শের-ই-বাংলা মেডিকেলে২৫ দিনে ১১৫ শিশুর মৃত্যু, বেশিরভাগই শীতজনিত রোগে
আল-আমিন | ১৮:২১, ফেব্রুয়ারি ০১ ২০২৪ মিনিট
নিজস্ব প্রতিবেদক : বরিশাল বিভাগে এবার ঘন কুয়াশার সঙ্গে তীব্র শীত পড়েছে। কনকনে ঠান্ডা ও হিমেল বাতাসে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে। শীতের অনুভূতি বেশি হওয়ায় বিভাগের বিভিন্ন জেলায় ঠান্ডাজনিত রোগের প্রকোপ বেড়েছে। বয়স্ক ও শিশুরা নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন রোগে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে।
বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, গত জানুয়ারির ৩০ দিনে বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ছাড়া বিভাগের ছয় জেলা সদর ও ৪২ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে শুধু নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে এসেছে ৫ হাজার ১৪৪ রোগী। এই সময়ে ঠান্ডাজনিত রোগে মারা গেছে ৪ জন রোগী।
বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল প্রশাসন সূত্র জানায়, এই হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে ২৫ দিনে (১ থেকে ২৫ জানুয়ারি পর্যন্ত) ১১৫ শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এর অধিকাংশই মারা গেছে শীতজনিত নানা রোগে। এই ২৫ দিনে নানা রোগে আক্রান্ত ৫ হাজার ২৮৫টি শিশু এই হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এর মধ্যে ১ হাজার ৩৫১ শিশু হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।
রোববার দুপুরে বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন ওয়ার্ড ও শিশু ওয়ার্ড ঘুরে দেখা যায়, হাসপাতালে এত রোগীর চাপ যে শয্যায় জায়গা না পেয়ে অনেক রোগীকে মেঝেতে রেখেও চিকিৎসা দিতে হচ্ছে।
বরিশালসহ গোটা দক্ষিণাঞ্চলের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা এবার জানুয়ারির শুরু থেকেই ধারাবাহিকভাবে কমেছে। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা দীর্ঘ সময় কম থাকার ঘটনা এবারই প্রথম। আর কখনো এমন দেখা যায়নি। ২৮ জানুয়ারি বরিশালে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৮ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
বরিশাল আবহাওয়া বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, এবার শীত মৌসুমের ডিসেম্বর থেকেই এ অঞ্চলের তাপমাত্রা ওঠানামার বিষয়টি ছিল লক্ষণীয়। শীতের খেয়ালি আচরণে বেশি প্রভাব পড়ে জনস্বাস্থ্যে।
ধুলাকণাযুক্ত এই কুয়াশা শ্বাস-প্রশ্বাসের সঙ্গে শরীরে ঢুকলে নানা ধরনের স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি হতে পারে বলে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন। এই বিষয়ে বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক শ্যামল কৃষ্ণ মণ্ডল বলেন, আগের চেয়ে বেশি মানুষ ফুসফুসের সমস্যা ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে হাসপাতালে আসছেন। কুয়াশায় মিশে থাকা ধুলাকণা এসব রোগীর শ্বাসযন্ত্রে ঢুকলে জটিলতা আরও বাড়তে পারে।এ জন্য কুয়াশার মধ্যে বাইরে বের হলে অবশ্যই মাস্ক পরে বের হওয়া প্রয়োজন। পাশাপাশি শিশুদের ক্ষেত্রে একটু বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। শীতের কাপড় পরানোর পাশাপাশি শিশুদেরও মাস্ক পরাতে হবে।