হাজার কোটি টাকার কাজ। ব্যয়বহুল সব কাজের ঠিকাদারি নিয়ন্ত্রণও করে এ চক্র। সওজের অভ্যন্তরীণ তদন্তে এমন ভয়াবহ চিত্র উঠে এসেছে। অথচ তাদের অধিকাংশকেই কালো তালিকাভুক্ত করা হয়নি।
তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, অভিযুক্ত ৬১ ঠিকাদারের হাতেই রয়েছে ৩ হাজার ৭শ কাজ। যা সওজের টোটাল কাজের অর্ধেক। এই কাজ করতে ব্যয় হচ্ছে ১৭ হাজার কোটি টাকা।
সওজের কাজ বাগিয়ে নিতে এ ধরনের জালিয়াতির বিষয়ে মন্তব্য জানতে চাইলে সচিব এবিএম আমিন উল্লাহ নুরী বলেন, এ জালিয়াতির সঙ্গে যেসব ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রমাণিত অভিযোগ রয়েছে তাদের ব্যাপারে আইনানুগ কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
অনেক আইনকানুন ও নিয়ম মেনে কাজ করতে হয়। যেহেতু অসুস্থ এই প্রতিযোগিতা ঠেকাতে কাজ শুরু হয়েছে তাই সবাই আসবে। এর আওতায় যারাই আসবে সবাইকে চিহ্নিত করা হবে। চুলচেরা বিশ্লেষণ করে এই কাজের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের চিহ্নিত করতে নির্দেশ দিয়েছি। আশা করছি, সহসা সবকিছু একটা সিস্টেমের মধ্যে আসবে।
সওজের প্রধান প্রকৌশলী সৈয়দ মইনুল হাসান বলেন, গুরুতর এসব অভিযোগ খুব গোপনে অডিট করা হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে মন্তব্য করার সময় এখনো আসেনি। তবে যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়া যাবে তারা কেউই কালো তালিকার বাইরে থাকবেন না। ইতোমধ্যে কয়েকজনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আমরা কাজ করছি।
এছাড়া অতীতে যার ১২ কোটি টাকায় ১০ কিলোমিটার রাস্তা কার্পেটিং করার অভিজ্ঞতা রয়েছে তাকে কাজ দিতে পূর্বপরিকল্পিতভাবে এভাবে শর্ত দেওয়া হয়। কারণ নির্বাহী প্রকৌশলী আগে থেকেই জানেন ১২ কোটি টাকায় সর্বোচ্চ ৯ কিলোমিটারের বেশি কাজ করার অভিজ্ঞতা অন্য কোনো ঠিকাদারের নেই। ফলে দরপত্র যাচাই-বাছাইয়ের সময় পছন্দের ঠিকাদার সহজে কাজ পেয়ে যান।